আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

স্মৃতিতে কবি আল মাহমুদ.........

আমি বঞ্চিত ব্যথা পথবাসী চির-গৃহহারা যত পথিকের, আমি অবমানিতের মরম-বেদনা, বিষ-জ্বালা, প্রিয়-লাঞ্চিত বুকে গতি ফের। আমি অভিমানী চির-ক্ষুব্ধ হিয়ার কাতরতা, ব্যথা সুনিবিড়, চিত-চুম্বন-চোর কম্পন আমি থর-থর-থর প্রথম পরশ কুমারীর!

কথাছিল বিকেল ৩:৩০মি কবির বাসায় গিয়ে পৌছতে হবে, কবিকে আনার জন্য। সেই মোতাবেক আমি প্রস্তুতি নিতে থাকি। তবে যখন বাসা থেকে বের হবার জন্য প্রস্তত হই তখনই সভাপতির ফোন আসে যে, কবিকে আনার জন্য তাঁর বাসায় যেতে হবে না। কারন হঠাৎ করে একটি প্রোগ্রামে এটেন্ট করার জন্য কবিকে নিয়ে আসা হয়েছে জাতীয় জাদুঘরে।

সুতরাং আপনাকে এখনই জাতীয় জাদুঘরে যেতে হবে। দ্রুত বেড়িয়ে পরলাম বাসা থেকে সোজা একটা রিক্সা নিলাম জাদুঘরের উদ্দেশ্যে। মনে মনে ভাবছিলাম কবিকে তাঁর বাসা থেকে যথাসময়ে নিয়ে আসতে পারবো কিনা। যাক ভাগ্য আমার ভালই যে, এখন আর কবিকে আনার জন্য তার গুলশানের বাসায় যেতে হবে না। শাহাবাগ থেকেই নিয়ে আসা যাবে আর আমাদের প্রোগ্রামতো কাছেই অর্থাৎ রমনা চাইনিজে।

অনুষ্ঠান শুরু হবে পাঁচ টায়। অতএব হাতেও সময় আছে অনেক। এখন মাত্র দুইটা ২৫/৩০ হবে। কিন্তু রিক্সায় চড়তে না চড়তেই শুরু হলো মুষুলধারে বৃষ্টি। প্লাষ্টিকের কাগজ দিয়ে কোনভাবেই নিজেকে বাচাঁতে পারছিলাম না বৃষ্টির হাত থেকে।

তার উপর রাস্তার জ্যাম....। সদরঘাট থেকে শাহাবাগ যেতে সাধারনতঃ ২০/২৫মিনিট সময় লাগে রিক্সায়। সেখানে আমাকে পৌছতে প্রায় ৪০মিনিট সময় লেগে গেল। ভেজা শরীর নিয়ে জাতীয় জাদুঘরে উপস্থিত হলাম। কিন্ত সেখানে গিয়ে জানতে পারলাম যে, ১০মিনিট আগেই অনুষ্ঠান শেষ হয়ে গেছে।

আমার মাথায় নতুন দুঃশ্চিন্তা দেখা দিল। এখন কি করি সভাপতির ফোন....। আমাকে বলা হলো এখনই একটা টেক্সি ক্যাব নিয়ে গুলশানের উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে যান......। আমি কাল বিলম্ব না করে বৃষ্টিকে আপন মনে বরণ করে বেরিয়ে পড়লাম ট্যাক্সির সন্ধ্যানে। পিজি‘র সামনে এসে পেয়ে গেলাম একটা ক্যাব, ভাড়া একটু বেশি.........তবে যাতায়াতের নিশ্চয়তা নিয়ে চড়ে বসলাম ভেজা গায়ে ট্যাক্সিতে।

