আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হিযবুত তাহ্‌রীর ও শিবির নিয়ে যত ভয়

ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন হিযবুত তাহ্‌রীর ও জামায়াতে ইসলামীর ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবির। এ দুটি সংগঠনের গোপন কার্যক্রম নিয়ে রীতিমতো চিন্তায় পড়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তাদের মতে, যে কোনো সময় তারা দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে র্যাবের গোয়েন্দা শাখার প্রধান লেফটেন্যান্ট কর্নেল জিয়াউল আহসান জানান, দেশের সব জঙ্গি সংগঠন দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে কাজ করছে। কেউ আছে হিযবুত তাহ্রীরের সঙ্গে কেউ বা ছাত্রশিবিরে।

তিনি বলেন, আগে জঙ্গি সংগঠনে যোগ দিত মাদ্রাসার ছাত্ররা। এখন কিন্তু আর সে অবস্থা নেই। শিক্ষিত এবং ধনাঢ্য পরিবারের সদস্যরাও জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে কাজ করছে। তারা যেভাবে সক্রিয় হয়ে উঠছে তাতে মনে হচ্ছে যে কোনো সময় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, তীক্ষ্ন নজরদারির কারণে হরকাতুল জিহাদ হুজি, জামা'আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ জেএমবিসহ অন্যান্য জঙ্গি সংগঠনের কার্যক্রম কিছুটা নিয়ন্ত্রণ করা গেলেও দমন করা যাচ্ছে না হিযবুত তাহ্রীরের জঙ্গি কার্যক্রম।

ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দলে বিভক্ত হয়ে তারা সাংগঠনিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। কখনো কখনো তারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের চোখে ধুলা দিয়ে ঝটিকা মিছিল করছে। এ ছাড়া তাদের সরকারবিরোধী লিফলেট বিতরণ ও পোস্টার লাগানোর কাজ চলছে পুরোদমে। গোয়েন্দাদের সন্দেহের বাইরে থেকে তারা বিভিন্ন ছাত্রাবাস ও মেসে গিয়ে নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনাও সারছে। গোয়েন্দাদের মতে, সরকারি-আধাসরকারি এবং বেসরকারি এমন কোনো প্রতিষ্ঠান নেই যেখানে হিযবুত তাহ্‌রীরের কর্মী বা সমর্থক নেই।

২০০১ সালে বাংলাদেশে আত্মপ্রকাশের পর থেকে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে 'কুফরি' আখ্যায়িত করে 'খিলাফত রাষ্ট্র' প্রতিষ্ঠার আওয়াজ তোলে হিযবুত তাহ্রীর। পরে সরকার ২০০৯ সালের ২২ অক্টোবর হিযবুত তাহ্‌রীরকে নিষিদ্ধ করে। সূত্রমতে, চিহ্নিত আস্তানার পাশাপাশি হিযবুত কর্মীরা সামাজিক ওয়েবসাইটগুলো (ফেসবুক, টুইটার, স্কাইপ, গুগুল, ইয়াহু) ব্যবহার করে তাদের সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করছে। তারা টার্গেট করেছে বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া প্রভাবশালী রাজনৈতিক পরিবারের সন্তানদের। মহিলা সদস্যদের দলে ভেড়াতে হিযবুত তাহ্‌রীর গঠন করেছে ৫০ সদস্যের বিশেষ মহিলা ইউনিট।

জানা গেছে, হিযবুতের বিষয়টি র‌্যাব অনেক গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে। নিষিদ্ধ হওয়ার পরও এই জঙ্গি সংগঠন র্যাব ও পুলিশকে চ্যালেঞ্জ করে রাজধানীতে মহাসমাবেশ করার ঘোষণা দিয়ে পোস্টার ছাপিয়েছিল। আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আল-কায়েদার সঙ্গে হিযবুতের সম্পর্ক আছে বলেও আলামত পাওয়া গেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন হিযুবত তাহ্রীরসহ জঙ্গিবিরোধী অভিযান জোরদারে সতর্ক দৃষ্টি রেখে চলেছে বলে জানিয়েছেন একাধিক সরকারি সংস্থার কর্মকর্তারা।

এদিকে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সামনে রেখে সশস্ত্র প্রস্তুতি নিয়ে মাঠে নামে ছাত্রশিবির।

এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে তারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের ওপর আক্রমণ চালিয়েছে। হত্যা করেছে অনেককেই। জামায়াত-শিবিরের সহিংসতার ঘটনার তদন্তে এ ধরনের তথ্য পেয়েছে গোয়েন্দা সংস্থা। গোয়েন্দা সংস্থার তদন্তে জানা গেছে, নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনগুলোর আত্দগোপনে থাকা জঙ্গিদের কাছে আছে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদের মজুদ। শিবিরের কয়েক হাজার ক্যাডারকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে জঙ্গিরা।

যুদ্ধাপরাধের বিচার শুরুর পর থেকে দুই বছর ধরে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী তারা প্রশিক্ষণ গ্রহণ, অস্ত্র ও গোলাবারুদ মজুদ করছে। তারা এসব অস্ত্র ও গোলাবারুদ দিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর একের পর এক আক্রমণ করে যাচ্ছে। গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যানুযায়ী রাজশাহী, চট্টগ্রাম, বান্দরবান, সিলেট এলাকার দুর্গম পাহাড়ের গহিন অরণ্যে ক্ষুদ্র আগ্নেয়াস্ত্র, গ্রেনেড-বোমা ও বিস্ফোরকদ্রব্য দিয়ে যৌথ মহড়ায় অংশ নিয়েছে শিবিরের ক্যাডার ও জঙ্গিরা। আটক যুদ্ধাপরাধীদের মুক্তির দাবিতে ও যুদ্ধাপরাধের বিচারে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল বাতিলের দাবিতে শিবির পুলিশের ওপর হামলা, পুলিশের গাড়িসহ যানবাহনে আগুন, ভাঙচুর, নৈরাজ্য ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে আসছে।

 

 



সোর্স: http://www.bd-pratidin.com/

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.