আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আপেল কুল - সাময়িক

রাজা

আপেল কুল চাষে কি লাভ? প্রতি বছর ফল হয়। প্রচুর ফলন দেয় ও তাড়াতাড়ি বাড়ে। বোটা শক্ত, তাই সহজে ঝরে পড়ে না। বানিজ্যিকভাবে বাগানে বা বাড়ির আঙ্গিনা ও টবে চাষ করা যায়। খরা, বন্যা-জলাবদ্ধতা ও লবণাক্ততা সহ্য করতে পারে।

বীজ ছোট ও শাঁসের পরিমাণ বেশি। কলম রোপণের ৮ মাসের মধ্যে ফল পাওয়া যায়। রোগবালাই-এর আক্রমণ তুলনামূলকভাবে কম। পুষ্টিমাণ অন্য যে কোন কূলের চেয়ে বেশি। অন্যান্য কুলের চেয়ে বেশি মিষ্টি ও সুস্বাদু।

খেতে মচমচে ও কষহীন। অন্যান্য কুলের চেয়ে বেশি দিন সংরক্ষণ করা যায়। কুল বরই আমাদের জীবনের সাথে মিশে আছে। কুলের চাটনি বা আচারের কথা মনে হলে কার না জিভে পানি আসে। কুল বরই-এর অনেক ধরনের ব্যবহার থাকায় এর কদর অনেক বেশি।

পাকা-টাটকা অবস্হায় ও শুকনো অবস্হায় এটি খাওয়া যায়। তাছাড়াও এটি বিভিন্ন খনিজ ও ভিটামিন সি, ভিটামিন এ-এর ভাল উৎস। সবচেয়ে বড় ব্যাপার হচ্ছে, কুল-ই আমাদের দেশের একমাত্র শীতকালীন মৌসুমী ফল। যখন অন্য কোন দেশীয় ফল বাজারে থাকে না তখন এ ফল বাজারজাত করা যায়। কাজেই কুলের গুরুত্ব ও ব্যবসায়িক সম্ভাবনা অনেক বেশি।

বর্তমানে ব্যবসায়িক ভিত্তিতে আপেলকুল এর চাষাবাদ শুরু হওয়ায়, লাভজনক এ কৃষি পণ্যটির প্রতি আমাদের দেশের অনেক কৃষকের আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে। কুলের খাবারযোগ্য প্রতি ১০০ গ্রামে নিম্নলিখিত পুষ্টি রয়েছে- উপাদান পরিমাণ জলীয় অংশ ৮০ খনিজ ০.৫০ খাদ্যশক্তি ৮৫ আমিষ ১ চর্বি ০.৩০ শর্করা ১৮ ক্যালসিয়াম ১০ মিলিগ্রাম লৌহ ১.৮ মিলিগ্রাম ক্যারোটিন সামান্য পরিমাণ ভিটামিন-বি-১ ০.০২ মিলিগ্রাম ভিটামিন-বি-২ ০.০৫ মিলিগ্রাম ভিটামিন-সি (আপেল কুল) ৬১.৩০ মিলিগ্রাম যে সব জায়গায় বেশি পরিমাণে চাষ হয় রাজশাহী বিভাগ অঞ্চলের নাটোর, নওগাঁ ও গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে তুলনামূলকভাবে আপেল কুলের চাষযোগ্য জমির পরিমাণ বেশি। মানিকগঞ্জ, ময়মনসিংহ ও বগুড়াতেও আপেলকুল চাষ হয়। এছাড়া পার্বত্য জেলা সমূহ এবং নোয়াখালী ও অন্যান্য এলাকার চর এলাকায় প্রচুর আপেল কুল উপযোগী জমি আছে। এসব এলাকায় কৃষকরা নিজের জমিতে বা লিজ নিয়ে জমিতে বাগান করতে পারেন।

এছাড়া খামারের চারপাশে, মিল-কারখানার খালি জায়গায়, পোল্ট্রি খামারের পাশের জায়গায়, রেল লাইন ও মহাসড়কের দু’পাশে সামাজিক বনায়নের আওতায় আপেল কুলের চাষাবাদ করা যেতে পারে। আপেল কুল বঙ্গবন্ধু কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের প্রফেসর ড. মোফাজ্জল হোসেন কর্তৃক উদ্ভাবিত এবং জাতীয় বীজ বোর্ড থেকে অনুমোদিত। আপেল এর মতো রঙ হওয়ার জন্যে কুলটির নাম দেওয়া হয়েছে আপেল কুল। মিষ্টি স্বাদের জন্য অন্য কুলের চেয়ে এটি অনেক ভালো। বৈশিষ্ট্য গাছের আকার: একটি পরিণত গাছ মাঝারি আকৃতির লিচু গাছের মত হতে পারে ও ৫০ বছর ধরে ফল দিতে পারে।

