আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পরিবহনে নারীর যাত্রা যেন বাধার দ্বারা আবৃত। অবস্থার নিরসনে চাই মানসিকতার পরিবর্তন। নির্ধারিত সিট থাকার পরেও অনাকাংখিত বাকযুদ্ধ।

সকল ব্লগারদের অবগিতর জন্য জানানো যাচ্ছে যে, সকল প্রকার ভাল মন্তব্য সাদরে গ্রহন করা হবে। কোন বা

অনেক দিন ধরে লক্ষ্য করছি, যানবাহনে অর্থাৎ আমাদের পাবলিক বাসগুলোতে সংরক্ষিত আসন সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা। যাতে লেখা রয়েছে- সংরক্ষিত আসন ৯টি। মহিলা/শিশু/প্রতিবন্ধী। সাম্প্রতিককালে বাস মালিক সমিতির এ ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ সত্যিই প্রশংসনীয়।

প্রথম যেদিন বিষয়টি চোখে পড়লো, মনটা স্বস্তিতে ভরে গিয়েছিল। কারণ দীর্ঘদিনের নারীর যাতায়াত বিড়ম্বনা হয়তো অনেকটা কমবে কিন্তু দু:খের সাথে বলতে হয়, এ আনন্দ এখন আর মনে হয় না। নির্দিষ্ট আসন থাকা সত্ত্বেও বিড়ম্বনার কোন কমতি নেই। যার ইচ্ছা সে তার মত খালি সিটেই বসে পড়ছে। নির্দিষ্ট আসনে পুরুষযাত্রী বসে আছে।

মহিলা যাত্রী অন্য পুরুষ যাত্রীর পাশে অথবা কেউ দাঁড়িয়েই আছে। বিষয়টির প্রতি যেন কারো ভ্রূক্ষেপই নেই। দেখেও না দেখার ভান করছে। এমন একটা ভালো উদ্যোগ নেয়ার পর যদি তার প্রয়োগ না থাকে তাহলে এর ভালো ফলাফল জনগণ কখনো পাবে না; সেটা বাসের জানালায় লিখিতই থেকে যাবে। অথচ একটুখানি আন্তরিকতা, সচেতনতা, মানবিকতা ও সহানুভূতিই এ অবস্খা থেকে মুক্তি দিতে পারে।

বিষয়টি বাস্তবায়ন করার জন্য পুরুষ যাত্রীদের সহযোগিতা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন, কিন্তু দেখা গেছে এ নিয়মটা যেন তাদের মনক্ষোভের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেকে এটাও মনে করছেন, এটা বৈষম্য করা হয়েছে সমান অধিকার ও স্বাধীনতার পরিপন্থী। যারা এ ধরনের উগ্র স্বভাবসম্পন্ন তাদের পরিচয়, কোনো মহিলা বাসে ওঠে বিষয়টির প্রতিবাদ করলেই বুঝা যায়। শুরু হয়ে যায় তর্ক-বিতর্ক। অথচ এটা কোন তর্ক-বিতর্কের বিষয় হওয়া উচিত নয়।

আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীলতা, পরমসহিষ্নুতা থাকলে সংশ্লিষ্ট মহল, জনগণ মোটকথা সবাই মিলে এর সমাধান বের করা সম্ভব। প্রসঙ্গক্রমে আমি বলতে চাই, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসগুলোর কথা। যে বাসের প্রথম ৪-৫ সারি মেয়েদের সিট আর বাকিগুলো ছেলেদের। ডাবল ডেকার কিছু বাস আছে, সেখানে নিচতলা মেয়েদের জন্য এবং দোতলার সিট ছেলেদের জন্য। মেয়েরা যেদিন কম আসে, ছেলেরা ইচ্ছা করলে বসে, আবার অনেকে বসে না।

দাঁড়িয়ে থাকে, যদি কেউ বসে কোন মেয়ে আসলে ছেলেরা আপনাতেই ওঠে যায়। নারী যাত্রীর সব সময় প্রত্যাশা, সংশ্লিষ্ট মহল যেন এ নিয়ম বাস্তবায়নে যথাযথ উদ্যোগ নেবেন এবং মহিলা যাত্রীদের অস্বস্তিকর যাতায়াত থেকে মুক্ত করবেন। এখানে আরো একটি উল্লেখযোগ্য দৃষ্টান্ত- প্রথম আলো পত্রিকার বিজ্ঞাপন, যা সবারই বোধ করি নজরে পড়েছে। যে বিজ্ঞাপন চিত্রে দেখানো হয়েছে, মহিলা সিটে পুরুষযাত্রী বসে আছে, পাশেই মহিলা যাত্রী দাঁড়িয়ে আছে, আর প্রথম আলো সেখানে বলছে, ‘নিজেকে আগে বদলাতে হবে' এবং ‘বদলে যাও, বদলে দাও'। সুতরাং সংশ্লিষ্টদের অবশ্যই উদারতার পরিচয় দিয়ে নিজেকে বদলাতে হবে তাহলেই আশা করা যায় সমাজে কেবল যাতায়াতের ক্ষেত্রে নয়, পারিবারিক থেকে রাষ্ট্রীয় সকল ক্ষেত্রেই নারীদের একটি সুন্দর অবস্খান তৈরিতে সহায়ক হবে।

সমাজে নারীর প্রতি সুআচরণ প্রতিষ্ঠিত হবে, সর্বোপরি সমাজে নারীর সামাজিক মজবুত অবস্খান তৈরি হবে, যা প্রত্যেক সচেতন নাগরিকের একান্ত কাম্য। আসুন পথের এই অনাকাংখিত সকল পরিবেশ তৈরী না হোক। অবসান হোক এক যন্ত্রনাদায়ক অবস্থার।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.