আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পিলখানা ট্রাজেডির পর



পিলখানা ট্রাজেডির পর বিএনপির ভূমিকায় অনেকে হতাশ হয়েছেন। আওয়ামী লীগের ম্যাচিউরড রাজনীতিতে দিশেহারা বিএনপি যা করেছে তা অনেকেই পছন্দ করেননি। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা সামরিক অভিযান না করে দেশকে একটি বড় সংঘর্ষের হাত থেকে রক্ষা করেছেন। সামরিক বাহিনীর ভেতরের বিক্ষোভকে প্রশমিত করেছেন। সবচেয়ে বড় কথা ওয়ান ইলেভেনের মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক নেতৃত্বে ওপর সামরিক নেতৃত্বের যে আধিপত্য তৈরি হয়েছিল তা কিছুটা হলেও প্রশমিত হয়েছে।

সামরিক নেতৃত্ব দৃশ্যমানভাবে রাজনৈতিক নেতৃত্বের অধীনে এসেছে। এর জন্য তাকে সেনাকুঞ্জে গালি খেতে হয়েছে। গালি দিয়ে অফিসাররা তৃপ্ত হলেও তারা জানেন না, তাদের এ বীরত্বকে সাধারণ মানুষ ভালভাবে নেননি। মানুষ হুমড়ি খেয়ে তাদের গালাগালির অডিও শুনেছে কিন্তু এই কেউ তাদের এই সাহসের জন্য বীর উপাধি দেয়নি। কেউ বাহবা দিয়েছে বলেও শোনা যায়নি।

বিডিআর বিদ্রোহের পর যত কন্সপিরেসি থিওরি নিয়ে আলোচনা হয়েছে তার সবগুলোর পটভূমি হিসেবে সামরিক বাহিনীর অফিসারদের দুর্নীতি বিশেষভাবে আলোচিত হয়েছে। বাংলাদেশের কেউ এ হত্যাকাণ্ড সমর্থন করেননি। প্রচণ্ড শোকে জাতি কেঁদেছে। কিন্তু মানুষের সিমপ্যাথি সামরিক বাহিনীর দিকে যায়নি। কারণ, তারা রাজনৈতিক নেতৃত্বের খবরদারি করেছে।

দায়িত্বশীল সমাধানের দিকে তাদের আগ্রহ দেখা যায়নি। প্রতিশোধমূলক মনোভাব দেখিয়েছে। মিডিয়ার ভুলের খেসারত হিসেবে মিডিয়ার ওপর তারা চাপ প্রয়োগ করেছে। তবে মানুষের সিমপ্যাথি বিডিআরের দিকেও যায়নি। গিয়েছে সরকারের দিকে।

বিরোধী দল হিসেবে বিএনপির অবস্থান গঠনমূলক হয়নি। কিন্তু তারা যে অবস্থান নিয়েছে তাও সামরিক বাহিনীর ক্ষোভের আগুনে পানি ঢেলে দিয়েছে। সামরিক ছাউনীর ভেতর তৈরি দল হিসেবে বিএনপি খুব দ্রুত সামরিক বাহিনীর রাগান্বিত সদস্যদের কথাকে নিজেদের কথা হিসেবে প্রচার করায় সে সব কথার স্বত্ত্ব তারা নিমেষে হারিয়ে ফেলেছেন। প্রধানমন্ত্রী সংসদে প্রথম দিনেই বলতে পেরেছেন যে, খালেদা জিয়ার বক্তব্যে তিনি রাগান্বিত সেনাসদস্যদের কথার প্রতিধ্বনী শুনছেন। বিএনপি যদি দ্রুত সরকারের পাল্টা অবস্থান না নিতো তাহলে হয়তো সামরিক বাহিনীর সদস্যদেরকেই তাদের অবস্থানে থেকে কথা বলতে হতো।

বিপরীতে থাকতো সরকার। খালেদা জিয়াকে ধন্যবাদ যে তিনি তাদের সে সুযোগ দেননি। ওয়ান ইলেভেনের মধ্যদিয়ে বাংলাদেশে সুশীল সমাজ সমর্থিত সেনা সরকার দায়িত্ব পালন করেছে তারা খুব ভাল ভাবে দেশ চালাতে পারেননি। নিজেদের অস্ত্র, বিদেশী সমর্থন, সুশীল সমাজ, গণমাধ্যম, বিচারবিভাগ সবার সমর্থন পেয়েও ২ বছর তাদের জরুরি অবস্থা দিয়ে টিকে থাকতে হয়েছে। দেশ পরিচালনায় তারা নিজেদের অযোগ্য প্রমাণ করেছেন।

পিলখানা হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে বোঝা গেল, নিজেদের নিরাপত্তা বিধান করার মতো পরিস্থিতিও তাদের নেই। গোয়েন্দা সংস্থাগুলো হত্যাকাণ্ডের আগে পরে কোথাও কোনো বুদ্ধির পরিচয় দিতে পারেনি। এখন এবং পরবর্তীতে দেশি-বিদেশি শত্রুর হাত থেকে বাঁচাতে সরকারকেই উদ্যোগ নিতে হবে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।