ফলের আকার: মাঝারী আকারের বীজ: ছোট । ফলের ওজন: প্রতিটি ১৫ থকে ২০ গ্রাম ওজনের। গাছের বৃদ্ধি: দ্রুত বাড়ে-জুলাই/আগস্ট মাসে রোপণকৃত এক/দেড় ফুট উচ্চতার একটি কলমের চারা ৬ মাসে ৫ থেকে ১০ ফুট লম্বা হতে পারে। স্বাদ: খেতে কচকচে ও কষহীন ও মিষ্টি। ফলন: একটি পরিণত গাছে ১৫০ থেকে ১৮০ কেজি পর্যন্ত ফল ধরা সম্ভব।

প্রতি বছর ফলন দেয়। জুলাই/আগস্ট মাসে রোপণ করলে পরবর্তী মৌসুমে অর্থাৎ জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে গাছ প্রতি ১৫ কেজি পর্যন্ত ফল পাওয়া সম্ভব। বোটা: শক্ত তাই পরিপক্ক ফল সহজে গাছ থেকে ঝড়ে পড়ে না। চাষের এলাকা: বাণিজ্যিক বাগান, বাড়ির আঙিনা ও টবে চাষযোগ্য। সহনশীলতা: খরা, বন্যা ও লবণাক্ততা সহ্য করতে পারে।

খাবারযোগ্য অংশ: ৯৩ ভাগ। বাজার মূল্য: ৮০ থেকে ১২০ টাকা কেজি। ফলটির রয়েছে বিশাল রপ্তানীর সম্ভাবনা। একর প্রতি গড় আয় বছরে নূন্যতম ৫ লক্ষ টাকা। স্হান নির্বাচন রোদ পড়ে এমন খোলা জমিতে কলম লাগাতে হয়।

ছায়া ঢাকা স্যাঁতসেঁতে জায়গায় গাছ লাগানো যাবে না। যদি বর্ষা কালে পানি জমার সম্ভাবনা থাকে তাহলে পানি বের করে দেবার সুবিধা থাকতে হবে অথবা চারিদিকের মাটি টেনে, পানির লেবেল থেকে ২ ফুট উঁচু ঢিবি করে গাছ লাগাতে হবে। চাষের জন্য পরিবেশ ও মাটি জলবায়ু মাটির ধরণ বাংলাদেশের নাতিশীতোষ্ণ আবহাওয়া কুল চাষের জন্য খুব উপযোগী। বেলে দো-আঁশ থেকে এঁটেল দো-আঁশ সব মাটিতে এবং সব জেলাতেই কুল চাষ করা সম্ভব। জমি তৈরি জমি ভাল করে চাষ দিয়ে (পাওয়ার টিলার দিয়ে দুইটি) বা লাঙ্গল দিয়ে দুই থেকে চারটি করে আড়াআড়ি চাষ দিতে হবে।

রোপণ পদ্ধতি গাছ থেকে গাছের দূরত্ব ১২×১২ ফুট গর্তের আকার দর্ঘ্য ৩ ফুট, প্রস্হ ৩ ফুট, গভীরতা ৩ ফুট গর্ত প্রতি সার ১০০ গ্রাম পটাশ, ২৫০ গ্রাম টিএসপি, ১০০ গ্রাম ইউরিয়া, ৫০০ গ্রাম জিপসাম ও ২০ কেজি গোবর। লাগানোর সময় জুন-জুলাই-আগস্ট সঠিক চাষের জন্য করণীয় বর্ষার পানি বের হওয়ার সুবিধার্থে জমির ঢালু দিকে সমান্তরালভাবে গাছের সারি করতে হবে। গর্ত খোড়ার সময়, উপরের অর্ধেক মাটি ও নীচের অর্ধেক মাটি আলাদা ঢিবি করে রাখতে হবে। গর্তটি কমপক্ষে এক সপ্তাহ খোলা রাখতে হবে। গর্তে সার প্রয়োগের সময় দুইটি ঢিবির মাটি একসাথে সমানভাবে মিশিয়ে দিতে হবে (জিপসাম সার ও অন্যান্য সার প্রয়োগের ১৫ দিন আগে মাটিতে মিশাতে পারলে ভাল)।

