আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পান্তা কি ঐতিহ্য নাকি ---



কিসের মাঝে কি পান্তা ভাতে ঘি। এটি একটি গ্রামীন প্রবাদ বাক্য। যাহাতে যেটা মানায়না এমন টি হলেই সেই বোকামির দন্ড হিসেবে এমন প্রবাদ বলাহয়। আগের কালে গ্রামের ঘরে ঘরে প্রচূর গরু, মহীষ ছিল। সারা বছর দই দুধে ভরা থাকত গ্রামের প্রতি ঘরের হারি পাতিল গুলান।

(অবশ্য এখনো অনেক বাড়িতে আছে) । দইকে মাটির পাতিলে ঘোটে পাওয়াযেত ননি এবং (মাঠা) । ননিকে করাইয়ে দিয়ে চুলায় বসিয়ে জ্বাল দিয়ে ই পাওয়াযেত ঘি। ঐ ঘিয়ে ঘিয়ে ভরা থাকত দাদির সিন্দুকে ভিতর রাখা স্ফটিকের বোয়ম গোলান। গরম ভাতের সাথে লবন দিয়ে ঘি দিয়ে মাখিয়ে খেলে কিযে মজা লাগত সেটা মনে করতে না পারাটাই ভাল।

কেম--ন যেন মনটা উদাসী---ন হয়ে যায়। যাক সে কথা। কেও যদি পান্তা ভাত ঘি দিয়ে কখনো খেত' তাকে মনে করাহত হেমায়েত পুরের বাসিন্দা। আমার কাছে ঠিক এমনটিই মনেহয় যখন কেও বিনে পয়সার পান্তাকে ২০০/৩০০ টাকা ছটাক কিনে তাও আবার ইলিশ দিয়ে বক্ষন করে। বাংলাদেশের বেশির ভাগ এলাকার চাষাবাদের সময়, মানে ধান চাষের সময় পৌষ/মাঘ।

আর পাকা ফসল ঘরে উঠে বৈশাখ মাসে। ধানে ধানে ভরেযায় আমাদের অঝপাড়া গায়ের ঘর গোলান। সে এক অপুর্ব দৃশ্য। এ সময় আর কেও অবসর থাকতে পারেনা। বাড়ির ছোট শিশুটি পর্যন্ত ব্যস্ত থাকে।

তাদের কাজ হল ধান শুকানোর খলায় {মাঠ} পানি সর্বরাহ, ছড়ানো ধানে পা দিয়ে লাড়া দেওয়া ইত্যাদি। কর্মসংস্থানের কারোরই অভাব থাকেনা। এই একমাস যে পরিশ্রম করি আমরা তা যদি সারাবছর করি তাহলে পালানো ছাড়া উপায় নেই। আর যে পরিমাণে কাজ হয় তা সারা বছর হলে দেশ উন্নত হয়ে যাবে ১০ বছরে আমি নিশ্চিত। ঐসময় আর কৃষক, শ্রমিক, মজুর কারো ঘরেই ভাতের অভাব থাকেনা।

তখন সকাল বেলা আমাদের ঘোম ভাংগে গড়ম ভাতের গন্ধে। তখন কেও পান্তা খায়না। আর তখন চলে ইলিশের মৌসুম। ঘরের কর্তা সর্বদাই দাদারা। এবার যেই দাদার আসনে থাক না কেন।

তিনি ধান বিক্রি করে বাজারে যাবেন আর ভাল ভাল মাছ নিয়ে আসবেন এবং মাঝে মাঝে ইলিশ--- আমরা ইলিশের ভাজি গরম ভাতের ভেতর চেপে রাখতাম। ইলিশ আমাদের ঐতিহ্য। কিন্তু পান্তা ? হেঁ , আমরা পান্তা খাই। চৈত্র মাসে মাঠে মাঠে বয়ে চলে খরার দাপট। আর গ্রামের অনেক ঘরে নিরবে বয়ে চলে আরেক খড়া।

ভাতের অভাব। আমাদের এলাকাটা এক ফসলা। আমন মৌসুম আমাদে নেই। ছোট বেলায় দেখেছি অনেক বাড়িতেই চৈত্র মাসে চাল থাকেনা। বাজার থেকে আটা কিনে তাদিয়ে এক প্রকার ভাত রান্ধা হোত।

আটার ভাত। আর যাদের তাও কেনার সমরর্থ থাকনা তাদের কি হোত? যারা একটু বড় কৃষক তাদের ঘরে অনেক মানুষঅনেক খেত মজুর। এতসব মানুষের জন্য যে ভাত পাকানো হয় তা প্রায়সই বারতি থাকে। সারা দিনের বারতি ভাত পান্তা হিসেবে সংরক্ষন করা হোত। আর তা সারা দিনের কাজের নাম মাত্র মজুরির সাথে বোনাস পেত তারা।

যাদের আটা কেনার সামর্থ থাকতনা। বলাযায় পান্তা আমাদের কলঙ্ক। গ্রামে কিন্তু কেও কোনদিন খায়েশ করে পান্তা খায়না। পহেলা বৈশাখ বাংলা বছরের প্রথম দিন। এই দিনে যদি গ্রামের কোন ঘরে পান্তা খায় ইচ্ছায় কিংবা অনিচ্ছায় তাইরে খবর আছে।

হয় এটা দূর্দিনের স্বক্ষ্য বহন নয়ত আদিক্ষ্যেতা হিসাবে গন্যকরা হবে। এই দিনে গ্রামের যাদের নিত্য সঙ্গি অর্থনৈতিক অসঙ্গতি তারাও একটো ভাল খাবার দাবারের আয়োজন করে। গর্বকরার মত ইতিহাসই হয় ঐতিহ্য। নেতিবাচক কোন সৃতি বিশ্ব দরবারে উন্মোচন করে গর্বিত হবার নিস্ফর চেষ্টা করা বোকামি ই মাত্র।



এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।