রবিনের আফিস আমার থেকে ১০ মিনিট দূরে। প্রায়ই আমরা একসাথে লাঞ্চে যাই। এই শহরে দু’বছর হল আছি, রবিনের সাথে এখানে আসার পরে পরিচয়। একই ব্যাচের ইন্টারমিডিয়েট হওয়ায় আমরা তুই-তোকারি করে কথা বলি। কিছু মানুষ আছে যাদের সাথে দ্রুত বন্ধুত্ব হয়ে যায়, রবিন তাদের মত।
গত দুই সপ্তাহ ধরে ওর সাথে দেখা হয় না, কারণ লাঞ্চ টাইমে কিছু না কিছু কাজ থাকে। খুচরা কাজ। টয়লেট পেপার কেনা, গাড়ির অয়েল চেঞ্জ ইত্যাদি।
আজকে তেমন কিছু ছিল না, রবিনকে ফোন দিলাম, চল একসাথে লাঞ্চ করি।
আমরা লাঞ্চ সেরে বিড়ি খাচ্ছিলাম পার্কিংলটে।
তখন উঠল ধর্ম নিয়ে কথা। ও ধর্মে বিশ্বাস করে, আমার মত নাফরমান না। মাঝে মাঝে রোজা রাখে। দিনে ২/৩ বেলা নামাজ পড়ে। মদ্যপান ছেড়ে দিয়েছে ৫ বছর আগে।
সামারটাইমে রোজা একেকদিন ১৫/১৬ ঘন্টা, আতিরিক্ত লম্বা হয়ে যায়, এইটা কিভাবে কি বদলানো উচিত তাই নিয়ে আলাপ। রবিনের যুক্তি শীতে তো ৮/১০ ঘন্টা রোজা হয়। লম্বা-খাটোয় কাটাকাটি।
একে একে আলাপের বিষয়বস্তু পরিবর্তন হতে থাকল। লাঞ্চ টাইম যখন প্রায় শেষ, তখন রবিন বলছিল ‘তুই তো কিছুই মানিস না।
চাঁদ যে দুইভাগ, এইটা তো মানিস, না কি?’
আমি একটু দমে গেলাম। জিজ্ঞাসা করলাম চাঁদ দুইভাগ এই তথ্য ও কোথায় পেল।
‘মাইকেল কলিন্স, নিল আর্মস্ট্রং এদের নাম শুনছস?’
-হ
‘এরা চাঁন্দে গিয়া দেখল চাঁন দুইভাগ। কানে আসল আজানের শব্দ। সাথে সাথে কলমা পইড়া মুসলমান হইয়া গেল’
-এই ঘটনা তুই কইত্থেকা শুনলি?
‘এইটা তো সবাই জানে।
তারা নিজের মুখে বলছে। ’
রবিন বুয়েট পাশ, যুক্তরাষ্ট্রে মাস্টার্স করা শিক্ষিত একটা ছেলে। ও গাড়ি স্টার্ট দিয়ে পার্কিংলট থেকে বের হয়ে যেতে যেতে আমাকে বলল, 'গুগল কইরা দেখ, সব জানতে পারবি। '
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।