গর্তটি ভরাট করার দুই সপ্তাহ পর কুল গাছের কলমটি লাগাতে হবে। গাছ রোপণের এক মাস পর গাছের চারিদিকে মাটিতে ১০০ গ্রাম ইউরিয়া মিশিয়ে পানি দিতে হবে। ছুরি দিয়ে পলিব্যাগ এমনভাবে কাটতে হবে যেন গাছের গোড়ার মূল মাটি ঝরে না যায়। পলিব্যাগে, চারাটির যতটুকু মাটির নীচে ছিল, ঠিক ততটুকুই মাটির নীচে দিতে হবে। গাছ লাগানোর পর অবশ্যই বাঁশের খুটি দিয়ে সোজা করে দিতে হবে যেন একটি কান্ড সোজা উপরের দিকে উঠতে পারে।

টবে আপেল কূল চাষ বেলকনিতে অথবা ছাদে রোদ পড়ে এমন জায়গায় ২০ ইঞ্চি মাটির টব অথবা হাফ ড্রামে সম পরিমাণ মাটি ও গোবর সার মিশিয়ে কলম লাগাতে হবে। এর পর প্রতি ৬ মাস পর পর ৩ থেকে ৫ টি "সিলভামিক্স ফোর্ট" ট্যাবলেট গাছের গোড়া থেকে ৩ ইঞ্চি দূরে মাটির ৩ থেকে ৬ ইঞ্চি গভীরে পুঁতে রাখলে ভাল। পোকামাকড় দমন ও ছাঁটাইয়ের কাজ বাগানের গাছের মতোই একই নিয়মে করতে হবে। আন্তঃপরিচর্যা রোপণ করার পর পরিচর্যা সমস্ত বাগানকে সারা বছর আগাছা মুক্ত রাখতে হবে। খরা হলে প্রয়োজন মত সেচ দিতে হবে।

যদি সাথী ফসল চাষ করেন তাহলে তা পোকামাকড়মুক্ত রাখতে হবে। সার প্রয়োগের সময়, গাছটির ডাল পালা যতটুকু পর্যন্ত বিস্তৃত, ততটুকু জায়গার মাটি হালকা ভাবে কুপিয়ে, সার মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে। গাছের গোড়া থেকে কমপক্ষে ২ ফুটের মধ্যে কোন জায়গায় গভীরভাবে কোপানো যাবে না, কেননা তাহলে বড় বড় শেকড় কেটে গিয়ে গাছের ক্ষতি হতে পারে। বাগান পরিচর্যা ক্যালেন্ডার (রোপণ পরবর্তী ১ম বছর) সময় কার্যক্রম মার্চ-১ম সপ্তাহ (ফল পাড়ার পর) আগাছা পরিষ্কার, বাগান কোপানো, গাছ প্রতি ৫০০ গ্রাম জিপসাম সার ও সেচ প্রয়োগ। মার্চ-৩য় সপ্তাহ গাছ প্রতি ২০ কেজি গোবর সার সেই সাথে ১০টি সিলভামিক্স ফোর্ট ট্যাবলেট সার অথবা ২০ কেজি গোবর সারের সাথে টিএসপি ১৫০ গ্রাম, ইউরিয়া ৩০০ গ্রাম ও পটাশ ৫০ গ্রাম ও সেচ প্রয়োগ।

মার্চ-৪র্থ সপ্তাহ গাছ ছাঁটাই ও সেচ প্রয়োগ। মার্চ-৪র্থ সপ্তাহ আগাছা পরিষ্কার, জমি হালকা ভাবে কোপানো, গাছ প্রতি ১০টি সিলভামিক্স ট্যাবলেট সার অথবা টিএসপি ২৫০ গ্রাম, ইউরিয়া ১৫০ গ্রাম ও পটাশ ৫০ গ্রাম ও সেচ প্রয়োগ। বি: দ্র: রোপণ পরবর্তী ২য়, ৩য় ও ৪র্থ বছরে চার্টে উল্লেখিত সারের পরিমাণের যথাক্রমে ২ গুণ, ৩ গুণ ও ৪ গুণ পরিমাণ সার প্রয়োগ করতে হবে। পৌষ ও মাঘ মাসে কুল তোলা শেষ হয়ে গেলে পুরো গাছ ছাঁটাই করে দিতে হবে। শুধু মূল কাণ্ড থাকবে ২.৫০ থেকে ৩ ফুট উচ্চতা পর্যন্ত।

অঙ্গ ছাঁটাইয়ের পর জমি চাষ দেওয়া যেতে পারে। প্রতি গাছে আলাদা আলাদাভাবে পরিমাণ মতো সার দিতে হবে। তারপর পুরো জমিতে সেচের ব্যবস্হা করতে হবে। সেচ ব্যবস্হা প্রথম যখন গর্তে চারা লাগানো হবে তখনই সেচ দিতে হবে। এরপর আর সেচ দিতে হবে না, কারণ তখন বর্ষাকাল চলে আসবে।

