অতি দক্ষ মিথ্যুক না হলে সত্যবাদিতা উৎকৃষ্ট পন্থা
বাংলাদেশ দলের একজন খেলোয়ারকে বদলালে বাংলাদেশ আরও ভালো খেলতো, প্রতিভার হোগা মেরে যদি দায়িত্ববোধকে প্রাধান্য দেওয়া হতো তবে আশরাফুল বাংলাদেশ দলে কখনই সুযোগ পায় না, বিশেষত এই দলে।
নিজেকে অন্য রকম উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া মাশরাফি অনেক দিন ধরেই বাংলাদেশের সেরা খেলোয়ারদের একজন, এমন কি সে বাংলাদেশ দলের একজন অপরিহার্য খেলোয়ার, কিন্তু তার নিজেকে উজার করে দেওয়া খেলোয়ারী মানসিকতার অভাব আছে আশরাফুলের। নিজেকে দিন দিন পরিণত করে চলা মাশরাফি আজকেও চমৎকার বোলিং করেছে। বিশেষত এখন মাশরাফি, বাংলাদেশ দলের বোলিং আক্রমনের প্রথম সারির একজন, শরীরের জোরে নয় বরং বুদ্ধিদীপ্ত বোলিং করছে। প্রতিটা বলেই এখন তার ক্রিকেট বুদ্ধির প্রমাণ রাখছে।
শাহদাত প্রথম থেকেই আমার পছন্দের বোলার নয়, তার শরীরে জোর আছে, কিন্তু মাথায় বুদ্ধি কম। রুমেশ রত্নায়েকর দীর্ঘমেয়াদী ট্রেনিংয়ে হয়তো মাঝে মাঝে বুদ্ধিমাণের মতো বল করলেও নিয়মিতই তার বোলিং খুব খারাপ হচ্ছে।
রুবেলকে বলবার কিছু নেই, এখনও শিখছে, তবে তার এখনও বাংলাদেশ দলে খেলবার যোগ্যতা তৈরী হয় নি। বাংলাদেশের পেস এটাকের অস্ত্র হওয়ার প্রস্তুতি এখনও তার সম্পন্ন হয় নি। আজকে তার দুটো বাজে ওভার দেখে তাই মনে হলো।
আমি জানি না আশফারুলের সাথে মাহামুদুল্লাহর কোনো বৈরিতা আছে কি না, তবে ভালো বল করতে থাকা মাহামুদুল্লাহকে নিয়মিত বল না করিয়ে স্কুল বালকের মতো পেশী শক্তিকে অস্ত্র বানানোর নির্বুদ্ধিতার জন্যই আশরাফুলকে ম্যাচ ফি জরিমানা করা উচিত।
মাহামুদুল্লাহ চমৎকার বল করছিলো। একটা বাজে ওভার করবার পরে, বিশেষ করে ছক্কা খাওয়ার পরে চমৎকার ভাবে ফিরেও এসেছিলো, কিন্তু তাকে দিয়ে পুনরায় বল না করিয়ে অন্য কাউকে বল করানোর অর্থ আমি বুঝলাম না।
শ্রীলঙ্কার সাথে প্রস্তুতি ম্যাচে বাংলাদেশের হারের অন্যতম কারণ আশরাফুলের বল করতে আসা। সে সময়ে চাপে থাকা জয়সুরিয়া আর জয়বর্ধনকে আত্মবিশ্বাস দিয়েছিলো তার ৬ বলে ৯ রান।
এর আগে সাকিব, মাশরাফি, মাহামুদুল্লাহ যে চাপে রেখেছিলো শ্রীলঙ্কাকে সেটা থেকে মুক্ত হয়ে জয়বর্ধনে ম্যাচ বের করে নিয়ে চলে গেলো।
আজকেও একই রকম ভুলের পুনারাবৃত্তি, প্রতই ওভারে বোলার না বদলে প্রয়োজনীয় বোলারকে দিয়ে বোলিং করে ম্যাচের নিয়ন্ত্রন হাতে রাখা- এটা শিখতে একজনকে ৫০ ম্যাচ ক্যাপ্টেন্সি করতে হয় না। তবে আশরাফুল অনুকরণ করছে কিন্তু ম্যাচ রিডিংয়ে একেবারে স্টুপিড।
আজকে বাংলাদেশের ফিল্ডিং ছিলো চমৎকার। এক কথায় অনবদ্য।
প্রতিটা খেলোয়ার জয়ের জন্যই খেলেছে আজ। তবে জয়টা যে দুরাশা হয়ে যাচ্ছে কিংবা হয়ে গেছে, সেটা বিশেষত তামিমের হঠাৎ করেই প্রয়োজন না থাকা সত্ত্বেও বাইরে বের হয়ে মারতে চাওয়ায় ঘটেছে।
তবে আবারও বলি, আশরাফুল এটাকে ত্বরাণ্বিত করেছে। তার ৯ বলে ১১ তেমন বড় কন্ট্রিবিউশন নয়, সে বাংলাদেশের অন্যতম অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান। শট নির্বাচনে আরও সুশৃঙ্খল হতে যদি না শিখে ১২০টার বেশী ওয়ান ডে খেলে তাহলে শিখবে কবে?
