আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ছেলেটির শিবির জীবন ...

আমার দেশের মাটি সোনার চেয়েও খাঁটি কিন্তু, পইড়া রইলাম পরের দেশে। আপসোস !!

রসুলপুর গ্রামের এক মায়ের আদরের ছেলেটি ছিল স্কুলের প্রথম সারির একজন নামকরা ভাল স্টুডেন্ট … জন্মের মাত্র ছয় মাস বয়সে বাবাকে হারনো ছেলেটি বড় হয়েছে মায়ের সংস্পর্শেই … গার্ডিয়ান বলতে মা ছাড়া বড় একটি বোন এবং একটি ভাই ... বয়ষ বাড়ার সাথে সাথে ছেলেটি গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পঞ্চম শ্রেনীতে প্রথম স্থানে উত্তীর্ণ হয়ে ভর্তি হয় মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ... মাধ্যমিক বিদ্যালয়েও ভাল রেজাল্ট করে উত্তীর্ন হয়ে উপরের ক্ল্যাশে উঠতে থাকে ছেলেটি ষষ্ঠ থেকে সপ্তম- অষ্টম- নবম ... ধীরে ধীরে ছেলেটি পরিচিত হতে থাকে স্কুলের বড় ভাইদের সাথে ... তাদের মাজে উপরের ক্ল্যাশের এক বড় ভাই এসে মাজে মাজেই ছেলেটি সহ ছেলেটির সহপাঠিদের একসাথে বসে আলোচনা করে ইসলাম-নামাজ- দ্বীনের ... অতঃপর ধীরে ধীরে নামাজ-কালামের কথা এবং কিশোর-কন্ঠ নামের একটি মাসিক প্রকাশিত বই এর প্রতি সকলের আকর্ষন সৃষ্টি করে , বইটি পরতে সবাইকে উদ্ধৃত করে ... পাশা-পাশি নামাজের জন্য সকলকে আহবান জানায় ... অন্য সবার মত ছেলেটিও দুর্বল হয়ে পরে বড় ভাইয়ের আদর্শ এবং ইসলামের প্রতি আনুগত্য এবং দ্বীনের কথা বলছে দেখে ... এভাবে দিন যেতে যেতে , এক সময় দেখা যায় উপরের ক্ল্যাশের বড় ভাইটি ছেলেটি সহ সকলকে নিয়ে নামাজের শেষে একসাথে বসছে , ইসলামী দ্বীনের কাজ নিয়ে আলোচনা করছে , এবং নামাজ কত ওয়াক্ত আদায় করছে তা লিখার জন্য ফর্ম বিতরন করছে ... ধীরে ধীরে আরোও এগিয়ে দেওয়া হচ্ছে ইসলামী লেখক দের বই , যার বেশীর ভাগোই লেখা জামাতী নেতাদের ... একসময় সকলের কাছ থেকে বায়ুতুল মালের নাম করে আদায় করা হয় সকলের কাছ হেকে চাদা ,যে যত দিতে পারে প্রতি মাসে ...... অতঃপর আরোও এগিয়ে ইসলামী শিক্ষা সফরের নামে দূরের কোন এক স্কুলে নিয়ে যাওয়া হয় , সারা দিনবর ইসলাম , দ্বীন এবং ইসলাম ধ্বংসে কাফেরদের আগ্রাসী ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করা হয় , এবং আলোচনা শেষে সকলকে ইসলাম প্রচারের কর্মী হিসাবে একটি ফর্ম পূরন করিয়ে বলা হয়, আজ থেকে তুমরা সবাই ইসলামের প্রচারে কাজ করবে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র-শিবিরের হয়ে । আর এভাবেই জরিয়ে পরে শিবিরের সাংঘঠনিক কাজে ।। হয়ে ঊঠে শিবিরের একনিষ্ঠ কর্মী । কিন্তু এই মধ্যে ছেলেটি মোটামুটি ভুলতে চলেছে এই দেশের স্বাধীনতার কথা, ভুলতে চলছে এই সময়টাতে দেশে হয়েছে ভয়াবহ জঙ্গি হামলা ... আর ভুলবেই না কেনো ! যে সময়টা ছেলেটির মন বিকশিত হবার কথা , এই সময় কৌশলে তাঁর অজান্তেই তাঁর মাথায় ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে ইসলামী দ্বীন-জিহাদের নামে একটি গোষ্ঠীর রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বাস্তবায়নের সুবিশাল এজেন্ডা। বলা হয়েছে এই দেশের স্বাধীনতা দিবস কিংবা ভাষা দিবসে প্রভাতফেরী আর শহীদ বেদীতে ফুল দেওয়া ইসলাম বিরোধী কাজ , এর চেয়ে শহীদদের আত্মার জন্য দুয়া করাই উত্তম !!! যে সময়টায় ছেলেটির জানার কথা এই দেশ সম্পর্কে ,শিখার কথা এই দেশের ইতিহাস সম্পর্কে ওই সময় এই ছেলেটির মাথায় কৌশলে ঢুকিয়ে দেওয়া হয় ইসলামের নামে জিহাদ , আর দ্বীনের প্রচারের নামে শিবিরের রাজনৈতিক প্রচারের কথা ... অতঃপরঃ এভাবেই চলতে চলতে মাধ্যমিক স্কুলের শেষ পর্যায়ে এসে গেলেও ছেলেটির একবারো মনে প্রশ্ন জাগেনি এই দেশের সাথে কারা বেইমানী করেছিল , এই জামাত নামের সংঘঠন যার হয়ে ছেলেটি ইসলাম প্রচারের কাজ করছে সেই সংঘঠনটিই এই দেশের সাথে বেইমানী করেছিল ... কিন্তু......... ছেলেটির সৌভাগ্যে ছিল । মাধ্যমিক স্কুলের শেষভাগে এসে পারিবারিক অস্বচ্ছলতার জন্য ছেলেটিকে পড়ালেখা এবং তাঁর প্রিয় ইসলামের খেদমত করা বড় ভাই , সহপাঠিদের ছেরে গমন করতে হল প্রবাসে ... অতঃপর , পুরোপুরি মগজ দোলাই খেয়ে দেশ থেকে আসা ছেলেটি দেখল , জামাত-শিবির নামটা শুনলেই তাঁর আসে পাশের লোকজনের মাজে কেমন যেন ঘৃনার চোখ ভেসে উঠে...এরা জামাত-শিবিরের নাম শুনেই রাজাকার আর জঙ্গি বলে সম্বোদন করে ... যেগুলা ছেলেটি দেশে থাকা অবস্থায় শুনলেও কোন পাত্তাই দেয়নি , ভেবেছে কাফেরদের অপপ্রচার ... চলতে থাকে প্রাবসের অন্য লোকদের সাথে তর্ক বিতর্ক , কেও কেও তো ছেলেটিকে চ্যালেঞ্জও ছুরে দেয় , সে প্রমান করে দেখাবে জামাত -শিবির ইসলমী নয় বরং ইসলামের দুশমন ...ছেলেটি বিস্মিত হয় !! কিন্তু এখানেও তাঁর খুজ মিলে দুই একজন জামাত কর্মীর তাদের সাথে পরিচয় হওয়ার পর তারাও দেখা গেলো একোই কায়দায় নিদির্ষ্ট সময়ে একসাথে বৈঠকে লিপ্ত হয় , যার মূল উদ্দেশ্যেই থাকে ইসলামের উন্নয়নের নামে বায়ুতুল মালের আকারে টাকা সংগ্রহ করে দেশে পাঠানো ... আস্তে আস্তে ছেলেটির সামনে আসতে থাকে একের পর এক দেশবিরোধী , ইসলামের নামে ভন্ড জামাত শিবিরের অপকর্মের কথা , ধীরে ধীরে বিশ্বাসও করতে লাগে সে ... পরিবর্তন হতে থাকে দেশের অবস্থাও মানুষের মুখে মুখে এখন রাজাকার ,আলবদর , জঙ্গিবাদের কথা বের হতে শুরু করে । সবার মুখে মুখে জামাত-শিবিরের নেতাদের বাংলাদেশ জন্মলগ্নের সময় ভয়াবহ নৃশংসতার কথা ... ধীরে ধীরে ছেলেটি জানত পায় সত্যকে , উপলব্ধি করে সত্য কোথায় এবং বিশ্বাস করতে শিখে ...মুক্তিপায় মিথ্যার বেড়াজাল থেকে ... ছেলেটি এখন ওই ইসলামের নামে অপকর্ম করা জামাত-শিবিরকে গালি দিতেও বিন্দুমাত্র দ্বিধাবোদ করে না ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।