আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পঁচিশ ঘন্টা পঞ্চাশ মিনিট

If you donot see bangla, download: http://www.omicronlab.com/avro-keyboard-download.html

ডিপার্টমেন্টের করিডোর ধরে হাঁটতে বেশ ভালোই লাগে। বিভিন্ন জিনিসপত্র দিয়ে করিডোরটাকে ছোটখাট একটা মিউজিয়ামের মত করে সাজিয়ে রাখা হয়েছে। উল্লেখযোগ্য জিনিসপত্রের মাঝে আছে- ছাত্রছাত্রীদের সম্প্রতি প্রকাশিত গবেষণাপত্রের প্রিন্টআউট, প্রফেসরদের লেখা বই-পুস্তকের কপি, ডিপার্টমেন্টের বিভিন্ন সালে বিভিন্ন অবদানের জন্য প্রাপ্ত ক্রেস্ট আর মেডেল, বহু পুরাতন কিছু কম্পিউটারের যন্ত্রপাতি ইত্যাদি ইত্যাদি। এছাড়াও দু’পাশের দেয়ালে টাঙ্গানো রয়েছে রঙ-বেরঙের পোস্টার। কোনটায় দেখা যাচ্ছে প্রফেসরদের নানান কীর্তির বিবরণ, কোনটায় আছে ছাত্রদের গবেষণামূলক প্রজেক্টের গুনকীর্তন, কোনটায় মজার কোন সংবাদ, কোনটায় ঝুলছে গ্রাজুয়েট ছাত্রদের ছবিসহ বর্ণনা।

প্রতিদিন এসব দেখতে দেখতে প্রায় মুখস্থের মত হয়ে গেছে, তারপরও দেখতে ভালোই লাগে। বিভিন্ন দেশ থেকে আগত গ্রাজুয়েটদের পোস্টারগুলো সবচেয়ে মজার। ব্যাচ অনুসারে একেকটি পোস্টারে রয়েছে সেই বছর আগত গ্রাজুয়েট ছাত্রছাত্রীদের একটি করে ফটোজেনিক ছবি আর তার নিচে প্রত্যেকের নিজের সম্বন্ধে ছোট্ট একটি বর্ণনা। এধরনের বর্ণনাগুলোকে বলা হয় ‘ব্লার্ব’। ব্লার্বে কেউ লিখেছে সিরিয়াস কথাবার্তা, কেউ লিখেছে মজার কিছু, আর কারো কারোটা একেবারেই সাদামাটা।

যেমন- পঁয়ত্রিশ বছর বয়েসী ও তিন সন্তানের জনক ড্যারেক তার ব্লার্বে লিখেছে- বড় হয়ে সে দেশ সেবা করতে চায়। দ্বিতীয় বর্ষের অন্যতম সিরিয়াস ছাত্র জোয়েল লিখেছে- অবসরে তার পছন্দ কেক-বিস্কিট বানানো। চান্দিছিলা চাইনিজ, চ্যাং লিখেছে- সে নাকি বলরুম ড্যান্স পছন্দ করে! ব্লার্বগুলো পড়ে আর ছবি দেখে দেখেই ডিপার্টমেন্টের সবার সাথে পরিচিত হয়ে যাওয়া যায় বলে এটাকে আমার কাছে বেশ ভালো সিস্টেম মনে হয়েছে। যাদেরকে চিনি, তাদেরকে তো চিনিই- আর যাদের চিনিনা, তাদের কথাও এখান থেকে জানা যায়। মাঝে মাঝেই আমি এসব ছবির মাঝে গুনে দেখি ডিপার্টমেন্টের কতজন ছাত্রের সাথে আমার পরিচয় হয়েছে এ পর্যন্ত।

