আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হিযবুত তাহরীর কিছ তথ্য



বাংলাদেশে হিযবুত তাহরীর[/sb বাংলাদেশকে ওয়ার অন টেররের উর্বর ভূমি বানানোর জন্য প্রস্তুতি চলছে দীর্ঘদিনের। আর জন্য মার্কিনিদের দরকার ইসলামী জুজু। যে ইসলামী জঙ্গিবাদীদের এক সময় অর্থ-অস্ত্র দিয়ে সহায়তা করতো এখনো করে। বাংলাদেশে হিযবুত তাহরর নিয়ে ব্যাপক লেখা লেখি হয়েছে। তবে সবই জানা তথ্য, বিশেষত হিযবুত তাহরীর পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের কার্যক্রম ও নিষিদ্ধ হবার তথ্য দিয়ে।

তবে বাংলাদেশে হিযবুত তাহরীর কোথা থেকে টাকা আনে, কোন পারপাসে সে টাকা খরচ করে সে বিষয়ে কম তথ্যই বাংলাদেশের নাগরিকের নজরে আনা হয়েছে। এখানে আরও উল্লেখ করার মত বিষয় যে, ইসলামী জঙ্গিদেরকে আইনের আওতায় এনে রাষ্ট্র খুবই গণতান্ত্রিক সাজার ভাওতা দিচ্ছে আর মাওবাদিদেরকে ক্রসফায়ারে বা লাইন অব ফায়ারে হত্যা করছে। এই দ্বীচারিতার মধ্যেই লুকিয়ে আছে প্রকৃত সত্য। সেই সত্য আর ভেদজ্ঞান আমাদেরকে বের করতে হবে। আপাততো হিযবুত তাহরীর কিছু নতুন তথ্য দেয়া হলো।

নতুন তথ্য বলছি এই কারণে যে, এর আগে এই তথ্যগুলো দেখিনি। দেশে জরুরী অবস্থা চলাকালে ৭ নেতাকর্র্র্মীসহ রাজশাহী পুলিসের কাছে আটক হন হিযবুত তাহারির শীর্ষ নেতা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক গোলাম মওলা। নব্বুই পরবর্তিতে গোলাম মওলা বৃটেনে যান। আর সখোনে পরিচয় হয় হিযবুত তাহারির সাথে। সে সময়ের বৃটেন পুলিস গোলাম মওলার সাথে ইসলামী জঙ্গিবাদের সম্পর্ক থাকার সন্দেহে তাকে ব্যপক ব্যাপক জিজ্ঞাসবাদ করে বলে অভিযোগ রয়েছে।

তবে গোলাম মওলার হাত ধরেই বাংলাদেশে হিযবুত তাহারির রাজনৈতিক কাযক্রম শুরু হয়েছে বলে একাধিক শীর্ষ হিবুত নেতা আমাকে জানিয়েছেন। বৃটেনের রাজনৈতিক যোগাযোগাওে সাথে সাথে আসতে থাকে অঢেল অর্থ যা সংগঠনের ভিত তৈরীতে সাহায্য করে। হিজবুত তাহরির বাংলাদেশের প্রথম অফিস ছিলো এ্যালিফ্যান্ট রোডে কাটাবোন মসজিদের আপোজিটে। এই পার্টি অফিসে দামী কার্পেট আর শিতাতাপ নিয়ন্ত্রীত ছিলো। অফিসের জাক জমক দেখেই বোঝা যায় অফিস চালাতে সংগঠনটির ব্যাপক অর্থ ব্যায় হয়।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইরাক আক্রমনের সময় সংগঠনটি উর্চ্চ মূল্যের ১০০ গ্রাম অফসেট গ্লোসি পেপারে ৪ রঙ্গা লিফলেট দেখে অনেকেই সন্দেহ প্রকাশ করেছে, কোথা থেকে এতা টাকা আসে। যদিও সংগঠনের নেতাদের বক্তব্য ” এসব কিছুই করা হয় ব্রাদারদার-সিস্টারদের ( হিজবুত কর্মিদের ব্রাদার ও সিস্টার বলে সম্মোধণ করে) চাঁদার টাকায়। হিজবুত তাহরির বাংলাদেশের মূলত মধ্যবিত্ত ও উচ্চ মধ্যবিত্ত শিক্ষার্থীর মধ্যে কাজ করছে। জরুরী অবস্থার মধ্যে মিছিল মিটিং করার পর ও গ্রেফতার না হওয়ার কারণে হিজবুত তাহরির আলোচনায় আসে। বাংলাদেশওে হিযবুত তাহরির প্রধানত বিশ্ববিদ্যালয় পড়–য়া স্বচ্ছল পরিবারের ছেলে মেয়েদেরকে দলে ভেড়ানোর চেষ্টা করছে।

