আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভাঙন

পরে হবে

চরিত্র মোজম্মেল এলাকার মেম্বার, বয়স ৬০ রকিব বেকার যুবক , ,বয়স ২৬ আমিন এলাকর মাষ্টার, আবিবাহিত, বয়স ৫০ প্রথম দৃশ্য শহরতলীর প্রায় নির্জন পথ। সময় বিকাল। মোজম্মেল ও রকিবের প্রবেশ মোজম্মেলঃ কিছু যে কও না রকিব? রকিবঃ না চাচা আমরা একটা নদীর সন্ধান পাইছি। নদী আবার সমুদ্র ও কইতে পারেন। মোজম্মেলঃ - নদী কী কখনো সমুদ্র হয়? রকিবঃ হয় চাচা, আমি একা না, পাঁচজন খাড়াইছিলাম পারে,আচমকা একটা বড় ঢেউ আসলো, তাতে ভয় পেলাম, মনে হইলো সমুদ্র ও হইতে পারে।

মোজম্মেলঃ কিন্তু এই সর্ম্পকে মাষ্টার কী কয়? রকিবঃ মাষ্টার কী কইবো, সন্ধ্যায় দেখেন না সবাই কেমন বাইরে বাইরে ঘোরে, কারো আসলে ঘর নাই চাচা, যাইবো কই লোকগুলা, সাত রাইতেই সখিপুর গ্রাম পানি নিচে । তয় সমুদ্রই হইবো মনে লয়। মোজম্মেলঃ সমুদ্র! আমাগও কি পথে নামাইবো? রকিবঃ তা কওয়া যায় না চাচা, আনেক পাখি দেখা গেছে। আবার তলায় ¯^র্ণমুদ্রাও থাকতে পারে। একটার সন্ধানও পাইছি আমরা।

(রকিবের মুখে হাসি) মোজম্মেলঃ তোমরা নিবা সব, তোমরাই সব শেষ করবা। রকিবঃ আমরা কি নিতে পারি চাচা সন্ধান তো করি আপনের জন্য। মোজম্মেলঃ কিন্তু এই সর্ম্পকে মাষ্টার কি কয়। চল মাষ্টারের বাড়ি যাই। (প্রস্থান) দ্বিতীয় দৃশ্য মাষ্টারের বাড়ি (পর্দা উঠলে দেখা যাবে তিনটি চেয়ার ও একটি পড়ার টেবিল।

আমিন টেবিলে বসে কিছু একটা পড়ছে। ) মোজাম্মেলঃ (নেপথ্য থেকে) মাষ্টার বাড়ি আছো নিহি, মাষ্টার.. আমিনঃ কেঠা। (মাজম্মেল ও রকিবের প্রবেশ, মাষ্টার তাদের সঙ্গে সৌজন্য মূলক আচরণ করবে) মোজাম্মেলঃ আচ্ছা মাষ্টার বলে না সালি ধানের চিড়া বিননি ধানের খই, আবার কয় গামছা বান্ধা দই, গামছায় কেমনে দই? খাইছো কহনো এই সব? আমিনঃ বিষয়টা তো আমি বুঝি না মেম্বার তবে মনে হয় বিশেষ কোন ব্যাপার ছিল। ছিল বিশেষ কোন গামছা। মাজাম্মেলঃ আচ্ছা মাষ্টার নদী কি কখনও সমুদ্র হইতে পারে? আমিনঃ (চিন্তিত ভঙ্গি) পারে খাল যেমন নদী হয়, নদীও তো তেমনি সমুদ্র হইতে পারে,ধারনা করা যায়।

মোজাম্মেলঃ আচ্ছা মাষ্টার নদী যখন ভাঙে তখন কী একটা গ্রামের মধ্যে যা থায়ে সব ভাঙে, সব। তখন কী শব্দ হয়। হাহাকার হয়। আমিনঃ সব ভাঙে মেম্বার, পাখিদের মন পযর্ন্ত ভাঙে। মানুষের বিয়া পযর্ন্ত ভেঙে নিয়ে যায় নদী।

এমন ভাবে ভেঙে নেয় যে আর চর জাগে না আর আসা থাকে না। মোজাম্মেলঃ তবু নদী নিয়া এতো গল্প কথা কেন, এতো গানা বাজনা কেন? আমিনঃ সে মনে হয় অন্য কোন নদী মনে হয় অন্য কোন জল কলকল করে শিল্পীর দেহে। মোজাম্মেলঃ তোমার দেহেও কী এমন কোন জলের আচর লাগছিল মাষ্টার। যে এক ভাবে নিঃশ্বঙ্গ গাংচিল রয়ে গেলা। কি শোন প্রতিদিন নদীর পারে গিয়া।

পাশে তো একটা মরা নদী ইটের ভাটা আর হাউজিং কমপ্লেক্স মিলা নদীটাকেই ভাইঙা চুরমার করছে। রকিবঃ এইটা হইলো গিয়া প্রতিশোধ মোজাম্মেলঃ হইতে পারে প্রতিশোধ আমিনঃ হইতে পারে প্রতিশোধ (লাইট নিবে যাবে) তৃতীয় দৃশ্য (নদীর বাড়ি। রাত। রকিব ও মোজাম্মেলের প্রবেশ। মঞ্চের একদিকে একটি ঘরের দরজার পর্দা ঝুলবে।

) মোজাম্মেলঃ ওই কই নিয়া আইলি। রকিবঃ চাচা এইটাই নদীর ঘর। মোজাম্মেলঃ ডাক দেহি তোর কেমন নদী। রকিবঃ খালা ও খালা বাড়ি আছো নি। মোজাম্মেলঃ খুব বয়স নাকি রে রকিবঃ বয়স নাহলে কী এমন করে ভাঙে।

ঝাকে ঝাকে লোক আসতেছে শহরের দিকে, সেই সঙ্গে আসতেছে অসংখ্য মনিমুক্তা,লাল মুক্তা, নীল মুক্তা, সাদামুক্তা, কালোমুক্তা, আমরা তো মুক্তার খোজেই নদীর পারে আইছি। মোজাম্মেলঃ তা আসতেছেনা কেন? রকিবঃ খালা ও খালা। (তারা কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে। রকিব একটা গান ও গাইতে পারে। ) রকিবঃ এমনে হবে না চাচা ।

শেষ টুকু মেরে দিয়ে চলো সাহস করে নদীতে ঝাপ দেই। তবেই মনিমুক্তার সন্ধান হয়তো পেতে পারি। (রকিব তার পকেট থেকে ছোট একটা বোতল বের করে এবং দু'জনে খায়। ) পর্দা ঠেলে প্রস্থান

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।