আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ওয়ার্ল্ড সিটিজেন

মিটুল

আমার ওয়ার্ল্ড সিটিজেন কনসেপ্টটি সম্পর্কে সকলের উন্মুক্ত মন্তব্য আশা করছি। সকলকে আমি অবশ্যই তার জন্য অগ্রীম সম্মান জানাচ্ছি। লক্ষ্য করুন সৃষ্টির্কতা আমাদের কাউকে নিদির্ষ্ট একটি দেশের সীমারেখা ভেদ না করার শর্তে জন্ম দেননি। অথবা যে স্থানে জন্ম দিয়েছেন সেই স্থানটি যে দেশ হোক না কেন, তার জাতীয় সীমারেখা, সৃষ্টি কর্তা নয় বরং মানুষ যুগে যুগে আপন স্বার্থ আর হিংসাকে প্রাধান্য দেওয়ার ফলে তৈরী করেছে। তারপর পাসপোর্ট, ভিসা ইত্যাদী ব্যবস্থাও তো মানুষেরই সৃষ্টি।

এ সবই রাজনীতির ফলাফল.......... এখন ভাবুন এবং বিশ্বাস করুন যে আল্লাহ আপনাকে স্বল্পতম সময় ও একটি জীবন দিয়ে এই পৃথিবীতে পাঠিয়েছে। নয় শুধু বাংলাদেশ বা আপনি যে দেশে জন্ম নিয়েছেন শুধু সে দেশের জন্য পাঠিয়েছে। এই ভেদাভেদ আমরা করেছি। আল্লাহ নিশ্চয় আমাদের সকলকে এই পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন, পৃথিবীর জন্য। নয় শুধু একটি নির্দিষ্ট দেশের জন্য।

হ্যা একথা অবশ্যই ধ্রুব সত্য যদি আপনার যোগ্যতা না থাকে পুরো পৃথিবীকে কিছু দেওয়ার তাহলে অন্য কথা। তাই বলে বিশ্বাস পরিবর্তন হওয়া উচিত নয়। প্রত্যেকের টার্গেট এই হওয়া উচিত যে আমি একজন ওয়ার্ল্ড সিটিজেন। আরেকটি বিষয় অবশ্যই মানি, সেটি হলো আপনার প্রথম দায়িত্ব নিজেকে ভালবাসা এরপর আপনার পরিবার। তারপর একেএকে আপনার প্রতিবেশীর প্রতি দায়িত্ব, আত্বীয়দের প্রতি ইত্যাদি........ অর্থাত, সামার্থ অনুসারে মানুষ তাকে ও তার পরিবার ছাড়া প্রতিবেশী, আত্বীয় এভাবে অন্যদের প্রতি দায়িত্ব পালনের মধ্যদিয়ে তার মানব জন্ম সাথর্ক করবেন।

এখানে দেশপ্রেমের সংজ্ঞাটি পেতে পারেন। সাধারনত আমরা যে গ্রামে জন্মগ্রহন করি এবং যেখানে শৈশব কাটে সেখানের প্রতি একটা মায়া পড়ে যায়। এরপর প্রাইমারী স্কুল, হাইস্কুল, কলেজ কার না নিজের বলে মনে হয় না। নিজের গ্রামের জন্য সবারই কিছু করতে ইচ্ছা করে। নিজের স্কুলের জন্য ইত্যাদি অনেক ইচ্ছার সকলের বুকে জাগে।

কিন্তু বাধ সাধে সামর্থ। সামর্থ না খাকলে মানুষ নিজেকে পর্যন্ত সাহায্য করতে পারেনা। কিন্তু সেও একই সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টি "মানুষ"। আবার সামর্থ থাকলে একজন মানুষ তার পরিবার তার গ্রাম, উপজেলা বা জেলা ছাড়িয়ে গেলে নিশ্চয় দোষের কিছু হবে না। কেউ কেউ আমাদের দেশেই আছেন যে, কোন একটি গ্রামের সন্তান হলেও সামর্থ থাকার দরুন পুরো দেশটিকে সাহায্য করতে পেরেছেন।

আপনি শেখ মুজিব বা জিয়াউর রহমান.......... বলতেও পারেন। সামর্থ বলতে তো শুধু আর্থিক সামর্থ নয় নিশ্চই। একজন কবির কবিতা যদি সমগ্র দেশের ছাত্র/ছাত্রীরা বইতে পড়ে সেটাওতো তার সামর্থ সমগ্র দেশের জন্য কিছু করা। সেক্ষেত্র তার গ্রামের সীমান্ত ছিড়ে বেরিয়ে আসা নিশ্চয় অন্যায় হয়নি। নাকি মানুষের তৈরী সেই সীমান্ত, পাসপোর্ট, ভিসা পদ্ধতি না থাকার দরুন ভাবনাটা ভিন্ন।