যেমন, ২০০৮ সালের সবার সাথেই পরিচয় আছে কারণ এটা আমার নিজের ব্যাচ। ২০০৭ সালের পঁচিশ জনের মাঝে আঠারো জনকে কখনও না কখনও ডিপার্টমেন্টে দেখেছি। ২০০৬ সালের মোটামুটি অর্ধেককে চিনি। ২০০৫ সালের ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে চেনামুখ সর্বসাকুল্যে ৬ জন! প্রায় একবছর হতে চলেছে, অথচ আমি আমার ডিপার্টমেন্টের এতগুলো গ্রাজুয়েট স্টুডেন্টকে একটি বারের জন্যও দেখিনি, ব্যাপারটা আমার জন্য পীড়াদায়ক। কিন্তু এটা কী করে সম্ভব? পোস্টারে এতগুলো হাস্যজ্জ্বল মুখ, অথচ বাস্তবে এদের কখনও ডিপার্টমেন্টে দেখা যায়না।

শুধুই ছবি হয়ে ঝুলতে থাকা এসব মেধাবী মুখ তাহলে গেল কোথায়? পিএইচডি কথাটি ‘ডক্টর অফ ফিলোসোফির’ সংক্ষিপ্ত রূপ। এটাকে সংক্ষেপ করার পর কেন উল্টো করা হল তা আমার জানা নেই। যতটুকু জানি পড়াশোনা করে অর্জন করা যেতে পারে এধরনের ডিগ্রির মাঝে এটাই সবার শেষ ডিগ্রি। এরপর আর কোন পড়ালেখা করতে হবেনা, আপাতত এটাই আমার কাছে পিএইচডি করার নেপথ্যে মূল মোটিভেশন। আমেরিকা আসার আগে আমার ধারণা ছিল দিন-রাত ল্যাবে শুয়ে-বসে বিভিন্ন এক্সপেরিমেন্ট করে যুগান্তকারী কোনকিছু আবিষ্কার করাটাই বোধহয় পিএইচডি।

এখানে আসার পর প্রতিদিনই ধারণা একটু একটু করে পাল্টাচ্ছে। শুরুর দিকের দু-তিন সেমিস্টারেরে সাথে বুয়েটের রেগুলার সেমিস্টারগুলোর তেমন কোন পার্থক্য পাইনি। ক্লাস, প্রজেক্ট, প্রেজেন্টেশন, হোমওয়ার্ক, ফাইনাল সবই চলেছে রুটিনমত। এরসাথে শুধুমাত্র যোগ হয়েছে নিজের প্রফেসরের সাথে কিছু রিসার্চ মিটিং আর বিয়োগ হয়েছে পিএল, চোথা সংগ্রহ, পরীক্ষা পেছানোর আন্দোলন ইত্যাদি। ভেবেছিলাম এভাবেই চার-পাঁচ বছর চলবে, অতঃপর একসময় একটা ডক্টরেট ডিগ্রি বগলদাবা করে ঢাকার প্লেনে বাড়ি ফিরে আসব।

কিন্তু সাদামাটা এই কাহিনীতে টুইস্ট এসে গেল যখন জানতে পারলাম ‘কোয়াল’ নামধারী এক বিভিষিকার কথা। আমেরিকায় পিএইচডি স্টুডেন্টদের এ্যাডমিশন হয় আন্ডারগ্র্যাডের রেজাল্ট, টোফেল-জিআরই, শিক্ষকদের রেকমেন্ডেশন লেটার এসবের ভিত্তিতে। একবার অ্যাডমিশন হয়ে গেলেই কেল্লাফতে- অনেকের মত আমারও এই একই ধারণা ছিল শুরুতে। কিন্তু আসার পর থেকেই শুনতে পাচ্ছিলাম ইউভিএ’র সর্বনিকৃষ্ট কোয়ালিফায়ার (সংক্ষেপে ‘কোয়াল’) এক্সামের কথা। নানান ভুক্তভোগী নানান ভাষায় এটার যত দূর্ণাম করা শুরু করল তাতে একদিন অতিষ্ট হয়ে ঠিক করলাম আমার তখনকার টেম্পরারি একাডেমিক এ্যাডভাইজার, প্রফেসর হোয়াইটহাউসের সাথে দেখা করে বিষয়টা পরিষ্কার হওয়া দরকার।