ড্রাইভারকে বললাম ভাই এয়ারকুলার নেই, বললো না ভাই..... তবে সামনের ব্লোয়ার ফ্যানটা একটু চালিয়ে দাও। ড্রাইভার বললো, ভাই সেটাও নষ্ট হয়েছে আজ কয়েক মাস যাবৎ, মনে মনে ভাবলাম যে তাহলে তোমার এই গাড়িটা এখনও ঠিক আছে কেন? সবই যদি নষ্ট হয়ে গেছে এটাও...... না আবার ভাবলাম যদি এটা নষ্ট হয়ে যেত তাহলে আজ কবিকে আনতে বৃষ্টিতে কাকে নিয়ে যেতাম। শেষে জানালার গ্লাসটা একটু নামিয়ে দিলাম, আধো বৃষ্টি আধো বাতাস........ আমার গন্তব্য গুলশান-১, পোষ্ট অফিসের গলি। মধ্যবয়সী উত্তর বঙ্গের এই ড্রাইভার কবিকে এক নামেই চিনলো। তার কোন কবিতা না বলতে পারলেও খুব উৎসুক অনুভুত হল তার মাঝে।

কবিকে নিয়ে আসবে তার গাড়ীতে এই সাথে স্ব-চক্ষে দেখা হবে কবিকে ড্রাইভার মঞ্জু মিয়ার মনেও সেই আগ্রহ। বৃষ্টির কারনে রাস্তা কিছুটা ফাঁকা। পনের মিনিটের মধ্যেই পৌছে গেলাম গন্ত্যবে। মনের মধ্যে একটা অনিশ্চয়তা কাজ করছে বার বার। মঞ্জু মিয়াকে অপেক্ষা করতে বলে আমি চলে গেলাম বাড়ীর ভিতরে।

কয়েক বার কলিংবেল চেপে কোন সাড়া না পেয়ে শেষে দরজায় নক করলাম। একটু পড়ে ভিতর থেকে দরজা খুলে দিল। সালাম দিয়ে নিজের পরিচয় দিলাম। তবে আমি যাকে নেওয়ার জন্য এসেছি, সে এখনও ফিরে আসেনি বলে জানালেন কবি পরিবারের দুই সদস্য ভাবী এবং আপা । তারা এইও বললেন যে ইতি পূর্বে নাবিক সভাপতি এই বিষয়ে তাদেরকে অবগত করেছেন টেলিফোনে কয়েকবার।

অনুমতি পেয়ে ড্রয়িং রুমে এসে বসলাম। আমি তাদেরকে বিনয়ের সাথে আমাদের অনুষ্ঠানে কবি’র উপস্থিত থাকার গুরুত্ব বুঝিয়ে বললাম। তারা সব শোনে আমাকে আশ্বস্থ করল এই বলে যে, বাবা যদি সুস্থ্যদেহে ফিরে আমরা সাধ্যমত তাকে বুঝিয়ে আপনাদের অনুষ্ঠানে যাওয়ার জন্য রাজি করাব। তবে চিন্তার বিষয় হচ্ছে যে, সে এখনও ফিরে আসেনি। অতএব অপেক্ষা ছাড়া আর কি উপায়।

মনে পড়ল ড্রাইভার মঞ্জু মিয়ার কথা। তাকে কতক্ষণ বসিয়ে রাখব। এই ভেবে নিচে গিয়ে তাকে তার ওয়ান ডাউন ভাড়ার চেয়ে দশ টাকা বেশি দিয়ে বিদায় করলাম। তবে কবিকে দেখতে না পেয়ে তার মনটাও কিছুটা অতৃপ্ত থেকেই গেল তার মুখ খানা দেখে মনে হলো। আমি ফিরে এসে ড্রয়িংরুমে বসে পুনরায় অপেক্ষার প্রহর গুনতে থাকলাম।

মাথার মধ্যে বেশ কিছু ভাবনা কাজ করতে লাগলো। পকেট থেকে মোবাইল ফোনটা বের করে দেখলাম সময় ৪টা ৪০মিনিট। ভাবলাম সময় প্রায় শেষ অনুষ্ঠান শুরু হতে আর মাত্র ২০মিনিট বাকি। বুকের মধ্যে হৃদপিন্ডের ধুক-ধুকানি বেড়ে গেল। তাহলে কি আমাকে ব্যর্থ হয়ে ফিরে যেতে হবে।

বিশেষ অতিথির চেয়ারটি হয়ত কবি‘র স্পর্শ না পেয়ে আজ কেঁদে মড়বে। পুরো অনুষ্ঠানের চিত্রটা তাহলে কেমন হবে। এমন নানা প্রশ্ন মনের মধ্যে এসে ঘোরপাক খেতে লাগলো। হঠাৎ দরজায় কারও আগমনের ধ্বনি শোনতে পেলাম। দরজার কড়া নাড়তেই ঘরের কেউ একজন এসে দরজা খুলে দিল।

