আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রাজধানীর ইফতার বাজারে দ্রব্যমূল্যের প্রভাব : তবুও ক্রেতাদের ভিড়

zahidmedia@gmail.com

পাল্টে গেছে ঢাকার ইফতারের চিত্র। ঐতিহ্যের মোড়ক ছাড়িয়ে ইফতারের পসরায় যুক্ত হয়েছে নতুন কিছু। পুরান ঢাকা থেকে নতুন ঢাকার রুচির যে তারতম্য, তা ইফতারের বৈচিত্র্য দেখলে সহজেই টের পাওয়া যায়। তবে দ্রব্যমূল্যের প্রভাব পড়েছে রাজধানীর ইফতারসামগ্রীর বাজারেও। ইফতারির সব ধরনের খাবারের দাম গতবারের চেয়ে বেড়েছে।

তবে দাম বাড়লেও ইফতারির দোকানগুলোয় ক্রেতাদের ভিড় কমেনি। রোববার রমজানের প্রথম দিনে ধানমন্ডি, গুলশান, পুরান ঢাকাসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার ইফতারসামগ্রীর বাজারে দুপুর থেকেই ক্রেতাদের ভিড় দেখা গেছে। অনেক বিক্রেতা ক্রেতাদের সঙ্গে ঠিকমতো কথা বলারই সময় পাচ্ছিল না। চকবাজারে যখন কাবাবের কড়াইয়ের চারপাশে ডামাডোল বাজে ঠিক তখন গুলশান, বনানী, ধানমন্ডি বা উত্তরায় ফাস্টফুডের দোকানে ক্রেতাদের দীর্ঘ লাইন। সেখানে সাজানো রয়েছে চিকেন ব্রোস্ট, চিকেন নাগেট, ফিস নাগেট, ফিসকাবারি, সাসলিক, হটডগ, পিজা, কাকলেট, কুবে বিভ, ফন্সাইড ফিস অ্যান্ড চিকেন, ভেজিটেবল রোল, চিকেন রোল, স্টিকি ফিঙ্গারের মতো ইফতারসামগ্রী।

পুরান ঢাকায় প্রতি ঘরে যখন নুরানির লাচ্ছি, পেস্তা, জাফতার আর গোলাপজামের শরবতের আয়োজন; তখন নতুন ঢাকার ফ্ল্যাট বাড়িতে চলে বোতলজাত পাইন অ্যাপেল, গ্রেপস, স্ট্রবেরি, ম্যাংগো জুস বা মিল্কশেকের চর্চা। সাধারণ মানুষ যেখানে ছোলা মুড়ি, পিঁয়াজু, বেগুনি, আলুরচপ দিয়ে ইফতার শুরু করে সেখানে নতুন ঢাকায় ইফতারের মেন্যুতে শোভা পায় স্ট্রবেরি, আপেল, মাল্টা, রাম্বুটানের মতো ফল বা কাস্টার্ড। যতই দিন যাচ্ছে ইফতারের চিত্র দ্রুত পাল্টে যাচ্ছে। দেশী খাদ্যের জায়গায় স্থান করে নিচ্ছে বিদেশী খাদ্য। ধানমন্ডির সাতমসজিদ সড়কের দুপাশের নামকরা রেস্তোরাঁগুলো এবারও বাহারি ইফতারের পসরা সাজিয়েছে।

মাংসের তৈরি খাবারের প্রাধান্য এ এলাকায় স্পষ্ট। দাম গত বছরের তুলনায় অনেক বেশি। অবশ্য ক্রেতার কমতি ছিল না কোনো দোকানেই। ক্যাফে ফোর বিক্রি করছে কিমা চপ, আলু চপ, শামী কাবাব, জালি কাবাব, চিকেন সমুচা, পনির সমুচা, চিকেন সাস্লিক, চিকেন ঝালফ্রাই, পরাটা, স্পেশাল বোম্বে জিলাপি, রেশমি জিলাপির মতো মুখরোচক অনেক খাবার। লায়লাতি নিয়ে এসেছে ২২ ধরনের মুখরোচক খাবার।

এর মধ্যে দইবড়া, লিভার সমুচা, দই বুন্দিয়া, ফালুদা, মিনি কাবাব, বিফ কোপতা, বিফ বল উলেলখযোগ্য। এছাড়া বিভিন্ন রেষ্টুরেন্টে চাকরি কাবাব, পনির পাকুরা, চিকেন উইংস, চিকেন ড্রাম স্টিক, লালশাক বল, ড্রাম স্টিক, মাটন কাবাব, নুড্ল্স, বিফ ভুনা, মেক্সিকান টাকো, গ্রিল চিকেন, প্রন পাঙ্গার, চিকেন সাফে, বেবি চিকেন, ললিপপ, খাসির আস্ত পা ভুনা ও কাবাব কড়াই, মুরগির আস্ত রোস্ট, হালিম, বুট, পেঁয়াজু কিনতে এখানে বিকেল থেকেই ক্রেতাদের ভিড় দেখা গেছে। গুলশান এলাকার ইফতার আয়োজনে রয়েছে আভিজাত্যের ছাপ। প্রচলিত আর ঐতিহ্যবাহী ইফতারের সঙ্গে আধুনিক ইফতার সামগ্রীর সমন্বয় এ এলাকার বাসিন্দাদের ইফতার আয়োজনে ভিন্নতা এনেছে। এখানকার ইফতারে ফাস্টফুডের জনপ্রিয়তা বাড়ছে বলে ব্যবসায়ীরা জানান।

গুলশানের বিভিন্ন নামীদামি রেস্তোরাঁ আর ইফতার সামগ্রী বিক্রির দোকানগুলোর সামনে বিকেল চারটা থেকেই গাড়ির লম্বা সারি চোখে পড়ে। রোববার গুলশানের পিৎজা হাট, কেএফসি, বিএফসি, অ্যারিসটোক্র‌্যাট, ইফিস, এঅ্যান্ডডবিলউ প্রভৃতি অভিজাত রেস্তোরাঁয় ইফতার করতে আসা মানুষের ভিড় ছিল লক্ষণীয়। এদিকে, অনেক নামকরা ইফতারি ব্যবসায়ী এবার ইফতারি বিক্রি করছেন না। অন্যান্যবারের মতো পথের পাশে, গলির মাথায় পসরা সাজিয়ে বসেনি ছোটোখাট অনেক উদ্যোক্তা। এর কারণ হিসেবে দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধগতির কথা উল্লেখ করেন সংশ্লিষ্টরা।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।