আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সামাজিক

মাহবুব লীলেন

বিয়ে বাড়িতে তাকে আমরা কালি মাখিয়েছি বড়ো ডেকচির তলায় মুখ ঘষে কিন্তু তাকে অসুন্দর বানাতে পারিনি। কোনো এক কুবুদ্ধিতে সে একবার মাথা ন্যাড়া করে ফেলেছিল তবুও তাকে আমাদের সুন্দর বলতে হয়েছে তখন পর্যন্ত সে আমরা শব্দের ব্রাকেটে আমাদের মধ্যে ছিল। কিন্তু আমাদের মধ্যে কেউ একজন তাকে আমার শব্দের বৃত্তে ঢোকাতে চাইল সে বলল- না কেউ একজন হ্যাঁ শোনার জন্য অনুনয়-বিনয়-অনুরোধ বহুকিছু করল। কিন্তু সে বলল- সবাই সবাইকে ভালোবাসি এইতো ভালো। ভালোবাসাকে কাটাকাটি-ভাগাভাগির কী দরকার? কেউ একজন রেগেমেগে আমাদের ছেড়ে অন্যদের কাছে চলে গেলো সাহায্যের আশায় তারপর আমরা বাকিরা একদিন তাকে হাসপাতালে দেখতে গেলাম।

যাকে পেতিœ বানানো আমাদের কাছে অসম্ভব মনে হতো তার বাম চোখ ছাড়া মুখে আর কিছু নেই। কেউ একজন তরল আগুনে তাকে মাংসল ছাই বানিয়ে দিয়েছে শিশি উপুড় করে আমরা বাকিরা সেই কেউ একজনকে ঘৃণা ও গালাগাল করে তাকে বললাম- আমরা তোর সাথে আছি বলে তাকে হাসপাতালের ভেতরে এবং অন্য একজনকে সম্পর্কের বাইরে রেখে চলে এলাম নিজেদের খোঁয়াড়ে শুধু অন্য একজন কেউ একজনকে খুন করে গিয়ে দাঁড়াল আদালতে আমরা বাকিরা অন্য একজনকে বললাম- বাঘের বাচ্চা। প্রতিটা মানুষের এরকমই হওয়া উচিত। এবং কেউ একজনের ঠিক এরকমই শাস্তি দরকার ছিল ঠান্ডা মাথায় হত্যার অপরাধে আমাদের অন্য একজন যখন দীর্ঘমেয়াদের কারাদণ্ডে গেলো তখন আমরা বাকিরা প্রতিজ্ঞা করলাম অন্য একজনের জন্য আমরা কিছু একটা করব। আর জেলখানায় ঢোকার আগে অন্য একজন আমাদের হাতে ধরে বলল- তাকে যেন বিষয়টা জানানো না হয়।

কারণ সে জানলে ভাববে তার জন্য অন্য একজন এরকম বিপদে পড়ে গেলো। বরং আমরা যেন তাকে দেখে রাখি। যাতে সে কোনোকালে মন খারাপের কোনো সুযোগ না পায় আমরা বাকিরা হাতে হাত ছুঁয়ে কসম কেটে নিজেদের আবার ফিরে এলাম নিজেদের ঘানিতে তারপর একদিন আবার আমরা বাকিরা তাকে দেখতে গেলাম। সে জেনে এসেছে চামড়া কেটে গেলে মাংসের ভেতর থেকে নতুন এক ধরনের নরম আর ফর্সা চামড়া গজায়... তাই সে একটা ধারালো ব্লেড হাতে আয়নার সামনে দাঁড়িয়েছিল মুখের তুবড়ানো আর কুঁচকানো চামড়াগুলো চেঁছে তুলে ফেলার জন্য। তার বিশ্বাস কিংবা হতাশা ছিল যে তার মুখে আবার নতুন চামড়া গজাবে এবং সে আবার সেরকম সুন্দর হয়ে উঠবে যাতে এক ডজন বাকিরা কালিঝুলি মাখালেও তার সৌন্দর্যকে কাবু করতে পারবে না আগের মতো কিন্তু রক্ত- রক্ত আর রক্ত গালের চামড়া ভেদ করে বের হয়ে আসা দাঁতের পাটি আবার সে গালের ভেতরে ঢোকাতে ব্যর্থ হলো।

নষ্ট হয়ে যাওয়া ডান চোখ খুঁড়ে আনতে পারল না তার ব্লেড উঠে এলো রক্ত- রক্ত আর রক্ত.... আমরা বাকিরা আবারও তাকে বললাম- তোর সৌন্দর্যের দরকার নেই। আমরা জানি তুই সুন্দর.... তরপর আমরা সেই তিনজনের নামই ভুলে গেলাম; নাহলে আজ এই সাহিত্য-মারানির কথা নয় আমার কেননা সেই অন্য একজনের কথা ছিল মামাতো বোনকে বিয়ে করে দেশের বাইরে যাবার আর কেউ একজনকে খুন করে আমারই কথা ছিল যাবজ্জীবনে যাওয়া... ২০০৮.০৬.১২ বিষুদবার


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.