আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এন্টিগল্প > বিটার মুন > পার্ট ওয়ান

যে শিক্ষক বুদ্ধিজীবী কবি ও কেরানী প্রকাশ্য পথে হত্যার প্রতিশোধ চায়না আমি তাদের ঘৃণা করি
১৮+ ডোবারম্যান পিনশার! বিশাল সাইজের কুকুরটা কোন শব্দ করল না কেবল আগন্তকের দিকে ঠান্ডা দৃষ্টি বুলিয়ে নিল একবার। দুর্গমত বাড়িতে একটা কুকুর থাকবে তাতে অবাক হওয়ার কিছু ছিল না,তাই বলে ডোবারম্যান পিনশার! দারোয়ানের হাতের চেইটা টান টান হতেই ইমরান পকেট থেকে কার্ড বের করে হাতে দিল। ট্রেইন্ড দারোয়ান অযথা কথা না বাড়িয়ে ইন্টারকমে ভেতরে কথা বলে নিল। তারপর প্রায় নিঃশব্দেই খুলে দিল স্লাইডিং গেট। ‘সোজা সিটিংয়ে চলে যান স্যার’।

'এই প্রথম কথা বলল সে। দুপাশে ফুলের কেয়ারি মাঝ বরাবর চিরে কঙ্ক্রিটের পথ যেয়ে মিশেছে দোতলা বাড়িটার গাড়িবারান্দায়। কেয়ারির লাগোয়া দিকের গাছ গুলো ছোট হলেও পাঁচিলঘেঁসা গাছগুলো বেশ বড়। সেই গাছগাছালির ফাঁকে ধূসরসাদা বাড়িটা কেমন রহস্যময় মনে হয়। পুরু কার্পেটের ওপর অনেকখানি দেবে যাচ্ছিল জুতো।

সিটিংয়ে ঢুকতেই আর একজন মৃদুস্বরে বলল-‘ওপরে উঠে যান স্যার, ম্যাডাম ওপরে আছেন’। কোন কিছু না বলেই ইমরান ঘোরানো সিঁড়ি বেয়ে উঠে গেল দোতলায়। ব্রাসরেইলে হাত দিয়েই বুঝল মেহগনি! সিটিংয়েই দেখেছে নামকরা সব পেইন্টিংস। স্টেয়ার কেসের উল্টো দিকে দেওয়াল জুড়েও দামি দামি সব পেইন্টিংস। দোতলায় উঠে দেখল নাক বরাবর রুমের দরোজাটা সামান্য খোলা।

ধরে নিল ওটাই মিসেস জেরিনের কামরা। তার পরও সৌজন্য দেখিয়ে দরোজায় টোকা দিতে চাইল.... ঠিক সে সময়েই ভেতর থেকে মিহি কণ্ঠ ভেসে এলো.....'চলে আসুন প্লিজ’। ঘরে ঢুকে নিচু গলায় ‘থ্যাংকস’ বলে বিশাল ডাবল সোফাটায় গিয়ে বসল ইমরান। ঠিক ওর উল্টো দিকে সিঙ্গেল সোফায় পায়ের ওপর পা তুলে যিনি বসে আছেন তিনিই মিসেস জেরিন। জেরিন হায়দার।

কতক্ষণ কেটে গেছে মনে নেই ইমরানের। ও শুধু যে জেরিনকে দেখছে তাই না,মাথা ঘুরিয়ে পুরো ঘরটা দেখে নিয়েছে। দামি আসবাব,অত্যন্ত রুচিশীল ভাবে সাজানো। ঘরে এমন কিছুই নেই যা দেখে জাবদা কিছু মনে হতে পারে। চার দেওয়ালে চারটা বিশাল পেইন্টিং এতটাই জীবন্ত যেন মনে হচ্ছে জ্যান্ত মানুষ ছবি হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

