আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ক্যাচ



ল্যাতিন ক্যাপিয়ার থেকে ইংরেজি ক্যাচ শব্দটির উৎপত্তি। ক্যাপিয়ার মানে নেওয়া, গ্রহণ করা। তবে ক্রিয়াপদ হিসেবে ইংরেজি ক্যাচ শব্দটির একাধিক ব্যবহার রয়েছে এবং সেগুলো অর্থের দিক থেকে অনেকটা কাছাকাছি। যেমন ধরা, লুফে নেয়া, পাকড়াও করা, গ্রেফতার করা, ফাদে বা জালে ধরা, নাগাল পাওয়া। আর ক্রিয়াপদটির আগে অথবা পরে প্রিপজিশন বা প্রসর্গযুক্ত হয়ে বহুবিধ অর্থব্যঞ্জন অবতারণা করতে পারে।

আর বিশেষ্য হিসেবে শব্দটি ধরা, যা ধরা হয় বা ধরার যোগ্য, যা ঠকানোর অভিপ্রায়যুক্ত, চতুর প্রশ্ন, কৌশল, ছিটকিনি এমনকি সমবেত সংগীত অর্থেও ব্যবহৃত হতে পারে। বাক্যালঙ্কার হিসেবেও এর ব্যবহার রয়েছে। কিন্তু ক্রিকেটে শব্দটি মাত্রার গতিময় ব্যঞ্জনা পেয়েছে। ক্রিকেটে ক্যাচ বৈধ হবার জন্য রয়েছে একাধিক শর্ত। প্রথমত, বোলারের বোলিং বৈধ ঘোষিত হতে হবে।

দ্বিতীয়ত, ডেলিভারিটি ব্যাটসম্যানের ব্যাট অথবা হাতে লাগতে হবে। তৃতীয়ত, মাঠের নির্ধারিত সীমার মধ্যে থেকে ফিল্ডারকে বলটি মাটি স্পর্শ করার আগেই তালুবন্দি করতে হবে। দুই রানের ফাঁকে বল আটকিয়ে অথবা পা দিয়ে ফিক করেও ক্যাচ লোফা যায় (১৯৫৯ সালে কানপুরে টেস্টে ভারতের নরি কন্ট্রাক্টর অস্ট্রেলিয়ার অ্যালান ডেভিডসনের বলে পুল করেন। বলের গতি দেখে শর্ট লেগে দাঁড়ানো নেইল হার্ভে ঘুরে দাঁড়িয়ে মাথা নিচু করেন। কিন্তু বলটি হার্ভের দুই রানের ফাঁকে এসে থেমে গেলো।

হার্ভে বলটি লুফে নিলেন)। কিন্তু হালজমানায় ক্রিকেটারদেরকে ধরার কিছু নয়া নতিজা (নিয়ম) অনুসৃত হচ্ছে। আপনি হাতে ডলারের কড়কড়ে নোট নিয়ে উদ্দেশ্যপূর্ণভাবে এবং আপাতদৃষ্টিতে নির্দোষ প্রশ্ন করতে পারেন ‘ওহে ভদ্রে, পিচের অবস্থা কেমন? আগামীকাল আবহাওয়া শুল্ক থাকবে তো?’ দেখবেন মার্ক ওয়াহ আর শেন ওয়ার্নেরা ডলারগুলো হিপ পকেটে ঢুকিয়ে বলবে : বুড়ো বাদর কোথাকার! পিচ রীতিমতো বাউন্সি আর আবহাওয়া বেজায় শুষ্ক, এটাও জানো না? অথবা জুয়াড়ির বেশে সেলিম মালিককে বোকা বানাতে পারলে উত্তর পাবেন, ম্যাচ গড়াপেটার মতো সহজ কাজ দ্বিতীয়টি নেই! বুকমেকার গুপ্তের পকেটটা একটু নাড়–ন। দেখবেন ওখানে আজহার-ক্রোনিয়ের মতো অনেকে ধরা খেয়ে বসে আছেন। ভারতীয় পুলিশ ক্রিকেটার ধরতে যে সিদ্ধহস্ত, তার প্রমাণ তো ইতিমধ্যে পেয়েছেন।

অবশ্য ম্যাচ গড়াপেটায় যারা ধরা খেয়েছিলেন, তাদের অনেকেই এখন শাপমুক্ত হয়ে গেছেন। ক্রিকেট মাঠে মূলত ব্যাটসম্যানকে ধরার খেলা চলে। বোলার, উইকেটকিপারসহ বাকি নয় বান্দাও ক্যাচ ধরার শিহরিত ধান্ধায় অষ্টপ্রহর থাকেন সতর্ক । আবার ফিল্ডার ক্যাচ মিস করলে অথবা বলটি উড়িয়ে বাউন্ডারিতে পাঠাতে পারলে ব্যাটসম্যান যার পরনাই খুশি হন। ব্যাটসম্যান পিটাবে আর ফিল্ডার তা লুফে নিতে কোশেশ করবে- এটাই ছিল স্বাভাবিক নিয়ম।

কিন্তু এখন শুধু পুলিশই নয়, সরকারি গোয়েন্দা আর আয়কর কর্তারাও ক্রিকেটারদেরকে ক্যাচের বলি বানাতে ওত পেতে থাকেন। এটা বড় আশঙ্কার কথা। তাই আমরা জানি না, কাইউম কমিশন আর কিং কমিশনের পর আর কোন কোন কমিশন মজলিশ বসাচ্ছে। তবে আমরা এটা সবাই জেনে গেছি যে, খোদ আইসিসি এখন অ্যামবুশ মার্কেটিং-এর ব্যানারে ক্রিকেটার ধরছে।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.