আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

টিআইবির জরিপ এবং ভূমি অফিসের দুর্নীতি

ঈদ মোবারক

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) দেশে দুর্নীতির খাতওয়ারি যে জরিপ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যায়, দুর্নীতিতে ভূমি প্রশাসনের অবস্থান তৃতীয় এবং টাকার অঙ্কে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি হয়েছে ভূমি প্রশাসনে। এ খাতে ঘুষের পরিমাণ ১ হাজার ৬০৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে খাসজমি বন্টনে গড়ে ৫ হাজার ৬৮০ টাকা, ভূমি রেজিস্ট্রেশনে ৪ হাজার ৮৫৭ টাকা, জমি জরিপে ও সীমানা নির্ধারণে ৩ হাজার ৮৫৭ টাকা, জমি ক্রয়-বিক্রয়ে ১ হাজার ৮৫৭ টাকা, জমি খারিজ করতে ৩ হাজার ৩০৩ টাকা, কর প্রদানে ১ হাজার ১৭০ টাকা, নথি উত্তোলনে ১ হাজার ৬৩৯ টাকা এবং অন্যান্য সেবা নিতে গড়ে ৪ হাজার ২৮১ টাকা ঘুষ দিতে হয়েছে। টিআইবির জরিপকারীগণ ভূমি সংক্রান্ত সকল দুর্নীতিকে ভূমি প্রশাসনের দুর্নীতি হিসাবে চিহ্নিত করেছেন। কিন্তু ভূমি সংক্রান্ত সকল কাজ ভূমি প্রশাসনের অন্তর্ভুক্ত নয়।

ভূমি রেজিস্ট্রেশন আইন মন্ত্রণালয়ের অন্তর্ভুক্ত। জরিপ কার্যাবলি ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের কাজ, যা ভূমি প্রশাসনের অন্তর্ভুক্ত নয়। খাসজমি বন্টনের সঙ্গেও ভূমি অফিস জড়িত নয়। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ উপজেলা (থানা) নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে একটি কমিটি খাসজমি চিহ্নিত, ভূমিহীন চিহ্নিত ও বন্টনের সঙ্গে জড়িত। প্রকৃতপক্ষে ভূমি অফিসের কাজ ভূমিকর আদায় এবং নামখারিজ।

টিআইবি দুর্নীতির টাকার পরিমাণ উল্লেখ করেছে। কিন্তু এই দুর্নীতির সঙ্গে কারা জড়িত তা উল্লেখ করেনি। এই দুর্নীতির সঙ্গে কি শুধু ভূমি প্রশাসনের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী জড়িত? দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠান হিসাবে টিআইবির আরও পূর্ণাঙ্গ জরিপ করা উচিত ছিল। ঢাকা মহানগরীতে ৫টি ভূমি রাজস্ব সার্কেল এবং ১৪টি ভূমি অফিস আছে। এইসব অফিসে টিআইবি কর্মীদের গোয়েন্দা কার্যক্রমের মাধ্যমে এবং ভুক্তভোগীদের (ঘুষ প্রদানকারীদের) জিজ্ঞাসা করা উচিত ছিল তারা যে ঘুষ দেন তা কি এইসব অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের না তৃতীয় পক্ষ দালালদের দেন? এই সমস্ত অফিসে ছদ্মবেশে নামজারির আবেদন নিয়ে গেলে সঠিক তথ্য পেতে অসুবিধে হতো না।

বর্তমানে ঢাকা মহানগরীর কোনো ভূমি অফিসে নামখারিজের জন্য সরকারি ফিসের বাইরে কোনো টাকা খরচ করতে হয় না। শুধুমাত্র গুলশান ভূমি অফিসের কিছু সমস্যা আছে। এই অফিসে একটি সিন্ডিকেট আছে। এখানে কিছু অবৈধ লেনদেন হয় বলে শুনেছি। পাশাপাশি সারাদেশের ভূমি অফিসগুলোতে সৎ ও নিষ্ঠাবান মানুষও আছেন।

তাদেরই ক্ষমতায়ন জরুরি। পরিশেষে টিআইবিকে বলবো কোনো জরিপের জন্য শুধুমাত্র ধারণার ওপর ভিত্তি না করে সরেজমিনে তদন্ত করে পূর্ণাঙ্গ জরিপ প্রতিবেদন প্রকাশ করুন। ঢালাওভাবে দায়ী করলে সৎ ও নিষ্ঠাবান কর্মকর্তা তার দায়িত্ব পালনে উৎসাহ হারিয়ে ফেলতে পারেন।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.