তারপর গাছের অঙ্গ ছাঁটাইয়ের পর আবহাওয়ার উপর নির্ভর করে ১ থেকে ২টি সেচ দিতে হবে। ডালছাঁটাই আপেল কুল গাছের বৃদ্ধি ও পরিমিত ফল ধরনের জন্য ডাল ছাঁটাই একটি জরুরী কাজ। ঠিকমতো ছাঁটাই না হলে বাগান নষ্ট হয়ে যেতে পারে। কলম মাটিতে লাগানোর পর একটি সতেজ ও বাড়ন্ত ডালকে উপরের দিকে বেড়ে উঠতে সাহায্য করতে হবে। এজন্য প্রয়োজনমতো সতেজ ডাল রেখে বাকিগুলো কেটে দিতে হবে।

এ কাজে কাচি ব্যবহার করতে হবে ও কাঠি দিয়ে মূল গাছকে খাড়া রাখতে হবে। গাছ কাটতে হবে সমান করে, যাতে মূল গাছের কোন বাকল বা ছাল না উঠে এবং মূল গাছের যাতে কোন ক্ষতি না হয় সেদিকে খুব সতর্কভাবে খেয়াল রাখতে হবে। কাটা অংশটি কাঁচা গোবর দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। এরপর কাণ্ডটিতে প্রচুর নতুন কুশি জন্ম নিবে। ফলে উপরের ২ ফুট অংশের নতুন গজানো শাখা প্রশাখায় গাছটি ছাতার মতো আকার নিবে এবং এক পর্যায়ে একটি ঝাকড়া গাছ হবে।

প্রতি বছর মার্চে গাছ ছাঁটাই করতে হবে। বড় ডাল সাবধানে করাত দিয়ে কাটতে হবে। কুল গাছে সব সময় নতুন গজানো শাখায় মুকুল আসে। এজন্য নিয়মিত ছাঁটাইয়ের ফলে গাছে বেশি পরিমাণ নতুন শাখা-প্রশাখা গজাবে ও সেই সাথে বেশি পরিমাণ ফল ধরবে। পোকামাকড় ও রোগবালাই প্রয়োগের সময় বালাইনাশক প্রয়োগের হার ১. গাছে মুকুল আসার পর কিন্তু ফুল ফোটার পূর্বে প্রতি লিটার পানিতে টাফগার ২ সি সি ও ব্যাভিষ্টিন ১ গ্রাম মিশিয়ে সমস্ত গাছে একবার স্প্রে করতে হবে।

২. স্প্রে করার ১ সপ্তাহ পর ৫ সি সি পরিমাণ ভেজিম্যাক্স নামক তরল খাদ্যটি প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে সমস্ত গাছে একবার স্প্রে করতে হবে। ৩. ফল মটর দানা সমান হলে একই নিয়মে টাফগার ও ব্যাভিষ্টিন একবার প্রয়োগ করতে হবে এবং এর এক সপ্তাহ পর ভেজিম্যাক্স প্রয়োগ করতে হবে। ৪. ফল মার্বেলের এর মতো হলে টিল্ট নামক ছত্রাকনাশকটি একবার প্রয়োগ করতে হবে। ৫. ফল সংগ্রহের সময় ছত্রাকের আক্রমণ বেশি দেখা দিলে টিল্ট ১০ দিন পর পর ২ বার স্প্রে করতে হবে। সতর্কতা: কড়া রৌদ্রে কীটনাশক বা তরল খাদ্য স্প্রে করা যাবে না।

কীটনাশক সবসময় মেঘ মুক্ত দিনে বিকাল ৩ টার পর স্প্রে করলে মৌমাছি কীটনাশক দ্বারা কম ক্ষতিগ্রস্হ হবে। কীটনাশক স্প্রে করার সময় সমস্ত গাছ এমনকি কান্ড পর্যন্ত ভিজিয়ে দিতে হবে। ফলন্ত গাছে পোকামাকড় দমন করার ক্ষেত্রে, নিম তেল একটি উপযোগী প্রতিশেধক হিসাবে ব্যবহার করা যেতে পারে। ফসল সংগ্রহ/ ফলন/ মোড়কীকরণ ফসল সংগ্রহ উপযোগী বৈশিষ্ট্য সংগ্রহের সময় যখন ফলের সবুজ রং থাকবে না এবং ফলটি হালকা হলুদ রং ধারণ করে। চারা রোপণের ৮ মাসের মধ্যে ফসল সংগ্রহ করা যায়।

