আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

টাকার জন্যই আটকে আছে ডিএনএ টেস্ট!

চাঞ্চল্যকর নরকঙ্কালের রহস্য উদঘাটনে ডিএনএ (ডিঅঙ্রিাইবো নিউক্লিক এসডি) পরীক্ষা আটকে আছে টাকার জন্য। কে এই টাকার জোগান দেবে, সে অপেক্ষার পার হয়েছে দুই সপ্তাহ। আরও কয় দিন লাগবে তাও নিশ্চিত করতে পারেনি কেউ। তবে সংশ্লিষ্টরা একবাক্যে বলেছেন, টাকা পেলেই পরীক্ষা, এরপর প্রতিবেদন দেওয়া হবে। টাকার জন্য এরই মধ্যে হয়েছে চিঠি চালাচালি।

এদিকে, নরকঙ্কালের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেয়েছে পুলিশ। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উদ্ধারকৃত অঙ্গপ্রত্যঙ্গগুলো কমপক্ষে চারজনের অধিক পূর্ণবয়স্ক পুরুষের।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, নরকঙ্কালগুলোর নমুনা ঢাকা মেডিকেল কলেজের ডিএনএ ল্যাবে পাঠানোর পর ডিএনএ টেস্টের খরচ কে দেবে, এ নিয়ে ল্যাব কর্তৃপক্ষ ও পুলিশের মধ্যে বোঝাপড়া চলছে। ৩১ আগস্ট নমুনাগুলো পাঠানো হলেও এখন পর্যন্ত তাতে হাত দেয়নি ল্যাব কর্তৃপক্ষ। ল্যাব কর্তৃপক্ষ বলছে, 'কঙ্কালগুলোর নমুনা পেয়েছি।

কিন্তু ডিএনএ টেস্ট করতে হলে পুলিশের অনুমতিপত্র বা হাইকোর্টের নির্দেশনামা লাগবে। অন্যথায় টেস্টের কাজে হাত দেওয়া যাবে না। ' এদিকে পুলিশ বলছে, 'ডিএনএ টেস্ট করতে অনেক টাকা প্রয়োজন। এর জোগাড় হলেই টেস্ট করা সম্ভব। ' তদন্ত কর্মকর্তা, যাত্রাবাড়ী থানার এসআই জসিম উদ্দিন বলেন, '২ সেপ্টেম্বর কঙ্কালগুলোর ডিএনএ টেস্ট করার জন্য হাইকোর্টে আবেদন করা হয়েছে।

হাইকোর্টের নির্দেশের চিঠি হাতে পেলেই ওই চিঠি ল্যাব কর্তৃপক্ষকে দেওয়া হবে। ' তিনি আরও বলেন, 'ডিএনএ টেস্টের জন্য ল্যাব কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে টাকার পরিমাণসংবলিত একটি চিঠি আনা হবে। এটি নিয়ে পুলিশের এআইজি (অর্থ) বরাবর আবেদন করা হয়েছে। তখন কর্তৃপক্ষ টাকার জোগান দিলে ডিএনএ টেস্ট করা সম্ভব হবে। '

স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগ জানায়, 'নরকঙ্কালগুলো থেকে সংগৃহীত নমুনার ২৯টি আইটেম রয়েছে।

প্রতিটির টেস্ট করতে হবে। প্রতিটি আইটেমের জন্য ব্যয় হবে ৫ হাজার টাকা। শুধু ডিএনএ ল্যাবে ব্যয় হবে প্রায় দেড় লাখ টাকা। ' এদিকে মহাখালীতে কেমিক্যাল টেস্ট রয়েছে। সেখানেও একই পরিমাণ টাকা খরচ হবে।

ডিএনএ ল্যাবের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আশীষ কুমার মজুমদার বলেন, 'নরকঙ্কালগুলোর নমুনা পুলিশ ডিএনএ ল্যাবে দিয়েছে। কিন্তু ওই প্যাকেটের সঙ্গে কোনো কাগজপত্র দেওয়া হয়নি। ' তিনি বলেন, 'নরকঙ্কালগুলোর ডিএনএ টেস্ট করতে হলে পুলিশের একটি রিকোয়েস্ট লেটার বা হাইকোর্টের একটি নির্দেশনামা প্রয়োজন। অন্যথায় নিয়ম অনুযায়ী আমরা এগুলোর কাজ শুরু করতে পারি না। প্যাকেটটি যেভাবে হাতে পেয়েছি সেভাবেই রয়েছে।

প্যাকেটের মুখ এখনো খোলা হয়নি। ' ওই বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আরও বলেন, 'আমরা পুলিশের ঊধর্্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। এখন পর্যন্ত কোনো সাড়া মেলেনি। ' নরকঙ্কালগুলোর নমুনা সংগ্রহ করে ২৭ আগস্ট ডিএনএ টেস্ট করার জন্য পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। ৩১ আগস্ট দুপুরে কোনো কাগজপত্র ছাড়াই ল্যাবে পাঠায় পুলিশ।

কঙ্কালগুলো উদ্ধারের ১৫ দিন পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত জানা যায়নি এগুলো কাদের, কোথা থেকে এসেছে। তবে উদ্ধারের পর পুলিশ বলছে, এগুলো হাসপাতালের শিক্ষার্থীদের কাজে ব্যবহার করা হতো।

পুলিশের ওয়ারী বিভাগের ডিসি ইলিয়াছ শরীফ বলেন, ডিএনএ টেস্টের প্রতিটি আইটেমের জন্য ৫ হাজার টাকা চেয়ে পুলিশ সদর দফতরে পাঠানো হয়েছে। বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তারা ডিএনএ টেস্ট করে ভবিষ্যতের জন্য সংরক্ষণ করবেন। তবে এর কারণে তদন্ত কার্যক্রমে কোনো ঘাটতি হয়নি।

তদন্তকাজ এগিয়ে চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, এরই মধ্যে নরকঙ্কালগুলোর ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন আমাদের হাতে এসে পেঁৗছেছে। তাতে বলা হয়েছে, উদ্ধারকৃত অঙ্গপ্রত্যঙ্গগুলো আগেই চিহ্নিত করে কাটা হয়েছে। পরে সেগুলো বেশ কিছু সময়ের জন্য রাসায়নিকভাবে সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছিল। ডিএনএ টেস্টের জন্য টিস্যু, দাঁত, চুল, নখ ও হাত সংরক্ষণ করা হয়েছে। উদ্ধারকৃত প্রতিটি অঙ্গপ্রত্যঙ্গ মানুষের।

সেগুলো কমপক্ষে চারজনের বেশি পূর্ণবয়স্ক পুরুষের। তবে তাদের মৃত্যু কেন হয়েছে তা ডিএনএ ও রাসায়নিক পরীক্ষা ছাড়া বলা সম্ভব নয় বলে অভিমত দিয়েছে মেডিকেল বোর্ড।

উল্লেখ্য, ২৩ আগস্ট যাত্রাবাড়ীর মাতুয়াইলের মৃধাবাড়ীসংলগ্ন ডাম্পিং স্টেশনে (ময়লার স্তূপ) পড়ে থাকা চারটি বস্তা থেকে মাথার খুলি, সাতটি পাসহ মানবদেহের বিভিন্ন অংশের ১৬ টুকরো হাড়গোড় উদ্ধার করে পুলিশ। ওই দিন সন্ধ্যায় ডিএনএ টেস্টের জন্য সেগুলো মিটফোর্ড হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়ে দেয় পুলিশ।

 

 



সোর্স: http://www.bd-pratidin.com/

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.