আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দ্যা ডে আফটার

সবাইকে শুভেচ্ছা...

বহু প্রত্যাশিত মুজিব হত্যার রায় বেরিয়েছে একদিন হয়ে গেল। যেমনটা আশাকরা গিয়েছিল দেশের সুপ্রিম কোর্ট ইতিপূর্বে দেয়া হাইকোর্টের রায় বহাল রেখেছে। হত্যাকান্ডের ৩৪ বছর পর রায়! যে কোন মানদন্ডে এ ধরনের দীর্ঘসূত্রতা বিচার ব্যবস্থার দেউলিয়াত্বই প্রমান করে কেবল। সেনা শাষক, স্বৈর শাষক এবং তাদের সহযোগী রাজনীতিবিদ্‌রা নিজ নিজ স্বার্থে শতাব্দীর এ জঘন্যতম হত্যার বিচার নিয়ে ঈদুর-বেড়াল খেলেছে গত ৩৪ বছর ধরে। শেষ পর্য্যন্ত এর পরিসমাপ্তি হতে যাচ্ছে এমন একটা পরিবেশে যখন রাজনৈতিক ক্ষমতায় হত্যাকান্ডের মূল ভিক্টিম আওয়ামী লীগ।

স্বভাবতই প্রশ্ন জাগে, দলটি ক্ষমতায় না এলে বিচারের ভাগ্য কোন দিকে গড়াত? এর উত্তর পেতে বিশেষ কোন পন্ডিত্যের প্রয়োজন হবেনা, এ যাত্রায় বিএনপি নামক দলটিকে ক্ষমতায় দেখা গেলে মুজিব হত্যার বিচার ৩৪ বছরের ন্যায় আবারও আদালতের বিভিন্ন গলিতে হোচট খেত, পাশাপাশি মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত আসামীরাও ৫ বছরের জন্যে নিশ্চিন্ত থাকত তাদের ভাগ্য নিয়ে। রাজনীতি এবং বিচার ব্যবস্থার এই অলিখিত মধুচন্দ্রিমা এটাই কি প্রমান করেনা কথিত স্বাধীনতা হতে আমাদের বিচার ব্যবস্থা কত লক্ষ মাইল দূরে? নিকট অতীতে এই উচ্চ আদালতের একাধিক বিচারক বার বার বিব্রত বোধ করেছেন মুজিব হত্যার বিচার কাজ পরিচালনা করতে। কোত্থেকে আসে এই বিব্রতবোধ? সাধারণ মানুষের বুঝতে অসূবিধা হওয়ার কথা নয় রাষ্ট্রের পয়সায় পালিত বিচারকের দল হাভাতের মত তাকিয়ে থাকে রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের দিকে, ক্ষমতাসীন দলের রাজনৈতিক এবং আদর্শিক মনোভাবের সাথে রাতারাতি খাপ খাইয়ে নিজদের ভাগ্য গড়ে নেন এই সূবিধাবাদী চক্র। আওয়ামী লীগও এই অপরাধ হতে মুক্ত নয়, তাদের ঝুলিতেও জমা আছে আইনী বিচারের অনেক রাজনৈতিক টালবাহানা। কেন ৩৪ বছর লাগল এমন একটা বিচার কাজ সমাধা করতে তার কারণ খুঁজতে গেলেই বেরিয়ে আসবে আমাদের দৈন্যতা।

বিচারের দীর্ঘসূত্রতার জন্যে শুধু বিচার ব্যবস্থা এবং বিচারকদের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে হা-হুঁতাশ করলে অন্যায় হবে, এর জন্যে দায়ী মূলত বিচার ব্যবস্থার উপর রাজনৈতিক ক্ষমতার নগ্ন হস্তক্ষেপ। পিতার হত্যাকারীদের ফাঁসিকাষ্ঠে ঝুলতে দেখলে সন্তান মাত্রই তৃপ্ত হয়। গতকালের রায়ে শেখ পরিবারের প্রতিক্রিয়াও এর বাইরে যায়নি। কিন্তূ বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকার কি হলফ করে বলতে পারবে এ ধরনের হত্যাকান্ড ভবিষতে আর কোনদিন ঘটবেনা? অন্যায়ের বিচার যদি রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের উপর নির্ভরশীল হয় তাহলে বিচারের বানী ঘুরতে থাকবে বছরের পর বছর, যেমনটা ঘুরেছে মুজিব হত্যার বিচার। শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগের এ হতে শিক্ষা নেয়া উচিৎ।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.