আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ছুটির দিন দুপুরে

১৯৭১ এর সকল যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাই

মোবাইলে রিংটোন বেজেই যাচ্ছে, বেশ খানিকক্ষণ ধরেই। শিরোনামহীন এর ফারহান এর সরোদ। সরোদের কথায় কুয়াশার কথা মনে হয়, ছোট বেলায় তার গাছের উপরে বসে সরোদ বাজানোর কথা পড়ে কি পরিমান ফ্যাসিনেটেড হয়েছিলাম। বড় হয়ে গেছি। দূর্ঘটনাটা যখন ঘটেই গেছে, সুতরাং তার দায়দায়িত্ব আমারই নিতে হবে, যদিও এর জন্য দায়ী নই আমি মোটেই।

আগে যদি জানতাম জন্মানোর প্যাকেজের সাথে বড় হওয়াও আছে তাহলে মোটেই আমি জন্মাতাম না। উঁহু, মোটেই না। ফোনটা ধরব না বলে ঠিক করে রেখেছি। অপেক্ষা করুক সে, আমার এখন কথা বলার মুড নাই। সবসময় সবার কথা শুনতে হবে না।

সবময় কথা বলতে হবে এমনও না। আমি আমার মত আকাশের মেঘের দিকে তাকিয়ে ভাবতে থাকি, আর দু'ঘন্টা পর এক সপ্তাহ হবে। অলস বসে মেঘ দেখা আমার খুব প্রয় একটা কাজ। গরমের ছুটির দুপুরে আর কি করার আছে, অপেক্ষায় বসে মেঘ দেখা ছাড়া? রিংটোন পাল্টে গেছে ততক্ষণে। স্যাভেজ গার্ডেনের এ্যানিমেল সং।

তার মানে অচেনা নাম্বার। : বল। _ ব্যাট। : রাগ? _ খুব। : কারণ? _ নিরবতা।

: স্বাভাবিক। _ কারণ? : অনিচ্ছা। _ মানে? : এমনি। _ বলবি? : না। _ খোলা আকাশ।

: বারান্দা। _ আয়। : মানে? _ দাঁড়া এসে। আমি বারান্দায় দাঁড়িয়ে ডানে তাকাই। গাছের নিচে দাঁড়িয়ে দু'জন।

বাইকে। একটা ছেলে, একটা মেয়ে। : কি ব্যাপার। _ তোরে আমি এতক্ষণ না দেখে থাকতে পারি শয়তান? : তারপর? মেয়েটা ফোন হাতে নিলো। _হাই, রেখা, আমি নাহিন।

রেডী হও, আমি উপরে উঠছি। আমি কিছু বলার আগেই সে ফোন কেটে দিয়ে পকেটে ঢুকিয়ে পাশের ছেলেটাকে একটা গাঁট্টা মেরে আমার বাসার দিকে হেঁটে আসলো। ছেলেটা বাইকে উঠে চলে গেল। আম্মা অসময়ের মেহমান দেখে অবাক হলেন। নাহিন আপু আম্মাকে হেসে কি বললো সেই জানে, আমাকে দেখেই বললো তৈরি হয়ে নিতে ঝটপট।

আম্মাও তাড়া দিতেই আমি ঘরে চলে এলাম অবাক হয়ে। বের হয়ে দেখি দু'জনে বেশ গপ্পো হচ্ছে। বের হয়ে সেই রিকশা নিলো, উঠে পড়লো। আমি অবাক হয়ে উঠলাম। প্রশ্ন নিয়ে তাকাতেই সে হতাশায় মাথা ঝাঁকালো।

অনেক শুনেছিলাম যার সম্পর্কে তাকে দেখে কি করবো বুঝতে পারছিলাম না, তবে আমার বেশি কিছু করতে হয়নি। যারা তাকে চেনে তারা জানে, কোন আড্ডায় নাহিন আপু থাকলেই চলে। খানিক দূরে দেখি ছেলেটা দাঁড়িয়ে আছে। বাইক নিয়ে। কাছে যেতেই আপুনি আমাকে রিকশা থেকে নামিয়ে দিয়ে তাকে ঝাড়ি দিলো, "ওই মফিজ, বেটা ভোঁদাই কোথাকার, খুঁজে বের করসিস তোর মত আর একটারে।

যা, দু'ঘন্টা পরে ওরে পৌঁছে দিয়ে যাস। " _ আমি? : নয়তো কে? _ কেমনে? : এলামনাইয়ের বড় ভাইয়েরা ছোট বোনদের পৌঁছে দেয়। আর এই মেয়ে তুমি, প্রতি শুক্রবার মিটিং এ আসতে ভুলো না। আবার যেন তোমাকে আমার ডাকতে আসতে না হয়। চলে যাওয়া রিকশার দিকে তাকিয়ে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলি, আমার এমন একটা বন্ধু নাই।

বুঝিনি আমার সেই আফসোস তার খানিক আগেই শেষ হয়ে গেছে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।