গাম্ভীর আজ মাশরাফির একটা বলে ২টা সামনে এসে চমৎকার কাভার ড্রাইভ করলো, এই দুই পা সামনে আসায় বিশেষত কাভার আর এক্সট্রা কাভারের মাঝে যে সংক্ষিপ্ত ফাঁক সেটা সম্পূর্ণই উন্মুক্ত করে ফেলতে পেরেছিলো গাম্ভীর, তবে আশরাফুল ঠিক একই শট খেললো জায়গায় দাড়িয়ে, ফলাফল, এক্সট্রা কাভারে আউট।
সাকিব চমৎকার বোলিং করেছে আজকে, ব্যাটিংয়ে সব সময় আমি প্রত্যাশা করি তার কাছে, আজ আমার প্রত্যাশা মেটাতে পারে নি। ১৪ ওভার শেষে ১০২ রান তেমন ভালো স্কোর বিবেচিত হবে না মোটেও। কিন্তু এটা মনে রাখতে হবে আশরাফুল যখন আউট হলো তখন বাংলাদেশের রান রেট ছিলো ওভার প্রতি ১০। সে হিসেবে এখন রান হওয়ার কথা অন্তত ১৩০, তাহলে ভারতের সাথে ম্যাচ জেতার প্রত্যাশা করা যায়।
ব্যবধান কয়েকটিই, যুবরাজ সিংয়ের অনবদ্য খুনে ব্যাটিং, সেই সাথে রুবেলের নির্বোধের মতো বোলিং, এবং নাইমের বোকা বোলিংই আমি বলবো, পরপর ২ বলে ছক্কা এবং তার পরে একটি ছক্কা এবং প্রতিটিই জঘন্য বল ছিলো।
ঠিক তেমন ভালেই রুবেলের করা ওভারটাও ম্যাচের অন্যতম বাজে একটা ওভার, পায়ের উপর বল দিলে যেকেউ চার মারতে পারে, এটার জন্য ভালো ব্যাটসম্যান হতে হয় না।
মাশরাফি আউট হয়ে যাওয়ার পরে আর খেলায় জিতবার আশা করছি না। তবে বাংলাদেশের বোলিংকে ১০ এ ৮দিবো আমি। এমনিতেই এই ছোটো পরিসরের খেলায় বোলাররা আসে খুন হতে। আর নিয়মিত থ্রি কোয়ার্টার বল করেও পার পাওয়া যায় না।
পাঁজরের খাঁচা, বাউন্সার এবং হাঁটুর মাঝা মাঝে কোনো স্থানে নিয়মিত বল রেখে দু দিকে মুভ করে ব্যাটসম্যানকে বিভ্রান্ত করার সুযোগ থাকে না সব সময়। তবু বোলাররা চেষ্টা করছে। ভালো খেলা হবে। বাংলাদেশ হয়তো চ্যাম্পিয়ান হবে না, কিন্তু ভালো খেলুক এটাই চাই।
আর গতকালের হল্যান্ডের খেলা দেখে আমি মুগ্ধ।
তাদের জয়টা প্রাপ্য ছিলো বিশেষত তাদের প্রতিটা খেলোয়ারই নিজের সর্বোচ্চ সামর্থ্যের ১২০ ভাগ বেশী দিয়েছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।