আবারো ভীরু অথচ দৃঢ় ভঙ্গিতে জেরিনকে দেখল ও। দুধসাদা একটা শিফন জর্জেট,সাথে স্লিভলেস। তার নিচে রিভার্স কালারের অর্ন্তবাসের আভা প্রায় স্পষ্ট। দুই ভ্রুর মাঝখানে কালো টিপ। আধাআধি চুল অবিন্যাস্তভাবে মুখের একপাশ ঢেকে নেমে এসেছে।

অন্যপাশের গুলো পেছনে। খুব খেয়াল না করলে চোখের নিচের হালকা শ্যাডো বোঝা যায় না। নিটোল মুখের কোথাও স্কেল ফেলে মেপে অসঙ্গত কিছু বের করা যাবে না। টিকোলো নাকের নিচে ঠোঁটের আভা মনে করিয়ে দেয় প্রজাপতির কথা। কণ্ঠার হাড়দুটো সামান্য উঁচু।

সেখান থেকে বড় গলার স্লিপলেসের নিচে এসে চোখ থেমে যায় ইমরানের। কিছুতেই বয়স আন্দাজ করতে পারে না ও । কতক্ষণ কেটে গেছে খেয়াল নেই,হঠাৎ খিল খিল শব্দে হেসে ওঠেন জেরিন....... ‘টেলিফোনে কিন্তু মনে হয়নি আপনি এতটা ইয়াং!’ ‘ওহ গড,সরি! গ্লাড টু মিট য়্যু ’ ‘গ্লাড টু মিট য়্যু ’ ‘কি আশ্চর্য্য আমরা এতক্ষণ কোন কথা বলিনি !’ ‘ইটস ওকে’, কি নেবেন,হট অর কোল্ড?’ হড়বড় করে কোল্ড বলতে গিয়ে মুহূর্তে সামলে বলল-‘কোল্ড’। যেন চাবি দেওয়াই ছিল,কিছুক্ষণ পরই ড্রিংসট্রলি ঠেলে আনল একজন। এবং এবার ইমরান সিওর হলো এবাড়িতে কোর নারী পরিচারিকা নেই।

সকলেই পুরুষ। ড্রিংস নিয়ে মুখে ছোঁয়ানোর আগেই জেরিন বলে উঠলেন....‘ইফ য়্যু ডোন্ট মাইন্ড আমি একটু ভেতরে.....’ ওহ্ ইয়াহ, নো প্রব। ‘মাই প্লেজার’ বলে জেরিন ভেতরে চলে গেলেন। সিগারেট ধরিয়ে একগাল ধোঁয়া ছেড়ে ক্ষণিকের জন্য চোখ বন্ধ করল ইমরান.......... দিন পনের আগে পত্রিকায় একটা বিজ্ঞাপন দেখে ঝোঁকের বশে সিভি পাঠিয়ে দিয়েছিল। সাধারণত এই ধরণের কেসগুলো ফেক হয়।

কিন্তু দুই দিনের মাথায় ফোন কল পেয়ে একটু অবাকই হয়েছিল!অনেকক্ষণ কথা বলার পর শেষে ভদ্রমহিলা বলেছিলেন-‘য়্যু আর সিলেক্টেড’'। মোটামুটি ওই দিনই ঠিক হয়ে গেছিল জেরিন তাকে স্বামী হিসেবে নির্বাচিত করেছেন,শর্ত একটাই ছিল,বিষয়-আশয় বা এ্যাসেটের পূর্ণ কতৃত্ব থাকবে মিসেস জেরিন হায়দারের হাতে। তার পর আজ সেই নিদৃষ্ট দিনে ইমরান রিলেশন ফাইনালাইজ করার জন্য এসেছে। চল্লিশ থেকে পঞ্চাশের মধ্যে বয়স হলেও বোঝার উপায় নেই। চমৎকার মেদহীন শরীর,কাঁচাপাকা ব্যাকব্রাশ চুল,পাঁচ ফিট ছয় বিপত্নিক ইমরান একমাত্র মেয়েকে শশুর বাড়ি দিয়ে একাই থাকে।

মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানীর সিইও হিসেবে সোসাইটির টপ লেভেলে অবাধ যাতায়াত। নিয়ম করে প্রতি রাতে ছয়-সাত পেগ টানার পরও চোখের নিচেটা ফুলে ওঠেনি। ইংলিশ সার্স,গ্যাবার্ডিন,অক্সফোড মিলিয়ে ঠিক ধোপদুরস্ত কেউকেটা মনে না হলেও ইমরান স্মার্ট,সুপুরুষ। অতিরিক্ত ধূমপানে ঠোঁট দুটো কালো হওয়া ছাড়া গোটা প্রফাইলে আর কোন স্ক্র্যাচ নেই। ভাবতে ভাবতে কখন সিগারেটের আগুন ফিল্টার ছুঁয়েছে টের পায়নি।

হঠাৎ আঁচ লাগায় ওটা আ্যাশট্রেতে গুঁজে সোজা হয়ে বসে ও। এই সময়ে ফিরে আসেন জেরিন। তার পেছন পেছন ঘরে ঢোকে এক কিশোরী। এর কথাই ফোনে বলেছিলেন জেরিন। ডোনা।

জেরিনের একমাত্র মেয়ে। মায়ের কাছে থাকে না। কনভেন্টে পড়ে। কনভেন্টের হস্টেলেই থাকে। ছুটিছাঁটায় আসে।

এখন জুন ফাইনালের পর লম্বা ছুটি। জেরিন এসে আগের সোফাতে বসলেও ডোনা এসে ধপ করে বসে পড়ে ইমরানের পাশে। দুলে ওঠে সোফা। প্রাণখোলা হেসে সোজা ইমরানের দিকে চেয়ে ডোনা বলে ওঠে..... ‘হাই ! আপনি ইমরান ? গোয়িং টু বি মাই ফাদার?’ কথাটা শেষ করে আরো জোরে হেসে ওঠে....জেরিন কপট শাসনের ভঙ্গিতে বলেন- ‘ডোনা বি কোয়াইট ম্যাম’। ডোনাও মায়ের অনুকরণে বলে ওঠে ‘অফকোর্স,বি কোয়াইট ম্যাম’'।

তার পর নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে বাবল গাম চিবোতে থাকে। জেরিন আর ইমরান যখন তাদের আর্ন্ডস্ট্যান্ডিং বিষয়াদি নিয়ে দরকারি কথাগুলো বলছিলেন, ডোনা তখন আড়চোখে ইমরানকে দেখছিল। এবার আরো খানিকটা কাছে সরে এসে মুখ নিচু করে একেবারে ইমরানের মুখের কাছে মুখ নিয়ে ফটাস করে একটা বাবল ফাটাল! ফিস ফিস করে উচ্চারণ করল-‘হাই’! ইমরান প্রত্ত্যুত্তোর করার আগেই চমকে উঠে দেখল তার ডান উরুর ওপর বাম হাত রেখে চাপ দিচ্ছে ডোনা ! ঝট করে সোজা তাকাল জেরিনের দিকে, না, দেখছে না! কিছুক্ষণ হাতটা খেলা করার পর আরো আস্তে আস্তে ডোনা বলল-‘ম্যামকে তোমার পছন্দ হয়েছে’? ইমরান অজানা শিহরণে কিছুই বলতে পারছিল না। ওর চোখ কেবলই জেরিনের ওপর ঘোরাঘুরি করছিল। নিরবতা ভেঙ্গে জেরিন বললেন-‘ ডোনার ড্যাড যখন মারা যান ডোনার বয়স তখন মাত্র এক বছর’।

ইমরান ভাবার চেষ্টা করে তাহলে এখন ডোনার বয়স কত? ষোল,আঠার,নাকি চোদ্দ? বোঝার উপায় নেই। টপ-স্কার্ট,সাথে হাটুঅব্দি সক্স,পায়ে মিকিমাউস স্যু, দুটো বেণী ঠিক বুকের ওপর লুটোচ্ছে। কোথাও কোন অর্নামেন্টস নেই। গোল গোল চোখ দুটোতে সারাক্ষণ দুষ্টমি হাসি লেগেই আছে। এ সময় আরো ঘেঁসে আসায় একটা অদ্ভুতধরণের পারফিউমের গন্ধ নাকে এলো,ওয়াইল্ড।

