আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জীবনে পয়লাবার নাইটক্লাব গেলাম: মাগার কোলা ছাড়া কুনো লাল পানি খাই নাই!

আসেন দুর্নীতি করি। আর এই দুনিয়াটাকেই খুচাই!

: ও মুরুব্বী, কি করো? : তারা গুনি! : মুরুব্বির মাথা দেখি এইবার ফাইনাল খারাপ হইয়া গেছে, কীচেনে বইয়া বইয়া চুলার দিকে তাকাইয়া তারা গুনে! কি মজার ব্যাপার! : সমস্যাটা কি? : আইজকা ৯:৩০ টায় হ্যালোউইন পার্টি আছে শহরে, রাইতের বেলা লিডিয়া আর সেলিম আইবো। যাইবেন নাকি? : যাওন যায়! : ঐখানে কিন্তু মাইয়া আর মদ, না খাইলে বাইর কইরা দেয়! : সমস্যা নাই, কোনো খালি বোতলে কোক আর পুলাগো লগে ঘুরলে কেউ সন্দেহ করবো না! : ও আইচ্ছা! নতুন রুমে উইঠা দেখি বেহাল সমস্যা, ২৪ ঘন্টা মিরপুর ১ নম্বর কাচাবাজারের মতো শোরগোল। আশে পাশে যত বাঙ্গালী আছে সবাই সমানে আইতাছে যাইতাছে। কীচেনে কে কি খায়, কার টা খায়, রুমে কে কার বেডে ঘুমায়, ঘুম থিকা কখন উঠে, কে কখন তাস পিঠায়, কে কার পিঠ পিটায়, কে বইসা লাউড সাউন্ডে এ্যাডাল্ট দেখে, কে কার গার্ল ফ্রেন্ডের লগে ভিওআইপি করে, পুরাই অটো! রুম মেটরে সকালে নিয়া ফাকে জিগাইলাম,"এর চেয়ে আমাগো আগের গোরস্হান ভালো আছিলো।

কই আইলাম, পড়াশুনা চাঙ্গে উঠবো তো!" : সমস্যা নাই, কথা হইছে পলাশের লগে। ১-২ তারিখের মধ্যে পুরা রুম খালি হইয়া যাইবো! : আল্লাহ ভরসা! চিন্তায় চিন্তায় দেখি মাথার সাদা চুল গজানোর আগেই রাইট ৯:০০ টা আর বাজলো বেল। দরজা খুলনের লগে ইংলিশ বাংলার কাউ কাউ, আমি রুমে বইসা আইতকা উঠলাম। গতকাইল রাইতের পর লিডিয়ার দেখি সোজা রুমে আগমন। কোনো মতে কম্বলের তলে লুকাইলাম।

লুকাইতে না লুকাইতেই দেখি কম্বল লইয়া টানাটানি। যাই হোউক, রাস্তায় খাড়াইয়া বাসের লগে ওয়েট করতাছি এমন সময় লিডিয়া কইলো," স্টুডেন্ট কার্ড আর আইডি আনছো!" : হ আনছি! : (বাংলায় কইলো) কত ভালো ছেলে! মেজাজ খিচা যাই যখন এই ফিরিঙ্গির নাতনীর মুখে বাংলা শুনি! ড্রেসও পড়ছে উপরে ব্লাউস আর নীচে চিপা একখান কালা কাপড়। এর নীচে কিছু আছে কিনা সন্দেহ, যদিও জাননের ইচ্ছাও নাই! অবশেষে ৩০ মিনিটের পথ সবাই ১৫ মিনিটে গেলেও আমি ৪০ মিনিট হাইটা সবার লাস্টে ঢুকলাম সেই নাইট ক্লাব। এই শহরে নাইট ক্লাব আছে মনে হয় ৬-৭ টা (আমার দেখা মতে)। তার মধ্যে এইটা করাই হইছে স্টুডেন্টগো লিগা।

