আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আবুলের "ভাবমূর্তি" আর লতিফের "বিশ্বাসঘাতকতা"

যুদ্ধাপরাধীর বিচার ও জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবী করছি

গত কয়েকদিন যাবত চরম ঠান্ডা চলছে টরন্টোয়। মাইনাস ১৫ থেকে মাইনাস ত্রিশের মধ্যে উঠানামা করছে। তার তুলনায় আজকে দিনে ছিলো প্লাস এক। মনে হচ্ছিলো বসন্তের হাওয়া বইছে। টুপি আর গ্লাভস ছাড়া হেটে হেটে যখন গাড়ীর পার্কিং এর দিতে যাচ্ছিলাম - তখন হঠাৎ মনে হলো - ভাবমূর্তি শব্দের অর্থটা আসলে কি? বিগত জোট সরকারের সময়কালে রাজাকার মন্ত্রী আর এমপিদের মুখে দেশের ভাবমূর্তির কথা শুনে শুনে মনে হতো এই বিষয়টা হয়তো মধ্যপ্রাচ্যের থেকে আমদানী করা কোন বিষয়।

মধ্যপ্রাচ্যের রাজা বাদশারা কথা কথায় ইন্টারনেট বন্ধ করে দেয় দেশের ভাবমূর্তি রক্ষার তাগিদে। কিন্তু গত কয়েকদিন আগে বাংলাদেশের নতুন যোগাযোগমন্ত্রীর মুখে ভাবমূর্তির কথা শুনে আবার মনে হলো - আসলে বিষয়টা কি! রেল ভবনে চুরি (!) করতে গিয়েছে কে বা কারা। এরা একই সাথে চিটাগাংগের অফিসেও একই ঘটনা ঘঠিয়েছে। লক্ষনে মনে হচ্ছে ডাল মে কুছ কালা হ্যায়। রেলের কোয়ার্টারে বড় হওয়ার সুবাদে এতোটুকু বলতে পারি - বাংলাদেশের কোন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে যদি টপ টু বটম চোরের কারনে পুরষ্কার দেওয়া হয় - তবে রেল বিভাগের কথা আগে আসবে।

সেখানে জেনারেল ম্যানেজার থেকে পিয়ন পর্যন্ত চুরি করে। তার উপরে সড়ক বিভাগের পর সবচেয়ে বেশী জমির মালিক হলো রেল বিভাগ। উপর তলার কর্তারা রেলের বিশাল জমি ছয় নয় করে বিপুল সম্পদের মালিক হয়। সাম্প্রতিক চুরির সাথে রেলের ভিতরের কোন বড় ধরনের দূর্নীতিকে ধামাচাপা দেবার একটা প্রক্রিয়া হয়তো থেকে থাকবে। কিন্তু যথাযথ তদন্ত না হওয়া পর্যণ্ত সকল ধারনা শুধু ধারনাই থাকবে।

মজার বিষয় হলো এই ঘটনা পুলিশ প্রধানমন্ত্রী উদ্বেগের পর এতোদ্রুত সমাধান করে ফেলেছে - যে কেউ যদি ভেবে বসে এরা পুলিশকে জানিয়েই কাজটা করেছে - তা হলে কি তাকে দোষ দেওয়া যাবে? এই ঘটনায় উদ্গিগ্ন যোগাযোগ মন্ত্রী যেভাবে সরকারের ভাবমূর্তি বিনষ্টের ষড়যন্ত্র আবিষ্কার করলেন - তাতে আবারো বোকা হয়ে ভাবলাম - আসলে আবুল হোসেন সরকারের ভাবমূর্তির সাথে চুরির ঘটনার যোগসূত্রটা পেলেন কোথায়। পুলিশকে যথাযথ সময়ে যৌক্তিকভাবে তদন্ত করে বিষয়টা সুরাহা করতে না দিয়ে মন্ত্রী সরকারের ভাবমূর্তি রক্ষার জন্যে পুলিশকে যেভাবে সক্রিয় করলেন - তাতে হয়তো আসল অপরাধী আড়ালেই থেকে যাবে। দ্রুত তদন্ত করে জজ মিয়ার নাটকের কাহিনী ভুলতে পারিনি বলেই আবুল হোসেনের সরকারের ভাবমূর্তি নিয়ে চিন্তিত ও পুলিশের দ্রুত ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন দেখে ভাবছি - আবারো কি সেই রাস্তায় বাংলাদেশকে নিয়ে যাবে "ভাবমূর্তি" আবুল হোসেন! (২) পশ্চিমে ভোটার এপ্যাথি বলে একটা কথা চালু আছে। ভোটাররা ভোট দিতে যায়না। আস্টেলিয়া ভোটারদের ভোট দিতে বাধ্য করার আইন করেছে।

