আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হার্ড ডিস্ক মেইনটেনেন্স - পর্ব ৩

~ ভাষা হোক উন্মুক্ত ~
আগের পর্বঃ হার্ড ডিস্ক মেইনটেনেন্সে - পর্ব ২ প্রতিবার পিসি চালু হবার পর হার্ড ডিস্কে নতুন নতুন ফাইল তৈরী হয় আর পিসিতে থাকা ফাইলগুলোতে কিছু পরিবর্তন আসে। সে কারনে কোন কোন পুরানো ফাইলের আকার বেড়ে যায়, তখন কম্পিউটার সেই ফাইলটির বাড়তি অংশটুকু হার্ড ডিস্কের ফাঁকা যায়গায় লিখে রাখে। লিখতে গিয়ে পাতা শেষ হয়ে গেলে আমরা যেমন পরের পাতায় চলে যাই, ব্যাপারটা ঠিক তেমনই। সে কারনে পরের বার পিসি সেই বড় হয়ে যাওয়া ফাইলটা নিয়ে কাজ করতে গেলে এর বাকি অংশ গুলো খুঁজতে বাড়তি সময় ব্যায় করে, ফলাফল - আগের তুলনায় পিসি স্লো হয়ে যায় একটু। এভাবে একটু একটু করে স্লো হতে হতে এক সময় মনে হয় পিসি অনেকটাই স্লো হয়ে গেছে।

এই সমস্যা থেকে মুক্তির জন্য ডিস্ক ডিফ্রাগমেন্ট টুলটার আগমন। ডিফ্রাগমেন্টের সময় কম্পিউটার ওই ফাইলটার বাড়তি টুকরো গুলো খুজে এনে আগের ফাইলের সাথে জোড়া দিয়ে দেয়, তখন কম্পিউটারকে এক একটা ফাইলের ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা টুকরা গুলো হার্ড ডিস্কের আনাচে কানাচে খুজে বেড়াতে হয়না, ফলে সময় বাঁচে। কম্পিউটার আবার আগের গতী ফিরে পায়। ডিস্ক ডিফ্রাগমেন্ট টুল ব্যাবহারঃ ১) ডেস্কটপ অথবা অল প্রোগ্রামস থেকে মাই কম্পিউটারে ক্লিক করতে হবে। তখন যে উইন্ডোটি আসবে তা অনেকটা নীচের ছবিটির মত।

আপনার হার্ড ডিস্কে পার্টিশন বেশি হলে C ড্রাইভের পর D,E,F ... এভাবে আরও অনেক ড্রাইভ দেখাবে। কিন্তু আমরা শুধু C ড্রাইভটি নিয়ে কাজ করবো। ২) C ড্রাইভে রাইট ক্লিক করলে যে মেনুটি আসবে তার সব চাইতে নীচে থাকবে Properties. ওখানে ক্লিক করুন, নীচের ছবির মত একটি উইন্ডো আসবে। ৩) General ট্যাবের পাশের ট্যাবটি হচ্ছে Tools ট্যাব, ওখানে ক্লিক করে Defragment Now বাটনে ক্লিক করুন। ৪) নীচের ছবির মত একটু উইন্ডো আসবে, সেখান থেকে Analyse বা Defragment বাটনে ক্লিক করুন, C ড্রাইভ কত খানি ফ্র্যাগমেন্টেড সেটা দেখাবে, আর কম্পিউটার নিজে থেকেই জানিয়ে দেবে যে ড্রাইভটি ডিফ্র্যাগমেন্ট করতে হবে না কি।

৫) Defragmet বাটনে ক্লিক করুন, নীচের ছবির মত উইন্ডো দেখতে পাবেন। এখানে উপরে নীচে দুটি ছবিতে লাল, সবুজ ও নীল রঙ দিয়ে দেখানো থাকবে হার্ড ডিস্কের বর্তমান ও ডিফ্র্যাগমেন্টের পরের অবস্থা। লাল রঙের দাগ গুলো হচ্ছে ফ্র্যাগমেন্টেড ফাইল, মানে একটি ফাইলের ভাঙ্গা অংশ। ডিফ্র্যাগমেন্ট শেষ হলে এই লাল দাগ গুলো অনেক কমে যাবে। বেশীর ভাগই নীল হয়ে যাবে, অল্প কিছু লাল থাকতেও পারে, ওতে কোন সমস্যা নেই।

