আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

যাত্রী পরিবহনে নৈরাজ্য ! অতিরিক্ত ভাড়া আদায়, স্বাধীন পাবলিক পরিবহন কমিশন গঠন জরুরী



এস.এম.সৈকত মানবাধিকারকর্মী ও নির্বাহী পরিচালক সিরাক-বাংলাদেশ সাধারণ মানুষ প্রতিদিনের চলাচলে যে কয়টি পরিবহন ব্যবহার করেন তা হচ্ছে রিকশা, সিএনজি, ট্যাক্সিক্যাব ও বাস। রাজধানীসহ সারা দেশে সাধারণ মানুষের পরিবহনের মাধ্যম পাবলিক পরিবহনে অরাজকতা এবং ভাড়া নির্ধারণে অনিয়ম, যাত্রীসেবার নামে প্রতারনামূলক প্রচারনা ছাড়াও পরিবহনভেদে একই গন্তব্যে ভিন্ন ভিন্ন ভাড়া আদায় এখন নিত্যদিনের বিষয় হয়ে দাড়িয়েছে। সিটিং সার্ভিসের সাইনবোর্ড লাগিয়ে অধিকাংশ বাস মানুষের সঙ্গে চিটিং করছে। এসব বাসে লোকাল সার্ভিসের সেবা দিয়ে আদায় করা হচ্ছে সিটিং বাসের ভাড়া। স্বল্প দূরত্বে চলাচলকারী মানুষকে বাসে উঠাতে তারা শুধু অনাগ্রহই প্রকাশ করছে না, তাদের কাছ থেকে বেশি দূরত্বের ভাড়াও আদায় করছে।

তারপরও মানুষ বাদুড়ের মতো ঝুলে এসব বাসে উঠছেন। তবে এই ঝুলে উঠার দৌড়ে পুরুষরা এগিয়ে থাকলেও নারী, শিশু ও বৃদ্ধরা হচ্ছেন বঞ্চিত। নারী, শিশু ও প্রতিবন্ধীদের জন্য আলাদা আসন সংরণ করা হয় না সকল পাবলিক পরিবহনে। ঈদ, পূজা, পার্বন সহ যেকোন উৎসবের সময় দেশের বিভিন্ন স্থানে ভ্রমনকারীদের কাছ থেকে আদায় করা হয় উচ্চ ও অস্বাভাবিক রকমের ভাড়া। সরকার পরিবহন ভাড়া ৫০ পয়সা বাড়ালে এসব বাসে বাড়ানো হয় দিগুণ বা তারও বেশি।

তার ওপর রয়েছে সিটিং সার্ভিসের নামে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়। সিএনজি চালিত বাসের পরিবহন ব্যয় ডিজেল চালিত বাসের চেয়ে কম হলেও ভাড়া আদায় করা হচ্ছে ডিজেল চালিত বাসের চেয়েও বেশী হারে। যে পরিবহনের সেবা নিয়ে মানুষ প্রচন্ড বিরক্ত ও ক্ষুব্ধ সেটি হচ্ছে সিএনজি চালিত অটোরিকশা ও ট্যাক্সিক্যাব। কোনো অটোরিকশাই এখন মিটারে চলতে চায় না। মিটারের চেয়ে ৫০ থেকে ৬০ টাকা অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে।

অতিরিক্ত ভাড়া দিয়েও স্বল্প দূরত্বে তাদের পায়ে ধরেও নেয়া যায় না। তাই সিএনজি অটোরিক্সা মালিক এবং ড্রাইভারদের কারসাজিতে এখন ঢাকা শহরের অভ্যন্তরে ১০০ টাকার কমে কোন ভ্রমন করা যায় না। আর সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলগুলো এসব বিষয় যেন দেখেও না দেখার ভান করছেন। অন্য কথায় পরিবহন সেক্টরে চলতে থাকা এ অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতা দেখার যেন কেউ নেই। এ অরাজকতার জন্য শহরের এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাওয়াটা খুবই ভোগান্তিপূর্ণ ও ব্যয়বহুল হয়ে দাড়িয়েছে।

এক শ্রেণীর অসাধু চক্র নিজেদের হীন স্বার্থ সিদ্ধির জন্য রাষ্ট্রীয় পরিবহন ব্যবস্থাকে (রেল, বি.আর.টি.সি ইত্যাদি) দূর্বল করে, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির মাধ্যমে এসব যান বাহনের তি সাধন করাসহ টেন্ডারবাজির কারনে নিম্নমানের সেবা প্রদান করা হচ্ছে যাত্রী সাধারণকে। মানুষের চলাচলের অধিকারকে রা করার জন্য এবং ঝামেলাহীন ও ভোগান্তিমুক্ত যাতায়াত ব্যবস্থায় একটি অভিন্ন ভাড়াভিত্তিক সুষ্ঠু পরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তোলা জরুরি। এ জন্য পাবলিক ট্রান্সপোর্টকে আরো প্রসারিত ও উন্নত করার দিকে মনোযোগ দিতে হবে। সেই সঙ্গে বাড়াতে হবে সিএনজি চালিত অটোরিকশা ও বিআরটিসি বাসের সংখ্যা। এবং কমাতে হবে প্রাইভেট কারের সংখ্যা।

মহিলাদের চলাচল সহজ ও স্বাচ্ছন্দ্যময় করতে বিশেষ পরিবহনের ব্যবস্থা থাকা প্রয়োজন। পাবলিক পরিবহন সেক্টরে বিদ্যমান নৈরাজ্য দূরীকরণে পৃথক স্বাধীন পাবলিক পরিবহন কমিশন গঠন জরুরী। আমাদের প্রত্যাশা সরকার পাবলিক ট্রান্সপোর্টে বিরাজমান অরাজকতা ও বিশৃঙ্খলা দূর করতে সচেষ্ট হবে এবং পরিবহন ব্যবস্থাকে একটি সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মধ্যে দাড় করতে আন্তরিক হবে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।