আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কাঁটাতারের বেড়া ও ব্যক্তিগত অপমানবোধ

আদর্শটাকে আপাতত তালাবন্ধ করে রেখেছি

জীবনে প্রথম যেদিন কাঁটাতারের বেড়া দেখেছিলাম, সেদিন অসম্ভব মুগ্ধ হয়েছিলাম। মানুষের কী বুদ্ধি! একটি তারের ওপর আরো কিছু ছোট ছোট চোখা চোখা তার পেঁচিয়ে এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যে, সহজে কেউ এই বেড়া পেরিয়ে চুরি করতে পারবে না - এই ছিলো অনুভূতি। এর অনেকদিন পর নেত্রকোনা সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দেখে মুগ্ধ হই নি খুব একটা, কিন্তু ভেবেছিলাম চোরাচালান রোধ করতে এটা ভালো কাজ করবে। অবাক বিস্ময়ে লক্ষ করেছিলান, জীবন-জীবিকার জন্য যারা আগে প্রায়শই এপার-ওপার করতো, তাদের কী নির্মমভাবে কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে ছেঁটে ফেলা হয়েছে অপরপাড়ের মানুষের কাছ থেকে। কাঁটাতারের বেড়ার ওপর মুগ্ধতা কাটতে শুরু করে তখন থেকেই।

কিন্তু তখন পর্যন্ত কাঁটাতারের বেড়াকে আপত্তিকর মনে হয়নি। প্রচণ্ড মানসিক কষ্ট পেয়েছিলাম সেদিন, যেদিন হঠাৎ করেই দেখি- রাস্তায় সৌন্দর্যবৃদ্ধিকরণের নামে ডিভাইডারে লাল-নীল ফুলের গাছ রেখে দু'পাশে কাঁটাতার দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে। উদ্দেশ্য পরিষ্কার। ফুল বা পাতাবাহার গাছগুলো যেনো নষ্ট না হয় এবং নির্দিষ্ট স্থান ছাড়া উল্টাপাল্টাভাবে কেউ যেনো রাস্তা পার না হয়। কাঁটাতারের বেড়া কার জন্য? অপরাধীদের জন্য? পাহারার জন্য? প্রতিরক্ষার জন্য? আমি জানি, সুন্দর কিছুকে ধ্বংস করা আমাদের অনেকের অভ্যাস।

গাছে ফুল ফুটে থাকলে সেটি ছেঁড়ার জন্য আমাদের হাত সুড়সুড় করবেই। একটু সামনে জেব্রাক্রসিং বা ফুটওভারব্রিজ থাকলেও দৌড়ে ডিভাইডারের ওপর দিয়ে রাস্তা পার না হলে আমাদের শান্তি নেই। কিন্তু তাই বলে কাঁটাতারের বেড়া? মানুষ হিসেবে আমরা কি এতোটাই নিকৃষ্ট হয়ে যাচ্ছি যে আমাদের আটকে রাখতে হয় কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে? কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে কি সত্যিকার অর্থে মানুষকেই অপমান করা হয়নি? নাকি আমরা আমাদের স্বভাবের কারণে কাঁটাতারের বেড়াকে অনিবার্য করে তুলছি আমাদের জীবনে?

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.