আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রোজা ১৮: বর্জনীয় - আসক্তি



আমাদের চাওয়ার শেষ নেই । আর সুনির্দিষ্ট কোন বিষয়ে চাওয়া যখন তার স্বাভাবিক সীমা ছাড়িয়ে যায় তাকে তখন আসক্তি বলা হয়। আরো বলতে পারি কোন কিছু পাওয়া যখন আমাদের মন ভরাতে পারে না , তৃপ্ত করে না বরং সেই জিনিসই আরো চাওয়ার জন্য অস্থিরতা সৃষ্টি হয় । তা আসক্তি। খুব সাধারন উদাহরন ধরুন – খানাদানা।

আমরা কোন খাবারের প্রতি যখন অতিমাত্রায় আগ্রহী হই এবং সেটা বারবার গ্রহন করি সেটা তখন আসক্তির পর্যায়ে পরে । যে কোন প্রয়োজন সাধারনভাবে কল্যাণকর । কারন প্রয়োজন সৃষ্টি না হলে আমরা তা পূরনের জন্য সচেষ্ট হই না । কিন্তু আসক্তিতে প্রয়োজন তার সীমা ছাড়িয়ে অকল্যানের ঘরে অবস্থান করে। আসক্তি সাধারনভাবে অকল্যানকর ।

আমরা কত কিছুতে ই আসক্ত হই তা দেখুন : খাবারে আসক্তি- প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাওয়া। পোশাকে আসক্তি – অনেক থাকার পরেও আরো পোশাক কেনার ও সংগ্রহের বাতিক। টাকার বা সম্পদের প্রতি আসক্তি – দুর্নীতিবাজদের দিকে তাকালে এর উদাহরন পাবেন। নেশায় আসক্তি – সকল নেশাই আসক্তির পূর্নরূপ। বিনোদনে আসক্তি – বর্তমান যুগের টিভি, ডিসের সামনে অহেতুক বসে থাকা ।

ইন্টারনেট আসক্তি – এটা আধুনিকতম আসক্তির নাম। নর, নারীতে আসক্তি আলস্য , অতি ঘুমে আসক্তি ক্ষতিকর আড্ডায় আসক্তি .......ইত্যাদী বহু আসক্তি আপনি চিহ্নিত করতে পারবেন। এখন কথা হলো সকল আসক্তিই কি ক্ষতিকারক? সাধারন উত্তর : হ্যা। কারন আসক্তিতে আপনি আপনার স্বাভাবিকতাকে হারিয়ে ফেলেন। আকাঙ্খা থাকবে, কিন্তু আসক্তি থাকবে না – এটাই স্বাভাবিক হওয়া উচিত ।

আপনার জুতার প্রতি খুব সখ। আপনি বিভিন্ন ডিজাইনের জুতা কিনতেই থাকলেন । ঘর ভরে ফেললেন জুতা দিয়ে। আপনার শাড়ীর সখ। দুটো আলমিরা বোঝাই শাড়ী ।

বাজারে গেলেই আরো নতুন কিনতে থাকেন। টিভিতে কোন সিরিয়াল একদিন না দেখলে আপনার জীবন বৃথা মনে হয়। বাসায় ফিরে টিভি নিয়ে বসেন ,রাত বারোটায় রিমোট হাত থেকে ছাড়েন । এগুলো কি ক্ষতিকারক নয়? আপনার সাধারন বিচার বুদ্ধিতে কি বলে? যতধরনের অপচয় মানুষ আসক্তির কারনে করে তা কি আপনি হিসাব করেছেন । গৌতম বুদ্ধ দীর্ঘ সাধনার পরে দু:খের কারন আবিস্কার করতে গিয়ে বলেছেন : দু:খ আছে, দু:খের কারন আছে, দু:খের কারন আসক্তি ।

আসলেই আমাদের সকল দু:খের কারন অনুসন্ধান করতে গেলে দেখবেন তা হচ্ছে আসক্তি । তাহলে এখন আসক্তি থেকে কিভাবে মু্ক্ত থাকতে পারবেন? এখনই কাগজ কলম নিয়ে বসে যান: ১। আপনার জীবনে আসক্তিগুলোকে চিহ্নিত করুন। সেগুলোর একটা লিস্ট তৈরী করুন। ২।

আসক্তিগুলো আপনার কিভাবে ক্ষতি করছে তা পাশাপাশি লিখুন। ৩। সেগুলো কিভাবে দূর করতে পারেন –তার উপায় আবিস্কার করুন। যেমন: আজ একঘন্টা টিভি কম দেখে বই পড়তে পারেন বা কিছু লিখতে পারেন। আসলে জীবনকে দু:খময় করার জন্য মানুষের নিজের অভ্যাসই দায়ী।

অতিরিক্ত আকাঙ্খা মানুষকে আসক্তির দিকে নিয়ে যায় এবং দু:খে নিমজ্জিত করে। আল্লাহতাআলা পবিত্র কোরানে বলেছেন : --অপরের চেয়ে অধিক সুখ সম্পদ লাভের আকাঙ্খাই মানুষকে আজীবন মোহাচ্ছন্ন করে রাখে , যতক্ষন না সে কবরে উপনীত হয় । --সুরা তাকাছুর: ১-৩ আসুন আমরা আমাদের জীবনকে দু:খমু্ক্ত করে গড়ে তোলার জন্য সচেষ্ট হই। সকল আসক্তি বর্জন করি এবং অনন্য মানুষ হবার পথে অগ্রসর হই । ধন্যবাদ।

আগামীকাল আবার দেখা হবে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.