এ্যাপয়েন্টমেন্ট নিয়ে তার সাথে দেখা করতে গেলাম কোন এক বিকেল বেলা। চ্যাংড়া মত এই আধা-চায়নীজ, আধা-আমেরিকান প্রফেসরকে দেখে যে কেউ আন্ডারগ্র্যাডের কোন ছাত্র ভাববে। আমি অবশ্য আমার কল্পনাশক্তির সদ্ব্যবহার করে আবিষ্কার করলাম, একে একটা লাল হাওয়াই শার্ট আর একটা প্রিন্টের লুঙ্গি পরিয়ে দিলে ঠিক ঠিক একটা রঙ-মিস্ত্রির মত মনে হবে। কুশল বিনিময় শেষে নানান কথাবার্তা বলতে বলতে এক পর্যায়ে জানতে চাইলাম, কোয়ালিফায়ারের ঘটনাটা আসলে কী? রঙমিস্ত্রি যা বলল, তার সারমর্ম এই যে, এটি এমন এক মহাপরীক্ষা, যা সকল পিএইচডি স্টুডেন্টকেই নিজ যোগ্যতা প্রমাণ করতে বাধ্যতামূলকভাবে পাস করতে হবে। যে পারবেনা তাকে যথাযোগ্য সম্মান দেখিয়ে চিরতরে বিদেয় করে দেয়া হবে।

পরীক্ষায় কম্পিউটার সায়েন্সের পাঁচটি মূল বিষয়ের ওপর পাঁচ ঘন্টার পাঁচটি রিটেন এক্সাম নেয়া হবে। কোত্থেকে কোয়েশ্চেন করা হবে সেটা একমাত্র আল্লাহ মালুম। একটা রিডিং লিস্ট অবশ্য আছে, যেটা দেখে মনে হলো, যে রেটে আমি পড়াশোনা করি তাতে পুরোটা একবার রিডিং পড়ে শেষ করতেও আমার পাঁচ বছরের ভিসা শেষ হয়ে যাবে। মৃদু টেনশন নিয়ে তাকে প্রশ্ন করলাম, এসব পরীক্ষার জন্য সর্বোচ্চ কয়বার চান্স পাওয়া যায়? হোয়াইটহাউস তার সাদা দুইপাটি দাঁত বের করে বলল, থার্ডইয়ার হচ্ছে অফিসিয়াল লিমিট, কিন্তু এক-দুইবার দিয়ে যদি কেউ পাস না করতে পারে, তাহলে তাকে আজীবন সুযোগ দিলেও সে আসলে পাস করতে পারবেনা। বছরে মাত্র দুবার এই পরীক্ষা নেয়া হয়।

কেউ যদি বাইচান্স পাঁচটি রিটেনেই পাস করে যায়, তবে তাকে পাঁচজন প্রফেসরের সামনে পঞ্চাশ মিনিটের একটি ভাইভায় অংশ নিতে দেয়া হবে। সেটাতে যদি সব প্রফেসর আলাদা আলাদা ভাবে মত দেন যে, ছাত্রটি পিএইচডি করার যোগ্য, তখনই কেবলমাত্র তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে পিএইচডি ছাত্র হিসেবে নথিভুক্ত করা হবে, অন্যথায় সসম্মানে বিদায়। নিশ্বাস বন্ধ করে তার কথা শুনছিলাম। কথাগুলো শোনা শেষে বুঝতে পারছিলাম না এখন কি আমার নিশ্বাস ছাড়ার কথা, নাকি নিশ্বাস নেবার কথা? কোনটা রেখে কোনটা করা উচিত কিছুই ঠাওর করতে পারছি না। পাঁচ ঘন্টার পাঁচটা রিটেন পরীক্ষা, তাতে হয় পঁচিশ ঘন্টা, আর এর সাথে পঞ্চাশ মিনিটের ভাইভা, সবমিলিয়ে পঁচিশ ঘন্টা পঞ্চাশ মিনিট।

বুঝতে পারলাম, এই পঁচিশ ঘন্টা পঞ্চাশ মিনিট পার না করা পর্যন্ত যতবার নিশ্বাসই নিই না কেন, একবারও প্রাণ ভরবেনা। মহাচিন্তায় পড়ে গেলাম ‘কোয়াল’ নিয়ে। বাংলাদেশ থেকে আমি কোন বই-পুস্তক আনিনি। তেইশ কেজি ওজনের দুটো লাগেজ ব্যাগই আমার মা হাড়ি-পাতিল, মসলা-আঁচার, কম্বল-কোলবালিশ এসব দিয়ে ভরিয়ে দিয়েছিলেন। বই নেবার কোন উপায় ছিলনা।