আমি উঠে দাড়াতেই দেখি কবি ভিতরে প্রবেশ করছে। ভাবী এবং আপা দরজার কাছে এসে কবিকে দেখে বললো- বাবা আপনি এসেছেন ! আমরা আপনার জন্য কি চিন্তায় আছি। আমি কাছে গিয়ে সালাম দিয়ে নিজের পরিচয় দিলাম এবং বললাম আপনি জার্নি করে এসেছেন ভেতরে গিয়ে বিশ্রাম নিন। এই বয়সে ঘর থেকে বেড়হওয়াও কষ্টের কাজ। তার উপর ঢাকা শহরের উঁচুনিচু রাস্তা আর জ্যাম ঢেলে ঘন্টা খানিক জার্নি করলে সুস্থ্য মানুষও অসুস্থ্য হয়ে যায়।

আবার ড্রয়িং রুমের সোফায় গিয়ে বসলাম। তবে এবার আমার বুকের ধুক-ধুকানি বহুলাংশে বেড়ে গেল। ঠিক তখনই ভাবী এসে বললো, ভাইয়া বাবা যেতে রাজী হয়েছে। আমি অপ্রস্তুত উঠে দাড়ালাম। আমি কিছু জিজ্ঞেস করার আগেই উনি বললেন, আপনি কি গাড়ী নিয়ে এসেছেন? আমি বললাম টেক্সি ক্যাব নিয়ে এসেছিলাম, তাকে তো ছেড়ে দিয়েছি।

উনি বললেন, তাহলে আপনি গিয়ে একটা গাড়ী নিয়ে আসেন, বাবা ফ্রেশ হয়েই বের হবেন। হ্যা, এক্ষনি যাচ্ছি, বলে বের হয়ে গেলাম। মনে মনে আল্লাহকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানালাম। ঝিরিঝিরি বৃষ্টি এখনও পড়ছে। গায়ের জামা এখনও শুকায়নি।

বৃষ্টিকে উপেক্ষা করেই বেড়িয়ে পরলাম। এদিক সেদিক তাকিয়ে মেইন রোডে এসে পড়লাম। না, কোন ট্যাক্সি কিংবা সি.এন.জি খালি দেখছি না। রাস্তার এই মাথা সেই মাথা .......... খালী গাড়ীর সন্ধান মিললো না। ভাবনায় কিছুটা ভেঙ্গে পরলাম।

আল্লাহর কাছে সাহায্য চাইতে লাগলাম। সবকিছু পেয়েও যদি আজ শুধু গাড়ীর অভাবে কবিকে নিয়ে না যেতে পাড়ি তাহলে.......? মঞ্জু মিয়ার কথা খুব মনে পড়ল। ভাবলাম, কেন ছেড়ে দিলাম মঞ্জু মিয়াকে? মাত্র আধা ঘন্টার ব্যবধান। আধা ঘন্টা বসিয়ে রাখলে ৫০টাকা হয়ত ভাড়া বেশি চাইতো। তাছাড়া তারওতো কবিকে স্ব-চক্ষে দেখার আগ্রহ কম ছিল না।

ভাবতে ভাবতে পুরানো রাস্তায় ফিরে এলাম বাসার দিকে। দূর থেকে দেখলাম কবি’র বাসার উল্টো দিকে একটা সি.এন.জি থেকে যাত্রী নামছে। ভাবলাম, এটাই হয়তো আমার আশার শেষ সম্বল। যে করেই হোক রাজী করাতে হবে। কাছে গিয়ে গন্তব্যের কথা বলে, যাবে কিনা জিজ্ঞেস করতেই বললো যাবে তবে একদাম ১০০টাকা।

আমি কাল বিলম্ব না করে রাজি হয়ে গেলাম। বললাম, একটু দাড়াও আমি উপরে যাব আর আসবো। বাসায় ঢুকেই দেখি কবি ড্রয়িং রুমে বসে আছে। বেশ ফ্রেশ লাগছে। একটু আগের কান্তির সেই ভাবটা এখন আর লক্ষ করছি না উনার মাঝে।