সাধারনত সেইসব মেয়েদের হিজবুত তাহারির দলে ভেড়াতে সক্ষম হয় যাদের মানসিক অবস্থা খুবই দূর্বল থাকে। ব্যাক্তিগত, পারিবারিক অথবা সামাজিকভাবে নিপিড়ীত মেয়েদেরকে খুব সহজে তারা দলে টেনে নেয়। মধ্য বিত্ত বা অনেক নিম্ম মধ্যবিত্ত ঘরের মেয়েরা হিযবুত তাহরির রাজনৈতক কর্মে নিজেকে নিযুক্ত হচ্ছে এই আশায় যে লেখাপড়া শেষে একটা চাকুরি। জরুরী অবস্থায় হিযবুত তাহারির রহস্যজনক গতিবিধি এটা উল্লেখ করার মতো বিষয় যে জরুরী অবস্থার মধ্যে সকল রাজনৈতিক দলের কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও সরকারের বিশেষ মদদপুষ্ঠ ইসলামী দলগুলো কিন্তু বহাল তবিয়াতে কর্মসুচী পালন করে গেছে। হিজবুত তাহাররির ৭ নেতাকর্মী রাজশাহীতে আটক হয় জরুরী বিধিমালা ভঙ্গের কারণে।

পরে জামিনও পেয়ে যায়। তাদের জন্য ডিটেনশন, রিমান্ড কোনটিই প্রয়োজন হয়নি। কিন্তু বাগেরহাট জেলার মোড়েরলগঞ্জ উপজেলার বাদুরতলা ইউনিয়নের হিন্দুপাড়ার ছেলে রামকৃষ্ণ মাঝি রামু, দিপিকা হালদার ও আনিচ রায়হানের ক্ষেত্রে তা হয়নি। এই তিনজনওে অপরাধ তারা জরুরী অবস্থা ভেঙ্গ গ্রামে সিনেমা দেখানোর আয়োজন করছিলো, জনগণের মাঝে রাজনৈতিক প্রচার চালাচ্ছিলো। আর এ কারণে তাদেরকে গতবছরের ২২ অক্টোবর ধরে আনে বাগেরহাট পুলিস সুপারের নের্তৃত্বে।

তাদের বিরুদ্দে কোন মামলা করা হয়নি। ডিটেনশন দিয়ে রাখা হয়েছে। সা¤প্রতি শোন যাচ্ছে পুলিস তাদের বিরুদ্ধে রাষ্টদ্রোহিতার মামলা করবে। এই হলো আমাদের রাষ্ট্রযন্ত্রেও চেহারা। রামু ও তার বন্ধুদের অপরাধ তারা বামপন্থি প্রগতিশীল মানুষ।

আর সমাজ পরিবর্তনের জন্য হিজবুত তাহারির মতো মার্কিনিদের অর্থে পরিচালিত কোন সাজানো নাটকে পা দেয়নি। উগ্র জঙ্গি মৌলবাদীদেও তোলে তুলে চুমু খাবে, আর প্রগতিশীল বাম ঘরানার দেখলে আর রক্ষে নেই। তার অর্থ হলো সব করো। এনজিও করো, পরিবেশবাদী আন্দোলন করো। সমাজ বদলের আন্দোলন করলেও দোষ নেই।

