আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

চলমান রিক্যাপ (২য় কিস্তি)

সাব্বির ভাইয়ের জন্য আরো দশ লাখ টাকা দরকার। মানবতার দিকে তাকিয়ে আছি।

অল্পবয়েসী মেয়েরা বাসে উঠেই রাজ্যের গল্প জুড়ে দেয়। আর কেউ শুনছে কিনা, শুনেইবা কী ভাবছে, এসবে যেন একটুও ভ্রূক্ষেপ নেই। আড়ি পেতে যে কথাগুলো দু'একবার আত্মস্থ করার চেষ্টা করেনি অনন্ত তা নয়।

অবশ্য বাড়তি চেষ্টা না করেই অন্যের উচ্চকন্ঠের কলকাকলি পর্দায় ধাক্কা দিলে সেটাকে আড়িপাতা নিশ্চই বলা যায়না। এমনি রাজ্যের ভাবনা ভাবতে ভাবতে নিজেকে নিয়েও বিস্তর খোঁচাখুঁচি করেছে। অতীত বর্তমানের টুকরো টুকরো স্মৃতি আচমকা কোত্থেকে এসে উদয় হয়। একটার সূত্র ধরে আরেকটা। কী করলে কী হত, কী না করলেই বা কী হতনা, এমনি নানা সমীকরণ মেলাবার চেষ্টা করে সে।

তার যে বয়স তাতে জীবনের অংক নিয়ে কষাকষি করার সময় এক্ষুনি এসেছে কিনা, সেটা ভাবার কথা কখনো মনে হয়না। প্রতিটি মুহূর্তের প্রাপ্তি, অপ্রাপ্তি ওর কাছে মূল্যবান। সময়সীমাটা তাই আটাশ হোক, আর আটাশি হোক, তাতে কোন হেরফের হবে বলে মনে করেনা অনন্ত। আপাতদৃষ্টিতে এটুকু পর্যন্ত সফলই বলতে হবে তাকে, অন্তত সাধারণের বিচারে তাই। পাব্লিক পরীক্ষাগুলো সাফল্যের সাথে ডিঙ্গিয়ে স্নাতকোত্তর সনদপত্রের মালিক।

ভাল চাকরিও জুটেছে। দুর্মূল্যের এই বাজারে দু'তিনজনের মধ্যবিত্ত একটা পরিবার মোটামুটি স্বচ্ছলভাবেই চালাতে পারবে সে। সফল নয়তো কী! মেধা আছে মোটামুটি। কাজের প্রতি একাগ্রতা, নিষ্ঠার কমতি নেই। তবুও সারাক্ষণ একটা হাহাকার।

চলতি পথের দার্শনিকতায় কারো কোন উপকার না হলেও দারুণ একটা কাজ করে ফেলেছে নিজের অলক্ষ্যেই! নানা মাপের আতশ কাঁচ নিয়ে, কাছে দূরে থেকে নানা এংগেলে চোখদুটোকে লেন্সের এপাশে রেখে বিগত কয়েকটা বছরকে উল্টেপাল্টে ফোকাস করে দেখেছে সে। নিজের প্রতি আস্থা এবং দুর্বলতা এ দু'টো জায়গাই চেনা হয়ে গেছে বলে মনে হয়। কোটি মানুষ এই যে দিনরাত মেধা, শ্রম খাটিয়ে জীবনভার বয়ে চলেছে, এ আর এমন কী! নিজেকে পুরোপুরি জানাই নাকি জগতে সবচেয়ে কঠিন কাজ। কথাটার সাথে এখন আর একমত নয় অনন্ত। আমরা চেষ্টা করিনা বলেই নিজেকে জানতে পাইনা।

খুঁড়োখুঁড়ি করতে গিয়ে যদি পরোপুরি অচেনা একটা সত্ত্বা বেরিয়ে আসে, কিছুটা সে ভয়েও। অনন্তের অভিমত, নিজেকে চেনার চেয়েও কঠিন হল সে চেনা মানুষটাকে মনমত রঙ ঢেলে, খোলনলচে পালটে পছন্দসই একটা আকারে নিয়ে আসা। এই যে নিজেকে চিনেছে, তাতে কী এমন লাভ হলো! ভুল শোধরানো যদি বা যায়, ভবিষ্যতে আর এমন ভুল করবেনা এমনে প্রতিজ্ঞায় নিজেকে বেঁধে রাখতে পারে কজন? সাধনা আর জ্ঞান যাদের অতি উচ্চস্তরের তারা নিশ্চই পারে। বুকের মাঝে দিনে দিনে গজিয়ে ওঠা হাহাকারটার সূত্র খুঁজতে নিজেকে চষে ফেলেছে সে। মোদ্দাকথা হল, কল্পনার কিছু করণীয় তে লক্ষ্য স্থির করেছে ঠিকই।

কিন্তু হাত পা নেড়ে মনের ভাবনাটাকে যে আকৃতি দিয়ে এসেছে এতদিন, তার সাথে লক্ষ্যের ফারাকটা আজকাল বড্ড বেশি চোখে পড়ে। চলবে.........

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।