আসলে শিশু আর বৃদ্ধদের দৈহিক শক্তির চেয়ে প্রান শক্তিটা বেশি কাজ করে। আমাকে দেখেই জিজ্ঞেস করলো গাড়ী পেয়েছ? আমি বললাম, হ্যা। তাহলে চলো, যাওয়া যাক। আমি বললাম জ্বী, চলুন। আমরা দাড়াতেই ভাবী এবং আপা এসে বললো, ভাইয়া একটু সাবধানে নিয়ে যাবেন, আবার দিয়ে যেতে হবে।

বাবা আসলে অসুস্থ্য, তাছাড়া আপনাদের অনুষ্ঠানের কথা উনি ভুলেই গিয়ে ছিলেন, আমরাই বাবাকে রাজী করিয়েছি। আমি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বললাম, এই নিয়ে আপনারা মোটেই চিন্তা করবেন না। আমি নিজেই এসে উনাকে দিয়ে যাব। নিচে এসে ড্রাইভারকে গাড়ীটা গেইটের কাছে নিয়ে আসতে বললাম। বৃষ্টি এখনও আগের মতই পড়ছে।

আমরা গাড়ীতে চড়লাম। ট্যাক্সি ক্যাবের চাইতে সি.এন.জিতে শব্দ এবং ঝাকুনি দুটাই বেশি। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এই গাড়ীতে আপনার নিশ্চই খুব কষ্ট হবে। উনি বললেন, না অসুবিধা হবে না । আমি বললাম, আসলে অনেক খোঁজা খোঁজি করেও কোন খালি ট্যাক্সি ক্যাব পেলাম না, তাই......।

উনি বললেন, ঠিক আছে, তা আমরা কোথায় যাচ্ছি? আমি বললাম, রমনা চাইনিজে। উনি বললেন, সেটা কোথায়? আমি বললাম, আপনি যে একটু আগে শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরে প্রোগ্রামে গিয়েছিলেন তার পাশেই। আচ্ছা! তা সেখানে কি হবে? আমি বললাম, ঈদের কবিতা পাঠের অনুষ্ঠান। আচ্ছা বেশ! তো কারা থাকবে সেখানে? আমি বিশেষ অতিথিসহ অন্যান্য কবিদের নাম বললাম। নাবিক সভাপতির কথাও বললাম।

উনি বললেন নাবিক সভাপতি) সে থাকবে তো। আমি বললাম, হ্যা। আচ্ছা! একটু পরে আবারও জিজ্ঞেস করলেন, (ইব্রাহিম বাহারী) সে থাকবে তো। আমি বললাম, হ্যা সে আপনার জন্য ওখানে অপেক্ষা করছে। আমি অনুভব করলাম, মায়ের সোনার নোলক খুজে বেড়ানো, দুরন্ত সেই যুবক বয়সের ভাড়ে আজ কান্ত।

তিতাসের বুকে বয়ে চলা নৌকার পালে যে কবি যৌবনের প্রতীক দেখতে পেতো। শৈশবের নদী তিতাসের বুক বেয়ে তারপর কত নৌকা পাল তোলে বয়ে গেছে তার হিসাব কি কবি মন রেখেছে। নির্মল বাতাস পানকৌড়ি, মাছরাঙা, বকের পাখায় জলের ফোঁটা ফেলে উড়ে গিয়ে নদীর শুভ্র তনুশ্রী যেভাবে জয় করেছিল কবির মন। মাছ রাঙা, পানকৌড়ি আজও কি সেভাবে নেচে খেলে গেয়ে যায়.....? হয়ত কবির স্মৃতিতে আজও তিতাস তাকে ডাকে নীরব তৃপ্তির জন্য। হয়ত শৈশবের সেই স্মৃতিই আজও কবিকে প্রান শক্তি জোগায় কলম চালিয়ে যেতে।