নিজেকে খুব শক্ত করে রাখার পরও বেশ বুঝতে পারছে কোথায় যেন একটা পরিবর্তন হয়ে চলেছে। ‘বাবার ছবি দেখা ছাড়া ওই বিষয়ে ডোনার আর কোন অনুভূতি নেই। আশা করব আপনাকে ও ফ্রেন্ডলিই নেবে’। ‘ও নিয়ে টেন্স করবেন না,আমি মানিয়ে নেব। আমার মেয়েটাও এই বয়সী।

নো প্রবলেম’। কথাটা বলল বটে তবে ভেতরে ভেতরে বেশ বুঝে নিল এই মেয়ে নিয়ে ভোগান্তি আছে। ‘ডোনা ডার্লিং,তোমার রুমে যাও,আমরা কিছু দরকারি কথা সারব'’। ‘ওক্কি ম্যাম’ বলে চলে যাওয়ার সময় আবার একটা বাবল ফাটিয়ে ইমরানের সঙ্গে শেকহ্যান্ড করে নাচতে নাচতে চলে গেল ডোনা। তারপর খুব নিচু স্বরে দুজনের মধ্যে প্রায় আধা ঘন্টা জরুরি কথা শেষ হলো।

ওই বেলা ফিরে গিয়ে ইমরান তার মালপত্র নিয়ে এলো। মালপত্র বলতে একটা স্যুটকেস শুধু কাপড় চোপড় ভরা। রাতে তিন জন ডাইনিংয়ে আরো খানিকটা ফ্রি হওয়ার চেষ্টা করল। প্রথম দিন ইচ্ছা করেই জেরিন পাশের একটা ঘরে ইমরানের থাকার ব্যবস্থা করলেন। মেয়ের সামনে কি একটু লজ্জা পাচ্ছিলেন ? হবে হয়ত! ইমরান নিজে মোটামুটি উচ্চবিত্তই কিন্তু এত বৈভব কোন কালেও দেখেনি।

ওর শোবার ঘরটা ঠিক জেরিনের পাশেই। রাত এগাটা পর্যন্ত বাড়ির এই নতুন সদস্যকে নিয়ে একধরণের ইম্পোজড ‘আপন’করার কসরৎ চলল। সাড়ে এগারটার দিকে নিজের ঘরে এসে সোজা ওয়াশে চলে গেল ইমরান। কেন গেল তা নিজেও বুঝতে পারল না। টিভি,মিউজিক সিস্টেম,চেঞ্জার সবই আছে,তার পরও কিছুই করল না ও সোজা বিছানায়।

জানে নতুন জায়গা,ঘুম আসবে না। প্রস্তুতি ছিল। একটা জোলিয়াম-৫ গিলে শুয়ে পড়ল। কতক্ষণ ঘুমিয়েছে জানে না,হঠাৎ ক্যাঁচোর ক্যাঁচোর শব্দে ঘুম ভেঙ্গে গেল। একটা সিগ্রেট ধরিয়ে লম্বা ব্যালকনিতে বেরিয়ে দেখল জেরিন দোলনায় বসে দুলছেন।

কাছে না গিয়ে ওখানেই দাঁড়িয়ে থাকল ও। দেখার পরও বেশ কিছুক্ষণ পর মুখ খুললেন জেরিন-‘ঘুমান নি’? ‘হ্যাঁ, ঘুমিয়ে ছিলাম,ঘুমটা ভেঙ্গে গেল, আপনি ? ‘আমি তো আরো পরে ঘুমাই, আসুননা এখানে আসুন’। ইমরান কাছে গেলে জেরিন একটু সরে ওকে পাশে বসার ইশারা করল,ইতস্তত ভাবটা কাটতেই ইমরান পাশে বসেএকই ভাবে দোল খেতে লাগল। আধা ঘন্টা পর দেখা গেল দুজন পাশাপাশি জেরিনের ঘরে ঢুকছে। আরো পনের মিনিট পর জেরিনের ভেতর ভাবনার ঝড় বয়ে যেতে লাগল।