কিন্তু সেই পরবির্তন কোনভাবেই মার্কসবাদী ঘরানার হলে তোমাকে ছাড় দেওয়া হবেনা। প্রয়োজন সন্তাসবাদের নাম ক্রসফায়ার। আর এসব হচ্ছে লো ইনটেনসিটিফাই ওয়ারফেয়ারের অদিনে। যেখানে বিপ্লবী লড়াইয়ের মূল শক্তি মাথা চাড়া দিয়ে উঠার আগেই তাকে ধ্বংস কওে দেওয়ায় সাম্রাজ্যবাদেও লক্ষ্য। আর সে কারনে একটাও ইসলামঢী জঙ্গি ক্রসফায়ারের সাজানো নাটকে মারা যায়নি।

যেখানে প্রায় ১৫শ এর অধিক মানুষকে ক্রসফায়ারের নাটকে হত্যা করা হয়েছে তকথিত চরমপন্থি নামে। আরো আশ্চার্যের বিষয় হচ্ছে এই পার্টিগুলোর একটিও কিন্তু নিষিদ্ধ নয়। তারমানে এই নয় কোন গণতন্ত্রমনা মানুষ বচিারবহিভূত হত্যাকে সর্মন করবে। ১১ এপ্রিল, ২০০৮ সালে শুক্রবারে জুম্মার নামাজ শেষে মুসোল্লিরা সরকারের নারী নীতির বিরোধীতা করে বিক্ষোভ মিছিল করে। জরুরী অবস্থা ভেঙ্গে মিছিল করা নিয়ে পুলিসের সাথে ভয়াবহ দাঙ্গা বেঁধে যায় বিক্ষোভকারীদের।

বিক্ষোভকারী, পুলিস ও অসংখ্য সাংবাদিক আহত হয়। মুসোল্লিদের উসকানীদাতাদের মধ্যে হিজবুত তাহরির বড়ো ভ’মিকা রাখে। এভাবে জরুরী অবস্থার মধ্যে বিক্ষোভ করা এবং পরবর্তিতে এর জের ধরে মৌলবাদীরা চট্রগ্রামে থানা পযর্ন্ত লুট করে। মুখে অহিংসা আর শান্তির বানী প্রচার করলেও মূল লক্ষ্য জঙ্গিবাদকে উসকে দেওয়া। হিজবুত তাহরির মোহাম্মদপুরের কর্মিদের বিরুদ্ধে জরুরী অবস্থা লংঘনের অভিযোগে ২০০৭ সালের ৩০ মার্চ পুলিশ ২২ সদস্যকে আটক করে।

তাদের কাছে আফগান ও ইরাক যুদ্ধের বিভিন্ন চিত্র ও অনেক পোস্টার ছিলো। পুলিশ ২২ হিজবুত কর্মিকে জরূরী বিধিমালা ভঙ্গের অপরাধে গ্রেফতার করলেও পরবর্তিতে ছেড়ে দেওয়া হয়। বিদেশী অর্থের উৎস হিযুবত তাহ্রীর প্রত্যেকটি প্রগ্রাম দেখলে যে কেউই বুঝে যাবে এইসব প্রগ্রাম সম্পূর্ণ করতে কত অর্থের ব্যয় হয়। হিযবুত নেতাদের জীবন যাপন দেখলেও সেই সত্য সহজে অনুমান করা যায়। হযরত মোম্মদ (সা এর বিদ্রুপ কাটুন একে বিশ্বব্যপি নিন্দিত হয়েছিলো ডেনিশ কাটুনস্টিরা।

হযরত মোম্মদ (সা এর কার্টুন আঁকাকে কেন্দ্র করে বিশ্বব্যপি ধর্শপ্রাণ মুসলিমরা পথে নামে প্রতিবাদ করে, ধিক্কার জানায় এই জগন্য বর্ণবাদি আচারণের। তবে বিশ্বব্যপি যে সংগঠনটি হযরত মোম্মদ (সা-এর কার্টুন আঁকাকে কেন্দ্র করে সা¤প্রদায়িক বিষ বাস্প ছড়িয়ে আন্দোলনে নামে সেই সংগঠনটি হলো হিযবুত তাহ্রীর। বাংলাদেশেও সে সময় ব্যপক মিছিল সমাবেশ করে হিযবুত তাহ্রীর। সে সময় হিযবুত তাহ্রীর সুইডেন দুতাবাস ঘেরাও এবং সুইডেন পন্য বর্জনেরও ডাক দেয়। এ সময় তারা মূলত সংগঠনকে ধর্মপ্রাণ কম বয়সি শিক্ষার্থীদের মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য কর্মি নিজেদের দলে টেনে নেয়।