ফলন সাধারণত: একটি পূর্ণবয়স্ক আপেল কুল গাছ থেকে বছরে ৮০ কেজি ফল সংগ্রহ করা যায়। প্রথম বছরে কম ফল ধরবে। তারপর প্রতিবছরই ফলের পরিমাণ বাড়বে। প্রথম বছরে গাছপ্রতি ৫ থেকে ৭ কেজি, দ্বিতীয় বছরে ১০ থেকে ১৫ কেজি, তৃতীয় বছরে ৩০ থেকে ৬০ কেজি ফলন দিবে। মোড়কীকরণ নেটের জাল দিয়ে চটের ব্যাগ দিয়ে কাগজের কার্টন দিয়ে বংশ বিস্তার/ বিকল্প ব্যবহার বংশ বিস্তার অন্যান্য কুলের মতো আপেল কুলেরও দু’ভাবে বংশবিস্তার করা যায়।

সরাসরি বীজ থেকে অথবা কলম তৈরির মাধ্যমে। বীজ থেকে বংশবিস্তার করলে মাতৃগুণ ঠিক থাকে না বলে কলম তৈরির মাধ্যমেই বংশবিস্তার ভাল কারণ এতে বংশগত গুণাগুণ ঠিক থাকে। বাংলাদেশের জন্য মধ্যবশাখ থেকে জ্যষ্ঠ মাস পুরো সময় হলো কলম করার জন্য উপযুক্ত সময়। নীচের পদ্ধতিরগুলোর মাধ্যমে আপেল কুলের কলম তৈরি করা যায়। ১. T-বাডিং (বর্ম চোখ কলম পদ্ধতি): এই পদ্ধতির জন্য ছাঁটাই করা চারা গাছের অথবা বয়স্ক গাছের নতুন শাখায় ইংরেজি T-এর মত করে কাটা হয়।

তারপর উন্নত জাতের আপেল কুলের নতুন শাখা থেকে কুঁড়ি সংগ্রহ করে তা ঐ কাটা অংশে লাগিয়ে পলিথিন ফিতা দিয়ে বেঁধে দিতে হয়। দুই সপ্তাহের মধ্যে কুঁড়ি থেকে শাখা বের হতে শুরু করে। তখন গাছের অন্যান্য শাখা কেটে ফেলতে হয় এবং নতুন শাখাটি ধীরে ধীরে আপেল কুলে পরিণত হয়। "T" বাডিং ২. প্যাচ বাডিং (তালি চোখ কলম পদ্ধতি): এই পদ্ধতিতে আপেল কুলের চারা গাছে নতুন শাখা গজালে তা থেকে বর্গাকারে বাকল তুলে ফেলতে হবে। তারপর সেই স্হানে উন্নত জাতের আপেল কুলের একটি কুঁড়ি বাকলসহ লাগিয়ে দিয়ে পলিথিন ফিতা দিয়ে বেঁধে দিতে হয়।

দুই সপ্তাহের মধ্যে কুঁড়িটি বড় হয়ে শাখায় পরিণত হলে গাছের অন্যান্য শাখা কেটে ফেলতে হয় এবং নতুন শাখাটি ধীরে ধীরে আপেল কুলে পরিণত হয়। প্যাচ বাডিং ৩. রিং বাডিং (চক্র চোখ কলম পদ্ধতি): এই পদ্ধতিতে আপেল কুলের চারা গাছে নতুন শাখা গজালে মাথা কেটে উপরের দিকে প্রায় ১ ইঞ্চি পরিমাণ বাকল গোল করে রিং-এর মত করে উঠিয়ে ফেলতে হবে। তারপর বাকল উঠানো জায়গাটিতে উন্নত জাতের আপেল কুলের শাখা থেকে একই মাপের কুঁড়ি সহ বাকল গোল করে কেটে লাগিয়ে দিতে হবে। দুই সপ্তাহের মধ্যে রিং থেকে নতুন শাখা গজাবে। তখন গাছের অন্যান্য শাখা কেটে ফেলতে হবে এবং নতুন শাখাটি ধীরে ধীরে আপেল কুলে পরিণত হয়।

রিং বাডিং বিকল্প ব্যবহার আচার, চাটনি, মোরব্বা, জেলী অধিক ফলনের জন্য পরামর্শ পাটের সুতলি দিয়ে গাছ বাধা যাবে না। বর্ষার সময় আগাছা দূর করতে হবে। বাগান পরিচর্যা করতে হবে। - কপি পেষ্ট নেট থেকে

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।