পনেরটা বছর কি দীর্ঘ সময়! কি দীর্ঘ একাকিত্ব! এর মধ্যে স্কোপ হয়নি তা নয়,রুচিতে বেধেছে। সেল্ফ এ্যামুজমেন্টের যে পদ্ধতিগুলো টিনেজে বা বিয়ের আগে প্রচলিত ছিল সেগুলোতেও আসক্তি হতো না। রেটেড মুভি দেখে কখনো কখনো ভিষণ একসাইটেড হয়ে উঠত,কিন্তু টোটাল ব্লেন্ডিং হবে না ভেবে ইউজ করতেও মন চাইত না। তার পর একসময় মনে হয়েছে বাড়ির কর্মচারিদের কথাও, কিন্তু এ্যারিস্ট্রোক্র্যাসির বর্ম ভেদ করতে পারেনি সেই ইচ্ছা। এত দিন পর তাই জড়তা,অনভ্যাস আর প্রবল বিচ্ছুরণের শঙ্কায় জেরিন ঠান্ডা হয়ে যেত লাগল।

আরো পনের –বিশ মিনিট পর চাপা নিশ্বাস মৃদু সংলাপ। অভিজ্ঞ একজোড়া নারী-পুরুষ তার পরের অনেকটা সময় সাপের মত পেঁচিয়ে,কখনো সাগরে মোচার খোলায় ভাসার মত ভেসে,সব শেষে আনন্দ চিৎকার করে যখন শ্রান্ত হলো তখন ব্যালকোনি আলোকিত করা চাঁদটা অনেকটা দূরে সরে গেছে। দিনের পর দিন কেটে একদিন ডোনার ছুটি শেষ হলো। ঠিক হলো ম্যানেজার নয়,ইমরানই ডোনাকে কনভেন্টে দিতে যাবে। জেরিন হয়ত কিছুতেই এই সিদ্ধান্ত নিতেন না,যদি জানতেন এই ক’দিনে ডোনা কতটা ফ্রি হয়ে গেছে ইমরানের সাথে! পর দিন রাত এগারটার দিকেই রওনা হয়ে গেল ওরা।

মেটালিক ব্লু কালারের ক্রাউনটা রাজহাসের মতই হেলেদুলে রাস্তায় পড়ল। প্রায় দুশো মাইলের জার্নি। খাবার-দাবারের সব ব্যবস্থাই গাড়িতে দেওয়া আছে। শহরের ঘিঞ্জি পার হওয়ার সময়টুকু যেন অতি কষ্টে ব্রেক করে ছিল ডোনা। গভীর রাতে ফাঁকা মহাসড়কে পড়তেই ডোনার দুষ্টুমি শুরু হয়ে গেল।

ড্রাইভার রিয়র ভিউ মিররে কিছুই দেখবে না ধরে নিয়েই ডোনার হাতটা সচল হয়ে উঠল। ইমরানের হাঁটুতে ল্যান্ড করে ক্রমশঃ ওপর দিকে উঠে আসছে। ঠিক জাংশনে এসে ব্রেক করতেই ইমরান থাবা দিয়ে হাতটা সরিয়ে দিল। পরস্পরের মুখে কি দেখে দুজনই দুপাশে সরে গেল। পরের তিন চার ঘন্টা আর কেউ কথাও বলল না।