তবে এই আন্দোলনে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে হিযবুত তাহ্রীর খোদ ডেন মার্কের কাছ থেকে। অনেকে অভিযোহ করেছেন, ডেন মার্কের হযরত মোহাম্মদ (সা-এর কার্টুন আঁকা ছিলো পরিকল্পিত। যেনো বিশ্বব্যপি ইসলামের বিরুদ্ধে একটি ঘুণা ছড়িয়ে দিয়ে মুসলিম সংখ্যা গরিষ্ট দেশে কার্টুনের বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রতিবাদ হয় এবং জিহাদী জঙ্গি সংগঠনগুলো তৃতীয় বিশ্বে ভালো করতে পারে। আর ইসলামী জিহাদী সংগঠনের ধুয়া দিয়ে উক্ত দেশগুলোতে পশ্চিমা সামরিক উপস্থিতি বা হামলা নিশ্চিত করা যায়। বাংলাদেশে হিযবুত তাহ্রীর গড়ে তোলার পেছনে যে কজন শীর্ষ নেতা কাজ করেছে তার মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের দুই শিক্ষক রয়েছে।

ল্কো প্রশাসনের উক্ত দুই শিক্ষক বিশ্বব্যাংক আর এডিবির কনসালটেন্ট হিসেবে সমাজে বেশ পরিচিত। লোক প্রশাসন বিভাগের দুই হিযবুত সমর্থকের একজনরে স্ত্রী চাকরি করে একটি বিদেশী দূতাবাসে। উক্ত বিদেশী দূতাবাসের উর্ধতন বাঙ্গালি কর্মকর্তা হিযবুত নেতার স্ত্রী। দুতাবাস কর্মকর্তা হিযবুত নেতার স্ত্রীর মাধ্যমে উক্ত দুতাবাস থেকে উন্নায়ন পরিকল্পনার কনসালটেন্ট হিসেবে কোটি কোটি টাকা হিযবুত তাহ্রীর ফাণ্ডে সরাসরি জমা পড়েছে। এখানে আরও উল্লেখ্যের বিষয় যে উক্ত নেতা প্রকাশ্যে কখনো হিযবুত তাহ্রীর সংগঠক বা তাত্বিক বলে শিকার করে না।

তবে শুধু বিদেশী এম্বেসির ফাণ্ডই হিযবুতদের তহবিলে জামা পড়ে না বিশ্বব্যাংকের নানা রকম ফাণ্ডেও হিযবুত তাহ্রীর অর্থ আসে। বিশ্বব্যাংক দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের উচ্চ শিক্ষা বেসরকারিকরনের চেষ্টা তদ্বির চালিয়ে আসছে। তারই অংশ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় মুঞ্জরি কমিশনের প্রস্তবিত ২০ বছর দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা করে। যার মাধ্যমে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো একের পর এক ছাড়া হবে বেসরকারি খাতে। হিযবুত তাহ্রীর বিশ্বব্যাংক, এডিবিকে সাম্রাজ্যবাদী সংগঠন বলে অভিহীত করে এবং এই সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে ব্যাপক আন্দোলন গড়ে তোলার আহবান জানায়।

তবে সাম্রাজ্যবাদী সংগঠন বিশ্বব্যাংক এডিবির বিরোধীতা মাঠে ময়দানে করলেও উক্ত সংগঠনের সঙ্গে গভির অর্থনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে হিযবুত তাহ্রীর। বিশ্বব্যাংক এডিবির অর্থায়নে প্রণিত মুঞ্জরি কমিশনের দীর্ঘ মেয়াদি কৌশলপত্রটি হিযবুত তাহ্রীর লোক প্রশাসন বিভাগের শীর্ষ দুই নেতা করে দেন মোটা অংকের অর্থেল বিনিময়ে। ইউজিসির তৎকালিন ভিসি আসাদুজ্জামানএর পিএচডি ডিগ্রি না থাকায় পিএচডি ডিগ্রি করার উচ্ছে পোষন করে। পিএচডি’র থিসিস করে দেয়ার শর্তে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে ইউজিসির দেশ ও শিক্ষা বিরোধী কৌশলপত্রটি তৈরী করার কাজ দেয় উক্ত দুই হিযবুত নেতাকে। তবে এখানেও হিযবুত নেতারা সতোতার পরিচয় দেয়নি।