কিন্তু ওবামাকে ভোট দিতে যেভাবে মানুষ গেছে - তাতে আমেরিকনরা আশাবাদী হয়েছে - মানুষ ভোট দেয়। বিরাট সফল একটা সংসদ নির্বাচনের পর একই দিনে উপজেলা নির্বাচন করতে গিয়ে নির্বাচন কমিশন ফ্লপ মেরেছে। পর্যাপ্ত প্রচারের অভাব আর শহরে বসবাসকরা ভোটারদের ছুটি না থাকায় বিরাট অংশের মানুষ ভোট দেয়নি। তা ছাড়া উপজেলা বিষয়টা মানুষের কাছে পরিষ্কার না থাকায় মানুষ ভোট দিতে উৎসাহ বোধ করেনি। তার উপর বিভিন্ন যায়গায় সরকারী দলের প্রভাবে নির্বাচনের গ্রহনযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

প্রশ্ন হলো - নির্বাচনী আইনে যেখানে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে প্রার্থীদের দলীয় পরিচয় থাকবে না - কিন্তু প্রচারমাধ্যমগুলো যথাসম্ভব দলীয় পরিচয় নিয়ে ব্যস্থ থেকেছে। প্রকাশ্যে দলীয়ভাবে মনোনয়ন দেওয়াও হয়েছে। তাই দলীয় পরিচয় লুকিয়ে ভাসুরের নামের মতো উচ্চারন করার চেয়ে সরাসরি দলীয় ভাবে নির্বাচনের ব্যবস্থা করা দরকার। প্রচার মাধ্যমে সরকারী দলের প্রভাব বিস্তারকারীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশী আসছে আব্দুল লতিফ বিশ্বাসের নাম। যদিও আগের যে কোন মন্ত্রীর আচরনের তুলনায় এই ঘটনা তেমন কিছুই না - তারপরও নতুন সরকারের প্রতি মানুষের সুউচ্চ বিশ্বাসের সাথে "বিশ্বাসঘাতকতা" করেছে মন্ত্রী লতিফ বিশ্বাস।

আশা করছি লতিফ বিশ্বাস এবং উনার নেতারা বুঝতে পারবেন যে উনি গনতন্ত্রের নবযাত্রায় একটা রোডব্লক বসিয়ে দিয়েছেন একটা স্থানীয় নির্বাচনে অসদাচরন করে - সেই রোডব্লকটা সরানোর একমাত্র পথই হলো মন্ত্রীসভা থেকে লতিফ বিশ্বাসের বিদায়। আর যে এমপিদের নামে অভিযোগ এসেছে - আশা করছি নির্বাচন কমিশন কোন রকম দ্বিধা ছাড়াই এদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবেন। যতটুকু জানি কুমিল্লার মঞ্জুরুল ইসলাম মুন্সীর জেল হয়েছে নির্বাচনী আইন ভঙ্গ করার অপরাধে - তাহলে কক্সবাজারের এমপি বদির জেল হবে না কেন?

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।