আমেরিকায় নীলক্ষেতও নেই। অ্যামাজন থেকে অর্ডার করলে বইপিছু প্রায় পঞ্চাশ ডলার (সাড়ে তিনহাজার টাকা) খরচ পড়বে। এত টাকা খরচ করে বই কিনে পরীক্ষায় ফেল করলে পুরোটাই লস। রিডিংলিস্টের প্রতিটি বই তাই বিভিন্নভাবে জোগাড় করতে হলো। কোনটা লাইব্রেরি থেকে, কোনটা সিনিয়র কারো থেকে, কোনটা নেট থেকে সফটকপি নামিয়ে প্রিন্ট, এভাবে নানান পন্থায় কিছু দিনের মাঝেই পড়ার টেবিল বই দিয়ে বোঝাই করে ফেললাম।

সবগুলো বই মিলিয়ে সর্বমোট কত পৃষ্ঠা পড়তে হবে তার একটা হিসেব করে দেখলাম সংখ্যাটি আট-হাজারের সামান্য কিছু কম-বেশি হবে। আমি খুব ধীর গতির পাঠক। পড়াশোনার বই একপৃষ্ঠা পড়তে আমার প্রায় মিনিট দশেকের মত লাগে। এছাড়া একনাগাড়ে একঘন্টা পড়াশোনা করা আমার পক্ষে প্রায় অসম্ভব ব্যাপার। সুবিশাল এই সিলেবাস সুন্দরমত পড়া শেষ করে আমি একদিন পরীক্ষার হলে গিয়ে পরীক্ষা দিচ্ছি- এই দৃশ্য খুব একটা বাস্তব সম্মত বলে মনে হলনা।

ভেবেচিন্তে দুটো সমাধান বের করলাম। এক, মানসম্মান নিয়ে বাংলাদেশ পলায়ন। কিন্তু এটার ফলাফল শুভ বলে মনে হলনা। দেশে ফিরে কী করব সেটা একটা দুশ্চিন্তার বিষয়। ভাবতে বসলেই ঘুরে ফিরে কেন যেন বার বার মনে হতে লাগল, লাল একটা হাওয়াই শার্ট আর একটা প্রিন্টের লুঙ্গি পড়ে আমি ঢাকার হাইরাইজ বিল্ডিংগুলো মনের সুখে রঙ করছি।

দ্বিতীয় সমাধান হলো, অনেকের মত আমেরিকাতেই কোন একটা চাকরি-বাকরি যোগাড় করে দিনতিপাত করা। আর কেউ যদি জিজ্ঞাসা করে তবে বলল, ‘পিএইচডি করে আসলে ভাই কোন লাভ নেই। পিএইচডিদের চাইতে আজকাল মাস্টার্সেরই জব মার্কেটে ডিমান্ড বেশি। পাঁচবছর সময় নষ্ট করে কি লাভ বলেন? এরচেয়ে পাঁচ বছরে আমি অনেক টাকা ইনকাম করে ফেলতে পারব। ‘ এই সমাধানটা খারাপ না।

লোকজন এটাকে অনায়াসে মেনে নেবে। কিন্তু সমস্যা হলো নিজেকে নিয়ে। নিজের কাছে ছোট হয়ে, বড় হবার স্বপ্ন দেখাটা সত্যিই হাস্যকর। ‘বিনা যুদ্ধে নাহি দেব সূচ্যগ্র মেদিনী’- কথাটা বারবার মনের মধ্যে খোঁচাতে লাগলো। অনেক খোঁচা খেয়েও ‘সূচ্যগ্র মেদিনী’ জিনিসটা কী ছিল সেটা কিছুতেই মনে করতে পারলাম না।