কারণ থিসিসটি নকলের দায়ে অভিযুক্ত হয়। আসাদুজ্জামানের থিসিসের ১১৩ পৃষ্টাই অন্য জায়গা থেকে আট পেস্ট ( হুবুহ নকল করা) করে ছাপানো। দুদুক আসাদুজ্জামানের থিসিসের নকলের বিষয়টি তদন্ত করে রির্পোট দেয়। যে হিযবুত তাহ্রীর বিশ্বব্যাংকের অর্থ্যায়নে করা ইউজিসির কৌশলপত্র বিরোধী আন্দোলন করছে, সেই হিযবুত তাহ্রীর আবার শিক্ষার বাণিজ্যিকিরনের বিরুদ্ধে ইউজিসিরি কৌশলপত্র বিরোধী আন্দোলনে নেমেছ! ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সেন্টার ফর আরবান স্টাডিজ নামের একটি গবেষণা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করে হিযবুত তাহ্রীর নেতৃত্বে। এই কেন্দ্রে টাকা আসে বিশ্বব্যাংক ও এশিয়ান উন্নায়ন ব্যাংক।

আন্দোলনে শ্লোগানে বিশ্বব্যাংক-এশিয়ান উন্নায়ন ব্যাংক (এডিবি)’এর বিরোধীতা করলেও বাস্তবে সেই সব প্রতিষ্ঠানের অর্থ্যায়নে হিযবুত তাহ্রীর সাংগঠনিক কাজ চলে, চলে নেতাদের জীবনের অনেক কিছুই। লক্ষ্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনী হিযবুত তাহ্রীর সারা পৃথিবীতে খেলাফত কায়েমের লক্ষ্যে উক্ত দেশের সরকারের উচ্চ পদস্ত কর্মকর্তাদের মধ্যে নিজেদের মতাদর্শের লেকাজনকে রিক্রুট করে। সরকারি আমলা এবং বিশেষত সেনাবাহিনিতে নিজেদের প্রভাব বৃদ্ধির ওপর হিযবুত তাহ্রীর জোর দিয়ে থাকে। বাংলাদেশে কাজ শুরু করার সময় হিযবুত তাহ্রীর শুরু থেকে বিষয়টি সামনে রেখে এগিয়ে নেয় তাদের রাজনৈতিক কর্মসূচী। তারই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে নিজেদের প্রভাব বৃদ্ধির লক্ষ্যে সেনাবাহিনীর স্টাফ কলেজে নিয়মিত পাঠাদান করে আসছে হিযবুত তাত্বিক এ নেতা ।

বাংলাদেশ সেনা বাহিনীকেই শুধু টার্গেট করে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে হিযবুত তাহ্রীর তা নয়, সরকারের আমলা বলে খ্যাত প্রশাসন বিভাগেও আধিপত্য কায়েমে মরিয়া হয়ে ওঠেছে হিযবুত তাহ্রীর। বিসিএসের মাধ্যমে যে সব ক্যাডার পদ মর্যাদার কর্মকর্তারা চাকরিতে যোগ দেন, তাদের কাজের দক্ষতা বৃদ্ধি করার জন্য সভারে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে পাবলিক এ্যাডমিনেস্ট্রেশন ট্রেনিং সেন্টার (পিএটিসি) লোক প্রশাসন কেন্দ্র। এই কেন্দ্রের মাধ্যমে সরকার দক্ষ আমলা তৈরী করে থাকে, যারা দেশের গুরত্বপূর্ণ কাজে নিয়োজিত রয়েছে। হিযবুত তাহ্রীর পিএটিসিতে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ আমলাদের ক্লাস নিয়ে থাকে। লক্ষ্য সরকারের ভেতর থেকে প্রভাব বিস্তার করা।

