আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ব্রাদার্স ফার্নিচারর্স এর তথাকথিত ভ্রাতৃত্ব!!!



গত বছর দুয়েক আগে আমি ব্রাদার্স ফার্নিচার থেকে কাঠের একটি খাট এবং একটি ডাইনিং টেবিল কিনেছিলাম। কেনার সময় শোরুমের ম্যানেজার খুব খাতির করে বসিয়ে চা কফি খাইয়ে সমাদর করেছিলেন এবং বলেছিলেন যে আমি এই ফার্নিচার কিনে খুউব বুদ্ধিমানের (!!!)মত কাজ করেছি, কেন না তাদের তৈরি ফার্নিচার অনেক বেশি গুণগতমান সম্পন্ন এবং তারা দশ বছরের নিশ্চয়তা দিয়ে থাকেন। যা হোক সেই মহা গুণ সম্পন্ন আসবাবপত্রগুলো এখন আমার গলার কাটা হয়ে বিঁধছে। কেনার ৬ মাসের মাথায় একদিন কটমট আওয়াজে আমার আরামের ঘুম হারাম হয়ে গেল। মনে হল আমি হঠাৎ করেই পপাত ধরণীতল হয়ে গেলাম।

অনুসন্ধানে বুঝতে পারলাম খাটের হাসিয়া (পাটাতন) মাঝ হতে ফসকে খাট দুই পাশে সরে গেছে এবং পায়ের কাছের সাপোর্ট কাছা ভেঙ্গে গেছে। অনেক কষ্টে সেই দিন হাচর পাচর করে কোন মতে ঠেস দিয়ে রাত পার করলাম। সকালে তাদের দেয়া কাগজপত্র ঘেটে ফোন করে অভিযোগ জানাতেই তারা অনেক প্রশ্ন করে আমাকে ব্যাতি-ব্যাস্ত করে তুলল। কেন জানি মনে হল ফোন করাতেই তারা মহা বিরক্ত হয়েছেন। যা হোক যথাযথ উত্তর দিয়ে হাফ ছেড়ে বাঁচলাম।

তারা লোক পাঠানোর কথা দিয়ে রেখে দিলো। এর পর বহু দিন চলে গেল, বহু ফোন করা হল তাদের দেখা আর পেলাম না। যা হোক শেষে একদিন তাদের ডি.ও.এইচ.এস এর শোরুমে হাজির হয়ে চিৎকার চেঁচামেচি করতেই তারা লোক পাঠিয়ে কোন রকমে তা জোড়া-তালি দিয়ে রেখে গেল। গত কয়েকদিন আগে তাদের সেই মহান সার্ভিসের আমার আবার প্রয়োজন হলো। কেন না ১ম ক্রয়ের পর আমার ডাইনিং টেবিলের পাওনা বার্ণিশটুকু পাবার আশায় এবং আরো টুকটাক কিছু সার্ভিসের জন্য আমি ফোন করতেই তারা আমাকে জানিয়ে দিলো যে তারা আর সার্ভিস দিচ্ছেন না।

আমি দশ বছর সার্ভিস পিরিয়ডের কথা মনে করিয়ে দিতেই শোরুম ম্যানেজার আমাকে বললেন, ওটা নাকি ছিলো ঘুণে না ধরার ওয়ারেন্টি। নিজের স্মৃতির পাতা উল্টে পাল্টে দেখার চেষ্টা করলাম কোথাও ওই তথ্যটুকু ধারণ করা আছে নাকি; কিন্তু ওমন কিছু পেলাম না। যা হোক আবারো চেঁচামেচি করতেই তারা লোক পাঠিয়ে কোন রকমে একটি দাসারা গোছের সার্ভিস দিয়ে আমার কমেন্টস লিখে নিয়ে চলে গেল। জানি না আবার কবে উনাদের দেখা পাবো। তাদের পাঠানো লোকের কথামত আমি সেই মহান ম্যানেজার সাহেবকে আমার পূর্বের এবং বর্তমানের সমস্ত সমস্যার কথা জানাতেই উনি যতারীতি সেই গদবাঁধা কথা আমাকে শুনিয়ে দিলেন এবং মনে করিয়ে দিলেন যে তাদের লোক কাজ করলে পয়সা দিতে হবে।

পয়সাই যদি দিতে হয় তবে তো আমি নিজের মত লোক দিয়েই কাজ করাতে পারি, তাদের কাছে যাবার তো প্রয়োজনই নেই। এই কথাটা ওই মোটা মাথার ম্যানেজার সাহেবের মাথায় ঢুকেছে কিনা তাতে আমার সন্দেহ আছে। অনেক মন্দ কথা বললাম। আল্লাহ আমাকে মাফ করুন আর ব্রাদার্স ফার্নিচার কে সুমতি দান করুন যাতে তারা তাদের ব্যাবসায়িক সুনাম ও পণ্যের সঠিক মান রক্ষা করে ক্রেতা প্রিয়তা অর্জন করতে পারে। নির্ভরতা অর্জন না করলে অচিরেই তাদের অবস্হা হবে অটবির মত।

ছাড়ের পর ছাড় দিয়েও তারা স্টক ক্লিয়ার করতে পারছে না। আমি সবাই কে বলব, জেনে, বুঝে, দেখে ফার্নিচার কিনতে। চটকদার বিজ্ঞাপণ ও সুন্দর শোরুম দেখে যেন কেউ ফার্নিচার কিনবেন না। অন্ততঃ ব্রাদার্সের ফার্নিচার তো নয়ই। না হলে আমার মত চোখে আঙ্গুল দিয়ে কাঁদতে হবে।

খোদা হাফেজ, আল্লাহ ব্রাদার্স ফার্নিচার কে রক্ষা করুন!!!!!

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.