আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কীর্তন অথবা জোছনা দেখার গল্প

আ মা র আ মি

হঠাৎই সিদ্ধান্ত, আমরা রওনা হয়ে গেলাম মানিকগঞ্জের উদ্দেশ্যে, কীর্তন শুনতে। আমরা চারজন। গাবতলি থেকে ফরিদপুরের বাসে। মানিকগঞ্জের আগেই পথেই নেমে পড়লাম, গ্রামের নাম, মনেনেই। জোছনা এখানেও তার রূপ খুলতে পারেনি পুরোটা।

পাশের কারখানার তীব্র আলো আমাদের বিরক্তি বাড়ালো শুধু। তবু হেঁটে চললাম সামনে। আরও সামনে। খানিকটা এগোতেই মাইকের আওয়াজ টের পাওয়া গেল, কীর্তন চলছে। খবর শুনলাম, গত তিনদিন ধরেই কীর্তন চলছে এখানে।

আজ শেষদিন। গত দু'দিন নাম কীর্তন চলেছে। আজ রাসলীলা। প্রসাদের ব্যবস্থা আছে সবসময়ের জন্য। কীর্তনের পাশেই একটু আড়ালে চলছে বড় বড় চুলায় রান্না।

ভাত, দু'ধরনের ডাল, অতিথিরা সবজি পাচ্ছে সাথে। নানা নিয়মের মধ্যে খেতে বসা, খুব ভয়ে ভয়ে, না জানি কি করতে কি ভুল হয়ে যায়! অসাধারণ স্বাদ তার। প্রসাদ খেতে খেতে মনে হচ্ছিলো, এইরকম অনবরত রান্না আর মানুষকে খাওয়ানোর কাজটা ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকায় হলে কতই না ভালো হত! কীর্তন চলছে টানা। একের পর এক। আমরা খানিকটা বাইরে, কখনো ভিতরে।

একবার বেড়িয়ে গেলাম এলাকা ছেড়েই। কানে তখনো কীর্তনের কথা, 'যদি মাছের চোখ হতো আমার, তোমারে দেখতাম অপলক'। উল্টো রাস্তা ধরে এগুতে এগুতে আলো ছাড়িয়ে শুধু জোছনায়, শুধু জোছনায়! খোলা মাঠ, বিশাল আকাশ, আর অসম্ভব জোছনা আমাদের শুধু পাগল করতেই বাকি রেখেছিলো। মাথার মধ্যে আসা লাইনগুলোকে সাজাতে পারছিলাম না কিছুতেই। তবু কি যেন চেষ্টা শেষেই শরীর ঘেষে ছুটে গিয়েছিলো মৃত্যু এক।

আমরা অবাক হয়ে ভেবেছিলাম, এ কোন ভূত? ফিরলাম আবার আস্থানায়। ঘুম তাড়াতে খানিক পরপরই উঠে হাটছি, কীর্তন শুনছি, আর জোছনায় মাখামাখি। অবশেষে শেষ হলো জোছনা, কীর্তন, কৃষ্ণের লীলা। আমাদের চোখ তখন ঘুমের লীলায় লাল।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।