পিএটিসিতে একটি ক্লাসের জন্য খুবই অল্প অর্ধ পারিশ্রমিক হিসেবে দিয়ে থাকে। তবে অর্থ এখানে লক্ষ্য নয়। লক্ষ্য সরকারি কর্মকর্তাদের মগজ ধোলাই। এখানেও ক্লাস নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক হিযবুত নেতা । বিশ্বব্যাংকের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করলেও বাস্তবে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে হিযবুত তাহ্রীর রয়েছে গভির অর্থনৈতিক সখ্যতা।

স¤প্রতি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় Government studies নামে একটি মাস্ট্রাস কোর্স চালু হয়েছে। এমএসএস এই কোর্সটির অর্থ্যায়ন বিশ্বব্যাংক করছে। কোর্সটির পরিচালনা করছেন এক হিযবুত নেতারা। কোর্সটি খোলার প্রধান উদ্দেশ্য হলো বিসিএসে এ্যাডমিন ( নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট) ক্যাডারে হিযবুত তাহ্রীর মতাদর্শের অনুসারীদের প্রবেশ করানো। নরওয়ে থেকে হিযবুত তাহ্রীর আরেক নেতা বিশব্যাপি সংগঠনের হয়ে যোগাযোগ করছে।

এই হিযবুত নেতার নাম ড. ইশতিয়াক। এক নরওয়ানজিকে বিয়ে করে বর্তমানে সেখান থেকে বর্হিবিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলছে বলে সূত্র জানিয়েছে। জরুরী অবস্থায় অস্থিরতার সুযোগ নিয়ে মাঠে নামে হিযবুত তাহ্রীর। সে সময় শোন যায় কিংস পার্টির কথাও। অনেক রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ সে সময় এরকম অভিমত করে যে, কিংস পার্টি মূলত দেশের ইসলাম পন্থি সংগঠনের সঙ্গে সমন্বয় করে বিএনপি আওয়ামী লীগের সংস্কার পন্থিদের সঙ্গে করে একটি সরকার গঠন করা হবে।

তবে সেইরকম একটি রাজনৈতিক অবস্থা তৈরী করে তবেই ক্ষমতা দেয়া হবে উক্ত কিংস পার্টি মোর্চার হাতে। এরকম একটি অবস্থার জন্য অপেক্ষা করছিলো সম্ভাব্য কিংস পার্টির শরিক দল হিযবুত তাহ্রীর। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ২০০৭-এর ২০ আগস্ট খেলার মাঠে সেনাবাহিনীর সঙ্গে ছাত্রদের অপ্রিতিকার ঘঠনার অবতারনা হয়েছিলো যে প্রেক্ষাপটে সেখানে প্রধান ভূমিকা পালন করেছিলো হিযবুত তাহ্রীর নেতা লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষক মোবেশ্বর মোনেম। এর পরের দিন ২১ আগস্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের মিটিং-এর সময় হিযবুত তাহ্রীর শিক্ষকেরা উতপ্ত বক্তব্য দিলে পরিস্থিতি আরো ঘোলাটে হয়ে যায়। ২২ আগস্ট তৎকালিন তত্বাবধায়ক সরকার দেশব্যাপি কারফিউ ঘোষণা করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর নির্মম নিপিড়ন শুরু হয়।

