আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস।........২

সৃষ্টি সুখের উল্লাসে।

বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস। ........১ প্রাচীন যুগের সময়কালঃ প্রচীন যুগের ব্যপ্তি নিয়ে অনেকের অনেক মত রয়েছে। ডঃ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ্ র মতে- ৬৫০ খ্রীষ্টাব্দ থেকে ১২০০ খ্রীষ্টাব্দ পর্যন্ত। ডঃ সুকুমার সেনের মতে তা ৯৫০ থেকে ১২০০ খ্রীষ্টব্দ পর্যন্ত।

চর্যাপদের আলোচকবৃন্দ: চর্যাগীতি নিয়ে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বোদ্ধা ব্যক্তিগণ অনেক বই-পুস্তক রচনা করেছেন। এর মধ্যে ডঃ সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়ের “ Origin and Development of the Bengali Language (ODBL)” উল্লেখ যোগ্য। বইটিতে ভাষাতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। ১৯২৭ সালে ডঃ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ চর্যাপদের ধর্মমত সম্পর্কে প্রথম আলোচনা করেন। ১৯৩৮ সালে ডঃ সুবোধচন্দ্র বাগচী চর্যাপদের তিব্বতী অনুবাদ করেন।

আবার কীর্তিচন্দ মুনিদত্তের টীকার তিব্বতি অনুবাদ করেছিলেন চর্যাগীতিকোষবৃত্তি নামে। এভাবেই বিভিন্ন জন চর্যাপদের সন্ধা ও দুর্বোধ্য ভাষাকে সহজ করার জন্য বিভিন্নভাবে প্রয়াস চালিয়েছেন। এখানে উল্লেখ্য যে, বিজয়চন্দ্র মজুমদার ১৯২০ সালে চর্যগীতির ভাষা ও ১৯৪৬ সালে শশীভূষণ দাশগুপ্ত এর অন্তর্নিহিত তত্ত্বের ব্যাখ্যা প্রকাশ করেন। বিহারের রাহুল সাংস্কৃত্যায়ন বৌদ্ধ সিদ্ধাচার্য, বৌদ্ধ সহজযান ও চর্যাগীতি নিয়ে ইংরেজী ও হিন্দিতে প্রচুর গবেষনা করেছেন। ডঃ তারাপদ মুখোপাধ্যায় চর্যাপদ থেকে বিশেষ্য, সর্বনাম ও ক্রিয়াপদের রূপ ও বাক্য গঠনরীতির স্বরূপ দৃষ্টান্তযোগে দেখিয়েছেন।

চর্যাপদঃ প্রাচীন যুগের নিদর্শন বাংলা সাহিত্যের প্রাচীন ও প্রধান নিদর্শন হল চর্যপদ। মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী এটা নেপালের রাজ দরবার থেকে আবিষ্কার করেন। ১৮৮২ সালে রাজেন্দ্র লাল মিত্রের Sanskrit Buddhist Literature in Nepal গ্রণ্থ থেকে সর্বপ্রথম বোদ্ধতান্ত্রিক সাহিত্যের কথা জানা যায়। হরপ্রসাদ শাস্ত্রী এই তথ্য পেয়ে আগ্রহী হয়ে ওঠেন এবং বৌদ্ধধর্মের ইতিবৃত্ত সন্ধানে তিনি তিন তিন বার নেপালে যান। সর্বশেষ তিনি ১৯০৭ সালে নেপালে যান এবং সেখানকার রাজ দরবার থেকে অনেক গুলো প্রাচীন পুথির সাথে বাংলা সাহিত্যের প্রচীনতম নিদর্শন চর্যাপদ আবিস্কার করেন।

এর নাম নিয়েও রয়েছে অনেক বিতর্ক। কারো মতে এর নাম চর্যাচর্যবিনিশ্চয়, আবার কারো মতে আশ্চর্যচর্যাচয়। ডঃ প্রবোধ চন্দ্র বাগচী একে নাম দিয়েছেন চর্যাশ্চর্যবিনিশ্চয়। তবে আধুনিক কালের সাহিতিকগণ একে চর্যপদ বলেই নামকরণ করেছেন। চর্যাপদের পদ ও পদকর্তাঃ চর্যাপদ মূলত কতগুলো কবিতা বা গানের সংকলন।

২৪ জন বোদ্ধ সিদ্ধাচার্য এর ৫১ টি পদ লিখেছিলেন। কিন্তু এর মধ্যাকার ১১ নং পদটির ব্যাখ্যা পাওয়া যায় নি। আবার পুঁথির কয়েকটি পাতা নষ্ট হওয়াতে এর ২৪, ২৫ ও ৪৮ নং পদগুলির সম্পূর্ণ পদ ও ২৩ নং পদের শেষাংশ পাওয়া যায়নি। তাই বর্তমানে এর মোট সাড়ে ছেচল্লিশটি পদ রয়েছে। ২৪ জন পদকর্তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি পদ রচনা করেন কাহ্নপা তিনি মোট ১৩টি পদ রচনা করেছেন।

এছাড়াও ভুসুকুপা ৮টি, সরহপা ৪টি, লুইপা, শান্তিপা ও সবরপার ২টি করে এবং অন্যান্যদের ১টি করে পদ রচনা করেছেন। তবে লাড়ীডোম্বীপার কোন পদ পাওয়া যায়নি। অন্যান্য পদকর্তাগণ হলেন কুক্কুরীপা, বরুআপা, গুন্ডরীপা, চাটিলপা, ভুসুকুপা, কামলিপা, মহিত্তাপা, বীণাপা, আজদেবপা, ডেন্ডণপা, দারিকপা, ভাদেপা, তাড়কপা, কঙ্কণপা, জঅনন্দিপা, ধামপা ও তন্ত্রীপা। এই ২৪ জন পদকর্তা প্রাচীনযুগের বিভিন্ন সময় চর্যাপদগুলো লিখেছেন।


সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।