রাত দুটোর দিকে দেখা গেল ইমরানের পায়ের ওপর মাথা রেখে নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে আছে ডোনা। ইমর নের হাত স্নেহের পরশ বুলিয়ে দিচ্ছে। ওর মনে পড়ে গেল রাফিয়ার কথা ! কত দিন দেখা হয় না...... সকালে বর্ডারের সকল আনুষ্ঠানিকতা সেরে ওপারে গিয়ে সুমোতে চাপতেই দশটা বেজে গেল। শিলিগুড়ি পৌঁছে হোটেলে উঠতে গিয়েই পরাজিত হতে হল ইমরানকে। ডোনা কিছুতেই সেপারেট রুম নিতে দেব না।

তার যুক্তি মাত্র তো একটা রাত। তাছাড়া আমি হোটেলে একা ঘুমাতে পারি না। ম্যানেজারও সায় দিয়ে বলে উঠল-‘অসুবিদে কি দাদা, মামনি যকন বলচে নিন,একটা ডাবল বেডই নিন,এসি হবে...বাপ মেয়ে থাকবেনক্ষণ..' ডোনার ফরমায়েশ মত কিছু কেনা কাটা করার জন্য সন্ধ্যের দিকে ইমরান বাইরে গেল। যাবার সময় ডোনার আপত্তি স্বত্বেও বাইরে থেকে তালা মেরে গেছিল। ফিরে এসে তালা খুলেই চমকে উঠল ইমরান !গোসল-টোসল সেরে ডবল খাটের ওপর বেড়ালের মত গুটিশুটি মেরে ঘুমিয়ে আছে ডোনা।

এতে চমকানোর কিছু হতো না যদিনা ওর পরনে শুধু মাত্র ব্রা-পেন্টি না থাকত! তাড়াতাড়ি একটা চাদর গায়ের ওপর ফেলে ডেকে তুলল ওকে। ফিক করে হেসে বড় একটা হাই তুলে উঠে বসল ডোনা। দশটার ভেতর সার্ব করা ডিনার শেষ করে সিগ্রেট ধরিয়ে নিজের খাটে আধোশোয়া হয়ে ম্যাগাজিন খুলে ধরল চোখের সামনে। অন্য দেওয়ালের সঙ্গে লাগানো খাটে ডোনা টান টান হয়ে ছাতের দিকে তাকিয়ে আছে। আধা ঘন্টা না যেতেই- ‘মিঃ ইমরান ঘুমালে?’ ‘না।

ডোনা তোমাকে বলেছি ড্যাড বলবে?’ ‘নো,নেভার। আমার ড্যাড মরে গেছে, য়্যু আর নট মাই ড্যাড?’ ‘ওক্কে বেইবি,তাহলে আঙ্কেল বল এ্যাটলিস্ট?’ ‘নোওপ, আই কান্ট সে ড্যাড অর আঙ্কল....ডু য়্যু আন্ডাস্ট্যান্ড মিঃইমরান?’ মেজাজ খারাপ হয়ে ওঠায় আর কথা বাড়াল না ইমরান। মেইন লাইটটা অফ করে সাইড টেবিলের শ্যাডোটাকে শুধু জ্বালিয়ে রাখল। ঘুম ঘুম ভাব এসে গেছিল ওর হঠাৎ দেখল ওর খাটে উঠে এসেছে ডোনা! এসে সোজা ইমরানের শরীরের দুপাশে পা দিয়ে উরুর ওপর বসে পড়ল !'হোয়াটস দিস?' ধমক দিয়ে উঠল ইমরান.....‘নাথিং, ভয় লাগছে.....আমি এখানে শোব....এনি প্রব ?' আবারো জোরে ধমক দিতে গিয়েও শেষ করতে পারল না,তার আগেই ওর মুখে হাত চাপাদিয়ে বাচ্চা মেয়ের মত বুকের ওপর শুয়ে পড়ল ডোনা.....কি হতে চলেছে ? বন বন করে ভাবনার চাকা ঘুরে চলেছে ইমরানের মাথায়.....গিল্টি ফিলিংস আর অন্য একটা ফিলিংস প্রচন্ড যুদ্ধ করে চলেছে............. চলবে...
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।