হিযবুত তাহ্রীর লক্ষ্য ছিলো চরম অস্থিতিশীল অবস্থার মধ্যে নিয়ে যাবার পরে ড. ফখরুদ্দিন সরকারের পতন ঘটিয়ে আরকেটি সরকার গঠন করা যার নেতৃত্বে থাকবে সেনবাহিনী, কিংস পার্টি ও বড় দুই দলের সংস্কারপন্থিরা। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা হিযবুত তাহ্রীর সহ অপারপর অন্য যড়যন্ত্রিকারিদের যড়যন্ত্র ভেঙ্গে দেয়। দেশবিরোধী আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। তত্বাবধায়ক সরকার বাধ্য হয় দ্রুত একটি নির্বাচন দেয়ার জন্য। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় টার্গেট হিযবুত তাহরীরের রয়েছে ‘ছাত্রমুক্তি’ ও ‘আলোকিত ছাত্রী ফোরাম’ নামের পৃথক দু’টি ছাত্র সংগঠন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিয়েই যাত্রা শুরু করে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের শিক্ষার্থীদেরকে টার্গেট করে এগোয়। হিযবুত তাহ্রীর সেই সব মেয়েদেরকে সংগঠনে ভেড়ানোর চেষ্টা করে যারা অর্থনৈতিক মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়ে। নিন্ম মধ্যবিত্ত ঘরের নারী শিক্ষার্থীদেরকে হিযবুত তাহ্রীর টার্গেট করে এগোয়। ২০০০ সালে প্রাথমিকভাবে হিযবুত তাহ্রীর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘লিবারেটেড ইয়ুথ’ ব্যানারে কার্যক্রম শুরু করে। এই ব্যানারে ২০০৪ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে সংগঠনটির নেতা-কর্মীরা একটি সেমিনারের প্রস্তুতি গ্রহণ করে।

তবে ছাত্রলীগের বাধার কারণে তারা তাদের নির্ধারিত সেমিনার আয়োজন করতে পারেনি। ২০০৪ সালে সিলেটে প্রথমে হিযবুত তাহ্রীর লিফলেটসহ ১০ জনকে পুলিশ গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতরা ছিল বিভিন্ন কলেজের ছাত্র। ২০০৬ সালের প্রথমে তারা ‘ছাত্রমুক্তি’ নামে একটি ছাত্র সংগঠন গঠন করে। ২০০৬ সালে জোট সরকারের সময় বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেটে ফিলিস্তিনে মুসলমানদের ওপর হামলার প্রতিবাদে মিছিল করে।

এরপর থেকে মাঝে-মধ্যেই হিযবুত তাহরীর খেলাফত আন্দোলনের নামে মিছিল ও লিফলেট বিতরণ করে। মঞ্চ তৈরীতে ব্যস্ত হিযবুত তাহরির বুশ সাহেবের ডকট্রিন ছিলো, ‘ হয় সন্ত্রাসের পক্ষে নতুবা সন্ত্রাসের বিপক্ষে। ’ এই তত্ত্বেও সেজা মানে হলো তোমাকে মার্কিণ যুক্তরাষ্টের পক্ষে থাকতে হবে নতুবা তুমি তার শত্র“ হয়ে গেলে। আর বিশ্বব্যাপি বাস্তবই সন্ত্রসারে একটা প্রেক্ষাপট তৈরী করা। যে প্রেক্ষাপটের মধ্য দিয়ে পাথর ছোড়ার অপরাধে একজন প্যালেস্টাইন একজন কিশোর হয়ে যাবে নাম করা সন্ত্রাসী আর এহুদ ওলমাটরা নিশ্চিত বশে শীতল বাতাসে দেহ জোড়াবেন।

মাঝখান থেকে এক চেটিয়া পুঁজির মালিকেরা অস্ত্র ব্যবসাটি আবার ঝালিয়ে নিতে পারবে। মূলত পুঁজিবাদী সমাজব্যস্থার অভ্যান্তরের সংকটা তাকে ক্রমাগত বিপদের মধ্যে নিক্ষেপ করছে। আর এই বিপদ আসছে ঘোর পুঁজিবাদী সমাজের ভেতর থেকে অর্থ্যাঃ এর উৎপাদন ব্যবস্থার মধ্যেকার দূর্বলতা থেকে। যদি এই সমাজকে আরো সামনের দিকে নিয়ে যেতে হয় তবে এই সমাজের মধ্যেকের যে দ্বন্ধ তার অবসান না করে কোনভাবেই এই সমাজকে আর এগুনে যাবেনা। পুঁজিবাদেও মধ্যেকার এই দ্বন্ধ মিমাংসার যে পথ ও পদ্ধতি তা আবার গোটা পুঁজিবাদী সমাজকেই আবার বিপদের মধ্যে ঠেলে ফেলে দেয়।

