আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ফেলানির লাশ, ভারতের নগ্ন রুপ ও আমাদের কিছু হিপোক্রেটিক বুদ্ধিজীবি



বউকে নিয়ে সিনেমা দেখতে যাবার কথা ছিল। "শুধ দেসি রোমান্স। " ইয়াশ রাজ ফিল্মসের ব্যানারের ছবি। ভাল হবার কথা। ট্রেলারটাও আকর্ষনীয়।

গেলাম না। ইংরেজি ছবি দেখলাম। বিনিময়ে তিন ডলার জনপ্রতি বেশি খরচ হলো, তবু মনটা একটু তৃপ্ত হলো। ভারতীয় চলচ্চিত্রের আয়ে বিশটা ডলার অন্তত কম পড়বে। বউকে বলে দিলাম, আপাতত তার ভারতীয় শাড়ি, কামিজ এবং গয়না আলাদা থাকে তুলে রাখতে।

একজন ভারতীয় কনজিউমার কমিয়ে দিলাম। আমার ভারতীয় পাঞ্জাবিও পাকিস্তানি শেরওয়ানির মত আলাদা করে তোলা থাকলো। কনজিউমার আরেকজন কমলো। মাকে ফোন করে বলে দিলাম, আপাতত এয়ারটেলের সিম ব্যবহার না করতে। অন্তত একজন গ্রাহক কমলো।

বাসায় হিন্দি সিরিয়াল দেখার বদলে ইংরেজি/বাংলা সিরিয়াল দেখার পরামর্শ দিলাম। বিনোদন নেহায়েত কম হবার কথা না। টিআরপি রেটিংয়ে একটি পরিবার কমলো। ভারতীয় বন্ধুদের বললাম, "আমার এ অসহযোগ তোমাদের সাথে নয়। তোমরা আগের মতই আমার বন্ধু থাকবে।

তোমাদের দেশের প্রতিও আমার কোন অশ্রদ্ধা নেই। কিছু মানুষের অন্যায়ের জন্য দেশকে গালাগালি করার মত নিম্নরুচি আমি লালন করি না। আমি শুধু তোমাদের সরকারের বিচারের নামে এক পরিহাসের প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমার দেশের এক মেয়ে সীমান্তের কাঁটাতারে মৃত হয়ে ঝুলছিল, আজকে তার খুনীকে তোমাদের বিএসএফ আদালত মুক্তি দিয়েছে। আমি সামান্য মানুষ, আমার কোন কিছু করার ক্ষমতা নেই।

কিন্তু যেটুকু সামর্থ্য আমার আছে, আমি সেটারই সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করছি। " যে সমস্ত বুদ্ধিজীবী শুধু মাত্র পাকিস্তানের বদনাম করতে করতে মুখে ফেনা তুলে ফেলে এবং ভারতের অন্যায় দেখেও চুপ করে থাকে, তাদের বলছি, বাড়িতে এসে যখন কেউ নিজের মাকে অপমান করে যায়, তখন মায়ের সন্তান হিসেবে উচিৎ সে অন্যায়ের প্রতিবাদ করা। অপমানকারী পাড়ার গুন্ডা ছিল, নাকি আপন চাচা/মামা ছিল, সেটা দেখার আগে দেখা উচিৎ অপমানিত মায়ের বিবর্ণ মুখ। এরকম একচক্ষু হরিণের মত হিপোক্রেটিক ধর্ম পালন করলে লোকজন আপনাদের মুখে থুথু দিবে। এবং আপনাদেরও সেটাই প্রাপ্য।

সরকার বাহাদুর এবারও ভারতের অন্যায়ের প্রতিবাদ জানাবেন না। বিরোধী দল কিছু ভোট বেশি পাবার আশায় সরকারের সমালোচনায় লিপ্ত হবে। বেচারী মেয়েটির বাবা মা মেয়ের খুনের ন্যায় বিচারের আশায় ভিখিরির মত দ্বারে দ্বারে হোচট খাবেন। তবে একজন সাধারন বাংলাদেশী হিসেবে আমি আমার ব্যক্তিগত অসহযোগ চালিয়ে যাব। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অসহযোগীতায় যুক্ত হলো এবার ভারতের নাম।

ফেলানি সহ সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত হাজারো বাঙালির আত্মা যদি এতে কিছুটা হলেও শান্তি পায়।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১০ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.