যারা কাজ করে তারাও স্টুডেন্ট, যারা আসে তারাও স্টুডেন্ট। রাত ১০ টার আগে ফ্রী, এর পরে বাংলা টাকায় ৪০০০ টাকা। ঢুকতে গিয়াই দেখি গেটে চেকিং, চেক করতাছে আরেক জার্মান জোয়ানা। আমারে দেইখাই বলে," কার্ড বাইর কর!" স্টুডেন্ট কার্ড বাইর করলে কয় ফটো আইডি অথবা পাসপোর্ট...নাইলে বাড়ির দিকে হাটা দাও! মেজাজ গেলো খিচা, পুলিশ স্টেশনেও পাসপোর্ট চায় না, মাগার ক্লাবে ঢুকতে পাসপোর্ট!!!!! কুনো মতো ওর রুপের বর্ননা, নিজের ফুন নম্বর দিয়াও যখন কাম হইলো না তখন ভিতরের দুই তিনজনরে ফোন দিলাম যারা আমার আগে আইছে। কুনো মতে ঢুইকাই দেখি সব ঝিমায়! মেজাজ আরো খিচা দিলাম হাওয়ায় লাথী, পায়ের জুতা খুইলা কালা পর্দায় চইলা গেলো।

একখান মাইয়া দেইখা আমারে জিগায়,"আর ইউ ইনসেন?" : ইটস এ হ্যালোউইন, সো টুডে আই এ্যাম ইনসেন! : ও গ্রেট, লেটস এনজয় দ্যা পার্টি! দূরে পাকীগো ড্রেস দেইখা তাজ্জুব বইনা গেলাম, এক শালায় মাথায় টুপি পায়াজামা পান্জ্ঞামী, আরেকজন জেহাদী প্যালেস্টাইনী মুজাহিদী ড্রেস, আরেকজন পুরা কালা পায়জামা পান্জ্ঞাবী গলায় চেক মাফলার আর হাতে প্লাস্টিকে ড্যাগার, মনে হয় গরু কুরবানী। আরেকখান পোলা যতদূর জানি তাবলীগ করে, দাড়ীর মুখে মাথায় টুপি মাগার পুরা ইংলিশ স্যুট! পুরাই বেকুব! এদিকে ডিজে যেই গানই ছাড়ে সেই গান ফ্লপ কারন ঐ গানে দুই তিনটা জার্মা আর সুইডীশ নাচলেও বাকী গুলানের খবর নাই। এদিকে চারিদিকে ড্রেস যা দেখলাম, কয়েকটো ল্যাটিনো খালি সুতলী টাইপ জামা আর কিছু আছে খালি উপরে সাদা কাপড়, লাইট জালাইলে ভিতরে সব স্বচ্ছ! আমি পাইকাগো লগে বইসা ফ্রী শো দেখতে লাগলাম। কিছুক্ষন পর পলাশ আইয়া কইলো,"লও বাইরে যাই, অন্য গুলার কি অবস্হা দেইখা আসি!" বাইর হইয়া পয়লা গেলাম আইরিশ পাবে। ঐখানে আমাগো লগের দুই ইন্ডিয়ান নগদে টেবিলে জুয়া খেইলা ১০০০০ বাংলা টাকা খোয়াইলো।

ওগো রাইখা পাশের আরেকটা নাইট ক্লাবে উকি মাইরা ছানাবড়া....এই জন্যই ঢুকতে লেখা আছে...এন্ট্রি ফি ২০০০ টাকা। ভিতরে মনে হয় ন্যুড ড্যান্স চলবো, এই জন্য কিছু মাইয়া খাড়াইয়া প্রথমে প্রোমো দিতাছে! পুরা শহর একটু পর আতশবাজী শুরু হইলো, আর চারিদিক থিকা অল্প কিছু লোক সাগরের পারে গিয়া দাড়াইলাম। আকাশে কি সুন্দর লাল, সাদা ফুল...সামান্য সময়ের মধ্যে বিশাল শব্দ করে আকাশটা আলো করে হারিয়ে যায়! পুরা শহর ঘুরে আবারও আমরা পুরনো জায়গায় আসতেই দেখি বাইরে বিশাল লাইন, কি অদ্ভূত তাদের বেশ ভূষা, কেউ জম্বি, কেউ বানি, কেউ কর্পস, কেউ ইমাম, কেউ ব্যাপ্টিস্ট, আবার কেউ বা স্কেলেটন সাজে! সুন্দর একটা মেয়ে গলায় দড়ি বেধে এসেছে শর্ট স্কার্টে! ভিতরে গিয়ে আন্ডারগ্রাউন্ডে একটা টানেলে ঢুকলাম। টানেল সরু বলে ডাইনে বায়ের দেয়াল দিয়ে গুম গুম শব্দ বুক কাপিয়ে দিচ্ছে। বীটগুলো কিছুক্ষন পর মাথায় লাগছে বোঝাই যাচ্ছে আলো আধারীতে সামনে চলছে বিশাল কর্মযজ্ঞ।