বয়সের ভাড়ে শারিরীকভাবে দুর্বল হলেও প্রান শক্তিতে এখনও তিনি তিতাস পাড়ের শৈশবের সেই কবি। তাঁর এই সময়ের কোন কবিতা পড়ে আর তাকে দেখে মনেই হয় না তিনিই লিখেছেন এই কবিতা! গনমানুষের কবি, মধ্যবিত্তের কবি, কবি আল-মাহ্মুদ আজও অকান্ত লিখে চলেছেন, দেশ, জাতি ও বঞ্চিত-অবহেলিত মানুষের কথা। সমৃদ্ধ করে চলেছেন আমার সাহিত্য ভান্ডারকে, এটাই জাতির পরম পাওয়া। আমার ভাবনার ঘোর ভাঙল কবির ডাকে। আর কতক্ষন লাগবে সেখানে যেতে? আমাদের গাড়ীটা এখন শেরাটন হোটেলের সামনে দিয়ে যাচ্ছে।

আমি বললাম, আর ৫/৭ মিনিট লাগবে হয়ত। আচ্ছা ঠিক আছে। আজ দুপুর থেকে বৃষ্টি হওয়ায় রাস্তা প্রায় ফাঁকা তাই খুব দ্রুত আসতে পারলাম। ২০/২৫মিনিট হয়েছে হয়তো আমরা গাড়ীতে চড়েছি। রাস্তায় জ্যাম থাকলে এক দেড় ঘন্টা সময় লেগে যায়।

এবার বৃষ্টিকে খুব ধন্যবাদ জানাতে ইচ্ছে করলো। অল্প সময় পড়েই পৌছে গেলাম আমাদের গন্তব্যে। হলে ঢুকেই দেখতে পেলাম দর্শকে কানায় কানায় ভরে গেছে পুরো আয়োজস্থল । ষ্টেজে অতিথিবৃন্দ সাবাই যেন এতক্ষন তাঁর অপেক্ষায়ই ছিল। কবিকে নিয়ে বসালাম বিশেষ অতিথির আসনে।

সবাইকে দেখে মনে হলো এতক্ষনে যেন অনুষ্ঠানে প্রাণ পেল। দেশ বরেণ্য কবিদের নিয়ে ঈদের কবিতা পাঠের আসর। কবিদের এই মিছিলের নেতৃত্ব তিনিই তো দেবেন। একে একে চলতে থাকলো ঈদকে নিয়ে বাহারী সব ছড়া আর কবিতা পাঠ। মায়ের হাতের শিড়ণী, পায়েশ, খুরমা, খাজুর, আতর, মেহেদী আর পাঞ্জাবী-পায়জামা ঈদ আনন্দের কোন উপাদানই যেন বাদ পড়ল না কবিদের ঈদের কবিতা থেকে।

একে একে সকল আয়োজন প্রায় শেষ, এবার বিশেষ অতিথির বক্তৃতা। মাইক্রোফোনের সামনে আজকের অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি বাংলা সাহিত্যের জীবন্ত কিংবদন্তী, কবি আল-মাহ্মুদ। বক্তৃতার শুরুতেই তিনি বললেন, আমি আসলে বক্তৃতা দিতে জানি না, বক্তৃতা আমি দেবও না। আমি বরং একটা কবিতা শুনাতে পাড়ি। সবাইকে অবাক করে তিনি পড়ে শুনালেন- আমার মায়ের সোঁনার নোলক হারিয়ে গেল শেষে, হেথায় খোঁজি, হোথায় খোঁজি, সারা বাংলাদেশে..........................।

সবাই করতালি দিয়ে উপভোগ করলো এই কবিতা। এই কবিতা পাঠের মধ্যদিয়ে কবিতা পাঠের এই অনুষ্ঠান যেন ষোল আনায়ই পূর্ন হলো। এরই সাথে শেষ হলো ঈদের কবিতা পাঠের অনুষ্ঠান। এই কবিতা পাঠের অনুষ্ঠান আমার দেখা এক ব্যতিক্রমী ও অনন্য আয়োজন যা কখনই ভুলা যাবে না। আমাদের প্রানের কবি, কবি আল-মাহ্মুদ।

যাঁর আগমনে এই অনুষ্ঠান সফল ও প্রানবন্ত হলো। তাঁর প্রতি রইলো, সুস্বাস্থ্য, দীর্ঘায়ূ ও শুভ কামনা।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।