আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ফতোয়া ১০ - প্রসঙ্গ : সাহাবীদের ব্যক্তিগত নোসখা বা কপি

"অবশ্যই আমার নামাজ আমার এবাদাত আমার জীবন আমার মৃত্যু সবকিছুই সৃষ্টিকুলের মালিক আল্লাহর জন্যে। "

প্রশ্ন : 'আসসিদ্দিক আবু বকর' নামক গ্রন্থের ৩১৬ নং পৃষ্ঠায় সূরা বাকারার নিম্নোক্ত আয়াতটি 'হাফেজু আলাছ ছালাওয়াতে ওয়াস সালাতেল উসতা' (সূরা বাকারা, আয়াত ২৩৮) এরপর রয়েছে 'ওয়া সালাতিল আছরে'। এর ব্যাখ্যা দেয়া হয়েছে যে, কোরআনের যে নোসখা হযরত আয়শা (রা.), হযরত উম্মে সালমা (রা.) এবং হযরত হাফসা (রা.)-এর কাছে ছিলো সেখানে আয়াতটি 'ওয়া সালাতিল আছরে' অংশটিও অন্তর্ভুক্ত ছিলো। অথচ আমাদের সকলের কাছে কোরআনের যেসব নোসখা রয়েছে এসকল নোসখায় আয়াতটির উল্লেখিত অংশ নেই। এ ব্যাপারে আপনার মতামত কি? উত্তর : কোনো কোনো সাহাবার কাছে কোরআনের ব্যক্তিগত কপি সংরক্ষিত ছিলো।

সেসব কপিতে তারা তাফসীর, ব্যাখ্যা বা টীকা হিসেবে কিছু ফুটনোট লিখে রাখতেন। ব্যাখ্যামূলক এসব কথা অবশ্যই কোরআনের মূল অংশ ছিলো না, বরং সেসব কথা ছিলো টীকা টিপ্পনী। উল্লেখিত আয়াতেও 'ওয়াছালাতিল আছরে' শব্দ দুটি সেই রকমের টীকা টিপ্পনী। এই শব্দ দুটি কোরআনের অংশ নয়। রসূল (স.) বিভিন্ন হাদীসে 'ছালাতুল উছতা' কথাটির ব্যাখ্যায় আছরের নামায বলেছেন।

সাহাবায়ে কেরামের সময় থেকেই আলেম এবং ফকীহদের মধ্যে এই বিষয়ে মতপার্থক্য রয়েছে যে, 'ওয়া সালাতিল উছতা' দ্বারা আসলে কোন নামায বোঝানো হয়েছে? ফজর, যোহর নাকি আছর? সহীহ হাদীস অনুযায়ী এখানে আছরের নামায বোঝানো হয়েছে। খুব সম্ভব হযরত আয়শা (রা.) তার ব্যক্তিগত কপিতে 'ওয়া সালাতিল উছতা'র ব্যাখ্যায় 'ওয়া সালাতিল আছরি' কথাটি লিখেছেন। সেই যুগে মূল বাণীর ব্যাখ্যা, টীকা-টিপ্পনী আলাদাভাবে লেখার রেওয়াজ ছিলো না। বর্তমানে এ নিয়ম লক্ষ্য করা যায়। অনেকে এক্ষেত্রে আলাদা রংয়ের কালি ব্যবহার করেন।

কোরআনের যে কপি বর্তমানে আমাদের ঘরে ঘরে রয়েছে এই কপিকে 'নোসখায়ে ওসমানী'ও বলা হয়ে থাকে। এই কপি তৈরীর সময় হযরত ওসমান (রা.) সকল প্রকার টীকা-ভাষ্য বাদ দিয়েছিলেন। তিনি কোরআনকে সেই রূপে লিপিবদ্ধ করেছিলেন, যেভাবে হযরত জিবরাঈল (আ.) রসূল (স.)-এর কাছে নিয়ে এসেছিলেন। হযরত ওসমানের কপি করার এই রীতি সম্পর্কে সকল সাহাবা এবং সকল ইমাম ঐক্যমত পোষণ করেন। ব্যাখ্যা বা টীকা-টিপ্পনীস্বরূপ উল্লেখ করার অন্যান্য উদাহরণও পাওয়া যায়।

যেমন হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.)-এর ব্যক্তিগত নোসখা বা কপিতে 'ফাছিয়ামু ছালাছাতু আইয়ামিন মোতাতাবেয়াত' উল্লেখ রয়েছে। এখানে শেষোক্ত শব্দটি অতিরিক্ত। এই সংযুক্তি তিনি ব্যাখ্যাস্বরূপ অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন। কারণ রসূল (স.)-এর কাছে তিনি ঐ রোযা সম্পর্কে এ রকম শুনেছিলেন যে, তা পর্যায়ক্রমে রাখতে হবে। *** জবাব দিয়েছেন শায়খ ইউসুফ আল কারদাওয়ী *** *** অনুবাদ করেছেনঃ হাফেজ মুনির উদ্দীন আহমদ ***


সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১২ বার

এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।