এই মেমরি নিয়ে কী করে পরীক্ষা দেব কিছুই বুঝে উঠতে পারছিলাম না। মাথা-ঠান্ডা করে প্ল্যান মত কাজ করতে হবে। ‘জো জিতা ওহি সিকান্দার’ মুভিতে আমির খান যেভাবে গানের তালে তালে ব্যায়াম-ট্যায়াম করে সাইকেল রেসের জন্য প্রস্তুত হয়েছিল, সে রকম একটা প্ল্যান করতে হবে। ঠিক করলাম প্রতিদিন ভোর ছটায় উঠে পড়াশোনা শুরু করবো। এর জন্য প্রথমে রাত তিনটায় ঘুমোতে যাবার অভ্যাসটা বদলানো শুরু করলাম।

ফলশ্রূতিতে যা হল, সপ্তাহ খানেক পর আবিষ্কার করলাম, প্রতিদিন রাত ন’টায় ঘুমোতে যাচ্ছি আর উঠছি সেই দুপুর বারোটায়। এরপর আবার খাওয়াদাওয়া ও দুপুরের ঘুম শেষে সন্ধ্যায় মাত্র এক ঘন্টা পড়াশোনার জন্য অবশিষ্ট রইল। সেই এক ঘন্টা সময়ে কোন সাবজেক্ট পড়ব, মিনিটে কত পৃষ্ঠা পড়ব, এসব হিসেব করতে করতে আর বইয়ের পৃষ্ঠা উল্টোতে উল্টোতেই চলে যেতে লাগল। বোঝা গেল, এই প্ল্যানে কাজ হবেনা। নতুন করে প্ল্যান করা হলো।

এবারে ঠিক করলাম বইয়ের চ্যাপ্টারগুলো পুরোটা না পড়ে প্রত্যেক চ্যাপ্টারের প্রথম দু-তিনটি সেকশন পড়ব। এ পদ্ধতি কিছুদিন ভালোমত চলল। মোটামুটি একটা কনফিডেন্স এসে গেল যে, আর্কিটেকচার আর থিওরি এই দুটো সাবজেক্টে পাস হচ্ছেই। কনফিডেন্স দৃঢ় করতে বিগত বছরের কোয়ালের প্রশ্নপত্র যোগাড় করলাম। ডিপার্টমেন্টে বিগত বছরগুলোর প্রশ্নের সফটপকপি আর্কাইভ করা আছে, একথা শুনেছিলাম।

একটা ইমেইল করে আমার প্রয়োজন জানাতেই, দশ মিনিটের মাঝে আমাকে শত শত প্রশ্নপত্র পাঠিয়ে দিল ইউনিভার্সিটি অফিস থেকে। ভ্রু-কুচকে, সময় নিয়ে বিগত বছরের প্রশ্নপত্রগুলো দেখলাম। কোচকানো ভ্রু আর সোজা করতে পারলাম না। কোন বছরেরই কোন প্রশ্নের উত্তর আমার জানা আছে বলে মনে হলনা। প্রশ্নগুলো এমন যে, এগুলো কেউ বই পড়ে, শিখে, প্র্যাকটিস করে এসে উত্তর করতে পারবেনা।

সবগুলোই চিন্তামূলক ও কঠিন প্যাঁচ-মারা প্রশ্ন। কিছু কিছু প্রশ্নের আদৌ সমাধান আছে কিনা সেটাও আমার সন্দেহ হতে লাগলো। সত্যি বলতে কী, প্রশ্ন গুলো দেখে ভয় পাবার বদলে আমি আনন্দ পেতে শুরু করলাম। কারণ, আমি বুঝে ফেলেছি, বই পড়ে এখানে এক বিন্দুও লাভ নেই। কারো ভেতর যদি ‘কম্পিউটার সায়েন্স’ বিষয়টি সত্যি সত্যি থাকে, তবেই একমাত্র সে এই পরীক্ষায় পাস করবে।

বুয়েটের চার বছরের কোর্স প্রায় ছয় বছর সময় নিয়ে, ধীরে ধীরে, মন দিয়ে পড়েছি। এত দীর্ঘ সময়ে যদি অল্প-একটু কম্পুটার সায়েন্স, কোন এক অসাবধানতার মূহুর্তেও মাথার ভেতর ঢুকে থাকে, তবেই এখন রক্ষে। (বাকিটা নেক্সট উইক)

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।