তার অস্তিত্ত্ব ধ্বংসের মধ্যে দিয়ে এই দ্বন্ধ মিমাংসা হবে। সেটা এক বৈপ্লবিক রুপান্তর। শুধু ক্ষমতার পালা বদলই নয়, পুরানো উৎপাদন যন্ত্রকে সমুলে বিনাশ করে দিয়ে এক নতুন উৎপাদন সম্পর্ক তৈরী করাই এই বিপ্লবের প্রধান উদ্দেশ্য। তা না কওে উল্টো কোন না ফর্মে পুঁজিবাদী উৎপাদন ব্যবস্থাকে রেখে শুধু তার ধরণ পাল্টালেই সমাজের কোন উপকারে আসবে না। হিজুবুত তাহারির সেই কাজটিউ কওে যার ফলে সমাজের পুরানো ক্ষয়ে যাওয়া ব্যক্তি মালিকানা ধাচের উৎপাদন সম্পর্ক রয়ে যায়।

ফলে সমাজের অভ্যন্তওে কোন মৌলিক পরিবর্তণ আসার সম্ভবনা আগে থেকেই খারচি করে দেয়। বরঞ্চ আগে থেকেই প্রকাশ্য সাম্রাজ্যবাদের সামরিক আগ্রাসনের ভিত তৈরী করে দেয়। আর এই সেই মঞ্চ তৈরীর কাজটিই বর্তমানে হিজবুত তাহারির করার জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। আজকের পৃথিবীর অর্থনীতিকে লেনিনীয় ব্যাখ্যায় বলা হয় পুঁজিবাদের সর্বোচ্চ স্তর সাম্রাজ্যবাদী অর্থনীতি। লগ্নি পুঁজি দেশে দেশে রপ্তানি করার জন্য সাম্রাজ্যবাদী উন্নত ধনতান্ত্রিক দেশ উন্নয়নশীল দেশগুলোর জাতিয় শিল্প প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে নিজেদের পণ্য ও পুঁজির অধিনে করে ফেলে।

উক্ত দেশ সমূহের খনিজ সম্পদও সাম্রাজ্যবাদি দেশ সমূহের কোম্পানীর অধিনে চলে যায়। এসবই মূলত কমিউনিস্টদের ব্যাখ্যা। হিযবুত তাহ্রীর কমিউনিস্টদের এসব ব্যাখ্যা দিয়ে দেশে দেশে শিক্ষার্থীদের আকৃষ্ট করে কিন্তু সমাধানের জন্য সমাজতন্ত্র নয়, খেলাফতকে সামনে নিয়ে আসে তারা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিত ঐতিহ্যকে ধারণ করে বাংলাদেশের সকল প্রগতিশীল আন্দোলন সংগ্রাম। সেই গণতান্ত্রিক প্রগতিশীল আন্দোলন সংগ্রামের পীঠস্থানে হিযবুত তাহ্রীর এরকম অবস্থানকে দেশের ভবিষৎকেও শঙ্কিত করেছে।

তবে কি আমাদের লড়াই সংগ্রাম ওহাবি মতালম্বি ভর করবে? হিযবুত তাহ্রীর শিক্ষার্থীদের মধ্যে সাংগঠনিক বিস্তারকে বেছে নিয়েছে। যার ফলে কম বয়সি তরুর তরুনীরা ইসলামের বিপ্লবের লাল রঙ্গে মেখে নিচ্ছে জীবনের সব স্বপ্ন। হিযবুত তাহ্রীর কম বয়সি কর্মীরা জানেও না তাদের সংগঠনের অর্থ আসে কোত্থে থেকে, তাদের মদদ দাতাই বা কে। তরুনারাই প্রতিবাদী হয়। এটা বয়সের ধর্ম।

প্রতিটি দেশেই তাই হয়। বাংলাদেশেও তার ব্যতিক্রম নয়। তবে সেই তরুন প্রাণ যখন কোনো সাজানো ফাদে পা দেয়, তখন তরুন প্রাণের আত্মহুতি দেশ উদ্ধারে না লেগে দেশের বিনাশে সহায়তা করে। হিযবুত তাহ্রীর যেনো সেই ট্রাজেটিরই অংশ।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.