একবার ভাবুন তো পেছনের কথা। সব দেশের ক্ষেত্রেই কথাটা প্রযোজ্য। যেমন ৪৭ সালে পাশাপাশি গ্রাম অথবা একই গ্রাম দু'ভাগে বিভক্ত হয়ে একটা পড়ল পাকিস্তানে আর একটা ভারতের। একই পরিবারের সদস্যবৃন্দ পড়ে গেলেন দুই দেশে। আসার যাওয়ার বৈধ পদ্ধতি হচ্ছে পাসপোর্ট ও ভিসা।

মজার ব্যাপার হচ্ছে আপনি আমি মানতে না পারলেও স্বয়ং পাসপোর্ট-ভিসা আইন প্রণেতারা সীমান্তের এই সকল সমস্যায় এখনো বড় ধরনের কোন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে পারেনি মানবতার কাছে। যাইহোক প্রসংগটি হচ্ছে, ওয়ার্ল্ড সিটিজেন ভাবনা। ওয়ার্ল্ড সিটিজেন অর্থ এই নয় যে নিজের দেশকে, গ্রামকে অপছন্দ করা। বিষয়টি এরকম যে মায়ের কোল ছাড়তে না পারার দরুন অনেক ছেলে-মেয়েদের উচ্চ শিক্ষা গ্রহন হয় না দেখেছি। কারণ মাকে ছেড়ে ছেলেটি গ্রাম খেকে শহরে যাবেনা অথবা মা ছেলেকে ছেড়ে থাকতে পারবেন না বিধায় ভাল মেধা থাকা সত্বেও ছেলেটির শহরের ভাল কলেজে পড়া হলোনা।

আমার সাফ কথা স্বল্প আয়ুর এই আমাকে আমি ঠকাতে পারবো না। আমি অবশ্যই আমার জীবনটা উপভোগ করতে চাই, আমার সন্তানকে আমার চেয়ে একধাপ এগিয়ে রেখে যেতে চাই যেন পৃথিবী আমার নিকট থেকে যা পেয়েছে ওর থেকে একটু হলেও বেশী পায়। আমার জীবন উপভোগ কখনও কোন অসততা বা আমার ধর্মীয় অনুশাসনকে উপেক্ষা করে নয়। যে দেশেই আমি থাকিনা কেন, ওয়ার্ল্ড সিটিজেন হিসাবে পৃথিবীর গরীব দেশগুলির প্রতি অবশ্যই আমার কর্তব্য আছে। যেমন এখন পালন করছে লাখ লাখ বিদেশী দাতা সংস্থার মাধ্যমে।

উন্নত দেশের নাগরিকদের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সাহায্য একত্র করে দাতা সংস্থার পাঠানো সাহায্য হয়তো আমরা সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারছি না। কিন্তু তাদের কথা চিন্তু করে দেখুন যে সকল পরিবার ১০ ডলার বা ইউরো দিয়ে তহবিলটাকে কোটি টাকায় রুপান্তুর করেছে তারাতো পৃথিবীকে সাহায্য করতেই চেয়েছে। ১৫ কোটির এই বাংলাদেশে যত লোক বিদেশে যাবে তার দুটো ভালো দিক। ১) দেশের লোক কমলো অর্থাত তার পেছনে দৈনিক খরচ বাচলো ২) বিদেশ থেকে পাঠানো ভিন দেশের মুদ্রা দেশে প্রবেশ করে তা আর দশ জনের দৈনিক খরচ যোগালো। আমি পরিবার সহ বিদেশে সেটেল্ড হতে পারলে ১ টি তে ৩ জনের দৈনিক খরচ বাচবে আর আমার সামর্থ অনুসারে আমার চিরচেনা বাংলাদেশের জন্য আমি সাহায্য করবো বিভিন্ন উপায়ে।

একই সাথে আমি পাবো আমার সন্তানের উজ্জ্বল ভবিষ্যত। সেও বাংলাদেশকে আরো বেশী দিতে পারবে কারণ আমি তাকে সেই হেরিটজ দিয়ে যাবো। সেখাবো তাকে মূল্যবোধ আর্ হিউম্যান ইথি্ক্স। সবশেষে, Live each day as if it were your last. Appreciate every moment and take from it everything that you possibly can for you. May never be able to experiance it again.

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.