৬) প্রথম বার ডিফ্র্যাগমেন্ট করতে ঘন্টা খানেক সময় লাগতে পারে। ডিফ্র্যাগমেন্ট শেষ হলে পিসি রিষ্টার্ট করুন। দেখবেন আগের চাইতে ভাল স্পিড পাচ্ছেন, প্রোগ্রাম দ্রুত লোড হচ্ছে। দুটি প্রয়োজনীয় সফটওয়ারঃ ইউনি-ব্লু স্পিড আপ মাই পিসিঃ কম্পিউটারের বেসিক মেইনটেনেন্স টুল গুলোর মধ্যে এই টুলটি আমার পছন্দ। এই সফটওয়ারটি এক ক্লিকেই আপনার পিসির অনেক অপ্রয়োজনীয় ফাইল মুছে হার্ড ডিস্ককে পরিচ্ছন্য রাখবে।

সফটওয়ারটি ইন্সটল করে Start Scan বাটনে ক্লিক করুন, নিজে থেকেই সে অপ্রয়োজনীয় ফাইল খুজে বের করবে। খুজে পাবার পর নীচের উইন্ডোটি দেখাবে। এই উইন্ডোর নীচের ডানদিকে Optimise all বাটনে ক্লিক করুন। সাবধানতাঃ যারা ইয়াহু চ্যাটলগ সেইভ করেন, তারা ইয়াহু ফোল্ডার থেকে আপনার প্রোফাইলটি অন্য যায়গায় কপি করে সেইভ করে রাখুন, নতুবা এই সফটওয়ার সে গুলো ডিলিট করে দেবে। ইউনি-ব্লু রেজিস্ট্রি বুষ্টার ইউনি-ব্লু'র আরও একটি দরকারী সফটওয়ার।

কম্পিউটারের রেজিস্ট্রি হচ্ছে বই এর সূচিপত্রের মত একটি জিনিস। কম্পিউটারের কোন ফাইল কোথায় আছে, সেটা রেজিস্ট্রিতে লেখা থাকে। যেহেতু কম্পিউটার প্রতিনিয়ত নতুন নতুন ফাইল তৈরী করে, তাই রেজিস্ট্রিতে নতুন নতুন এন্ট্রি তৈরী হয়, কিন্তু সেই ফাইলগুলো ডিলিট বা মুভ করলেও কিছু কিছু এন্ট্রি থেকে যায়, ফলে রেজিস্ট্রিতে থাকা এন্ট্রির সংখ্যা বাড়তেই থাকে। আর কপিউটার চলার সময় সেই এন্ট্রি গুলো ধরে ফাইল খুজতে থাকে, কোন ফাইল খুজে না পেলে আবার গোটা রেজিস্ট্রি খুজে দেখে সেই ফাইলের নতুন লোকেশন। কাজেই সময় নষ্ট হয়, পিসি স্লো হয়ে যায়।

রেজিস্ট্রি বুষ্টার সেই অদরকারী ও ভাঙ্গা এনট্রিগুলোকে সারিয়ে তুলে পিসিকে স্পিডি করে দেয়। সফটওয়ারটি ইন্সটলের পর Scan Now বাটনে ক্লিক করুন, সে ক্ষতিগ্রস্থ রেজিস্ট্রি এনট্রি গুলো খুজে বের করবে এবং দেখাবে ঠিক কতগুলো এন্ট্রি সে খুজে পেয়েছে। এখন Clean Registry বাটনে ক্লিক করুন, রেজিস্ট্রি ব্যাক আপ করার অপশন দেবে, অবস্যই ব্যাক আপ করতে বলবেন। তারপর কিছু সময় আপনার পিসি হ্যাং করার মত হবে, ঘাবড়াবার কিছু নেই, ব্যাক আপ শেষ হলে সফটওয়ারটি রেজিস্ট্রি ইরোর গুলো ফিক্স করবে। শেষ হলে রিস্টার্ট করতে চাইবে, রিস্টার্ট হলে পিসির স্পীডের পরিবর্তনটুকু আপনি নিজেই অনুভব করতে পারবেন।

============= ============= ============= মনে রাখবেন, সফটওয়ার দুটি ইনস্টল করার পর সিরিয়াল নাম্বার দিয়ে রেজিস্ট্রি না করে নিলে কোন ইরোর ফিক্স করবেনা। সফটওয়ার দুটি একটি জিপ ফাইলে (প্রয়োজনীয় সিরিয়াল সহ) ডাইনলোড করুন এখান থেকে ।
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.