আমি ফাকে একটা সোডা কিনলাম, আর কিনে ভিতরে গিয়েই দেখি, নারী পুরুষের দেহ সব একাকার হাই বীটের তালে তালে....সাথে চলছে আলো আধারীর খেলা। জীবনে এমন কনসার্ট বা এমন পরিবেশ এই প্রথম.....মিউজিক আর এ্যালকোহলে চারিদিকে সব উন্মাদ! নাচা শুরু করলাম, কাদের সাথে নাচলাম জানি না কারন চোখ বুঝে নাচলেই মনে হয় ভালো, কে কার শরীরে এসে পড়ছে, কে কার সাথে কি করছে এসব ব্লগে না বলাই ভালো, তবে একটা কথা না বললেই নয় যেটাকে আমার সবচেয়ে শ্লীল মনে হয়েছে....নাচতে নাচতে হাতের সোডার বোতল টা রেখে কর্নারে গিয়ে হঠাৎ নাচতে গিয়ে সামনে তিনটা মেয়ে নাচছে....একটা মেয়ে পড়ে আছে কালো লেদারের অন্তর্বাস...আরেকটা কাপড়ের গিট্রু দেয়া..আরেকটা আমেরিকার স্টাচু অব লিবার্টি সেজে এসেছে, কিন্তু ভালো করে কাপড় পেচাতে পারেনি বলে বুকের এক সাইড খোলা। যতদূর মনে হলো এরা লেসবীয়ান....এই দৃশ্যটা দেখার পর আমি আর সইতে পারলাম না। সোজা টয়লেটে গিয়ে পেটে যা ছিলো উগড়ে দিলাম...এরা যা করছিলো তা আসলেই বলার মতো নয়! আসার সময় উপরের ডিজেটা ধরলো এক পাকিস্তানীকে," আসলে আমি ভালো পান্জ্ঞাবী গান খুজছিলাম, অন্যসব গানে পার্টি মাতে না। তোমার কাছে ভালো কোনো সাইট আছে যেখান থেকে পেতে পারি?" টাল ডিজে তখন ইমেইল এ্যাড্রেস দিয়ে বললো,"আসলে আমি খুব স্ট্রাগল করছি, আমাকে একটু সাহায্য করো, নতুন ফিউশন যদি করতে পারি তাহলে হয়তো আরো দুই তিনবছর এই লাইনে কাজ করবো!" ওর ফ্রাস্টেশন বুঝলাম না টাল হওনের কারনে নাকি আসলেই বুঝতে টাইম লাগলো! যাই হোউক...ঐ ভোমিটিং......শুধু এটুকু ছাড়া এভরিথিং ইজ রকিং....এবং রাতের বেলা সবাই যখন টাল....তখন আমি আর সাইফুল নামের ভাই ছিলো যারা মাতাল ছিলাম না।

সাইফুল খেলেও তার ধরে নাই, আর আমি জাস্ট টাচ করি নাই। সবাই দেখে কিছুক্ষন হাসলো, শহরের দিকে অন্য ক্লাব গুলোর দিকে পা বাড়ালো রাত ২:৩০টার সময়! আমি একা হাটতে হাটতে বাসায় চলে আসলাম। ডিম ভাজলাম, ডাল রান্না ছিলো, আর সাথে গরম ভাত! আসলেই অমৃত

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।