আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নিহত বীর সেনাদের জন্য শোকগাথা

আল বিদা

তেজগাও এলাকায় আমার অফিস। প্রায়ই দেখি গার্মেন্টস কর্মীরা তাদের ন্যায্য দাবী আদায়ের জন্য রাস্তায় ব্যারিকেড দিচ্ছে। ভাবতে খারাপই লাগে রমযানে ইফতারে তাদের জন্য বরাদ্দ কম দেখে। যদিও এতে মালিকের কোন সমস্যা হচ্ছে না। সমস্যা হচ্ছে আমরা যারা চাকরী বাচাতে ৯ টার মধ্যে অফিস দৌড়াই।

যদিও পরে নিরপেক্ষ ব্যক্তির কাছ থেকে শোনা যায় এ ছিল ভারতীয় চরের ইন্ধন। গত ২৫ ফেব্রুয়ারী বিডিআর তাদের কিছু দাবী আদায়ের জন্য পিলখানায় বিদ্রোহ করে। তাদের বেতন, ভাতা, ইনসেনটিভ, ইলেকশন ডিউটির টাকা সময়মত দেয়া হয় নাই - এই অভিযোগ শুনে সত্যিই খারাপ লেগেছে। তবুও আমি অন্তত মেনে নিতে পারি নাই এই বিদ্রোহ। কারন তেমন কিছু না।

সশস্র বাহিনী যতই কম বেনিফিট পাক বা যা কিছুই হোক, এমন বিদ্রোহ করাটা কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না। কারন তারা কেবল একটি সংস্থার কর্মী না। তারা বাংলাদেশের নিরাপত্তায় নিয়োজিত। তাদের সব দাবী থাকবে একটি সীমিত আকারে। ধৈর্যের বাধ ভাঙে।

তাদেরও ভাঙতে পারে। তারও একটা লিমিট আছে। নির্বিচারে হত্যা কোনভাবেই সে লিমিট হতে পারে না। বিডিআরের অভিযোগ সিনিয়র অফিসাররা তাদের শাস্তি দেয়। যারা আর্মির ট্রেনিং দেখেন তারা তো জানেন এইটা একটা সাধারন ব্যাপার।

কখনও কখনও হয়ত বেশী হয়ে যায়। তবুও সশস্র বাহিনীর ইন্টারনাল বিহেভিয়ারে এমন অনেক দৃষ্টান্ত দেখা যায়। শুধু বিডিআর না, জুনিয়র আর্মি অফিসাররা সিনিয়র আর্মি অফিসার কর্তৃক সমস্যায় পড়ে। এমনকি ক্যাডেট কলেজের ছেলেরাই ভাল বলতে পারবে তারা কিভাবে সিনিয়র ব্যাচের ছেলেদের কাছে ধরা খেত। এ এক অন্য কালচার মনে হয়।

আমাদের সাধারন কোম্পানী আইন বা হিউম্যান রিসোর্স বা মানবাধিকার আইনে এর আলোচনা করা একটু কঠিন। বিডিআরের আরেকটা দাবী শুনে আমি কিছু বুঝতে পারি নাই। আর্মি অফিসাররা গাড়ী পায়, তারা কেন পায় না? এ নিয়ে আমি আর কিছু বলতে চাই না। আর সবকিছুর পরে যা বলতে চাই, মানুষের ব্যবহারে অবশ্যই ভুল ত্রুটি হয়। কিন্তু এর সবকিছুর শাস্তি মৃত্যু না।

বিডিআরের ডিজি, ডাল-ভাত প্রজেক্টের চীফের হয়ত কিছু ভুল ছিল। বিদ্রোহ যদি এর মধ্যে থাকত তাহলেও একটা কথা ছিল। যখন নিহত অফিসারের তালিকায় দেখা যায় ঐ দিনই জয়েন করা অফিসারের নাম, বা ইউ এন মিশন থেকে মাত্রই ফেরা অফিসার তখন কি মেনে নেয়া যায়? এনডিসি থেকে পিএসসি করা এসব অফিসার কালে ভদ্রে তৈরী হয়। যখন দেখি মেজর হুমায়ন হায়দারের অসুস্থ ছেলেকে বা নিহত কোন আর্মি অফিসারের স্ত্রীর মেহেদী রাঙা হাত বা কঠিন হৃদয়ে কর্তব্যপালনরত সেনার কান্না তখন বিডিআরের এই ঘটনাকে আমি বিদ্রোহ বলতে পারছি না। সুপরিকল্পিত হত্যাকান্ডই মনে করি।

যাতে ব্যক্তি আক্রোশের চেয়ে সিসটেম ধ্বংশ করাই উদ্দেশ্য ছিল। যুদ্ধে যদি শহীদ হত তাহলে একটা স্বান্তনা থাকত। নিরস্ত্র এই বীর সেনাদের মৃত্যু কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না। এ ক্ষতি বাংলাদেশ কতদিনে কাটিয়ে উঠতে পারবে বা আদৌ পারবে কিনা জানি না। নিহত বীর সেনাদের শ্রদ্ধা জানাই।

আমরা আজ সত্যিই শোকাহত। স্বজন হারানোর বেদনায় মর্মাহত।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.