আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ঐশীর নতুন কথা

এসবি কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না বেগম হত্যা মামলায় দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রত্যাহারের আবেদন করেছেন তাদের মেয়ে ঐশী রহমান। ঢাকার মহানগর হাকিম জবানবন্দি প্রত্যাহারের আবেদন নথিভুক্ত করার আদেশ দিয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার ঐশী একই সঙ্গে জামিনের আবেদন করেন। তবে হাকিম এরফান উল্লাহ তার জামিন আবেদন নাকচ করে দেন। জামিন আবেদনের শুনানির জন্য ঐশীকে  দুপুরে আদালতে হাজির করা হয়।

তিনি ১৬৪ ধারায় দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রত্যাহারের জন্য লিখিত আবেদনে বলেন, পুলিশ নির্যাতনের মাধ্যমে তাকে ওই জবানবন্দি দিতে বাধ্য করে।

ঐশীর পক্ষে জামিন আবেদনের শুনানি করেন তার আইনজীবী মাহাবুব হাসান রানা ও এটি এম আসাদুজ্জামান। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে এর বিরোধিতা করেন হাফিজুর রহমান তোতা ও আযাদ রহমান। এই মামলার অপর আসামি ওই বাসার কাজের সুমীকেও আজ আদালতে হাজির করা হয়। কিশোরী বিবেচনায় বিচারকের খাস কামরায় সুমীর জামিন শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।

এক্ষেত্রে শুধু সুমীর আইনজীবী ও রাষ্ট্রপক্ষের পুলিশ কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। শুনানী শেষে কিশোর আদালতের বিচারক আনোয়ার সাদাত জামিন আবেদন নাকচ করে দেন। আদালতের আদেশে  ঐশীকে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে এবং সুমিকে টঙ্গির কিশোর সংশোধন কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে।

জবানবন্দি প্রত্যাহারের আবেদনে ঐশী রহমান বলেন, গত ১৭ আগস্ট পল্টন থানায় স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করলে আমাকে নিয়ে তদন্ত কর্মকর্তা বিভিন্ন জায়গায় অভিযান পরিচালনা করেন। আমাকে ৫ দিনের রিমান্ডে নিয়ে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেন ও ভয়ভীতি দেখান ।

এক পর্যায়ে আমাকে বলেন, 'আমাদের কথা মতো তুমি যদি আদালতে বিচারকের সামনে আমাদের শেখানো কথা না বলো তাহলে তোমাকে নেশাজাতীয় দ্রব্য খাইয়ে মেরে ফেলবো অথবা ক্রস ফায়ারে মেরে ফেলবো। তখন আমি নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে এবং মৃত্যু ভয়ে তাদের শেখানো কথা আদালতে বলতে বাধ্য হই। আদালতে আমার জবানবন্দী সত্য নয় এবং স্বেচ্ছাপ্রণোদিত নয়।

গত ২৪ অগাস্ট রিমান্ড শেষ ঐশী মহানগর হাকিম আনোয়ার সাদাতের খাস কামরায় ওই জবানবন্দি দেন।

পরে পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, ঐশী একাই তার বাবা-মাকে হত্যা করেছে বলে জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন।

ঐশীর চাপে সুমি হত্যাকাণ্ডে সহযোগিতা করতে বাধ্য হয়।

জামিন শুনানীতে ঐশীর আইনজীবী প্রকাশ রঞ্জন বিশ্বাস ও মাহাবুব হাসান রানা আদালতে বলেন, ঐশী রহমানকে রিমান্ডে মৃত্যুর ভয় দেখিয়ে, নেশা খাইয়ে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে তাকে বাবা-মায়ের হত্যাকারী হিসাবে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে বাধ্য করা হয়েছে। এর আগে ঐশীকে পুরুষ পুলিশ সদস্যরা প্রহারও করেছেন। ঐশী শারিরীক ও মানসিকভাবে অসুস্থ।

অপরদিকে জামিনের বিরোধীতা করে আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা (পুলিশের উপ-পরিদর্শক) এস এম গাফফারুল আলম আদালতকে বলেন, আদরের সন্তান ঐশীকে উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপন থেকে ফেরাতে প্রাণপন চষ্টো চালান মমতাময়ী মা ও স্নেহবান বাবা।

কিন্তু সব চেষ্টাই বিফলে যায়। অবশেষে এর খেসারত হিসাবেই সস্ত্রীক জীবন দিতে হলো তাদের। এই আসামিই ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেন নিহতদের। এই মামলা এখনও তদন্ত অবস্থায় আছে। আসামি জামিনে মুক্তি পেলে মামলার তদন্ত কাজে বাধা সৃষ্টি করতে পারে।

গত ১৬ অগাস্ট রাজধানীর চামেলীবাগের ফ্ল্যাটে এসবি পরিদর্শক মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না বেগমের ক্ষতবিক্ষত লাশ পায় পুলিশ। পরদিন ঐশী পুলিশের কাছে ধরা দিলে তাকে রিমান্ডে পাঠান আদালত। অক্সফোর্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের 'ও' লেভেলের শিক্ষার্থী ঐশীর বয়স বিদ্যালয়ের নথি অনুযায়ী ১৮ বছরের কম হওয়ায় তাকে রিমান্ডে নেয়ায় শিশু আইন লঙ্ঘন হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। এই সমালোচনার মধ্যে আদালতের অনুমতি নিয়ে গত ২১ অগাস্ট ঢাকা মেডিকেলের চিকিৎসকদের মাধ্যমে তাদের বয়স পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষার প্রতিবেদনে চিকিৎসকরা জানান, ঐশীর বয়স ১৯ এর কাছাকাছি।

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com/

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।