আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

স্মৃতির গভীরে

কম্পিউটার বিশারদ পেশায়, নেশায় যুক্তিবাদী

একটা গল্প দিয়েই শুরু করা যাক। এক পেশেন্টের মস্তিষ্ক অপারেশনের সময় ভুলক্রমে তার হিপোক্যাম্পাস বাদ দেওয়া হয়েছিল। তার ফলে দেখা গেল, তার পুরোনো সব কিছুই মনে আছে কিন্তু নতুন করে আর কিছু মনে থাকছে না। এরকম ব্যক্তির সাথে একটা আদর্শ কথোপকথন দেওয়া আছে রামচন্দ্রানের বই ফ্যান্টমস ইন দ্য মাইন্ড – এ। ধরা যাক, ডাক্তার কথা বলতে বলতে বাইরে থেকে ঘুরে এলেন।

এসে জিজ্ঞাসা করলেন – “আমাকে মনে করতে পারেন?” “একদম না” একটা পেন দেখিয়ে বলা হল, “এটা কি চিনতে পারেন?” “একটা পেন” “কি রঙের এটা?” “লাল। ” পেনটা বালিশের নিচে ঢুকিয়ে রেখে জিজ্ঞাসা করা হল, “কি করা হল?” “পেনটা বালিশের তলায় ঢুকিয়ে রাখা হল। ” আরো কিছুক্ষন কথা বলার পরে আবার তাকে জিজ্ঞাসা করা হল, “আপনাকে কিছু একটা দেখানো হয়েছিল একটু আগে, মনে পড়ে?” ঘাবড়ে গিয়ে উত্তর, “না তো!!” “আপনাকে একটা পেন দেখানো হল এই মিনিটখানেক আগে …” “মনে তো পড়ে না। ” এইধরনের রোগীর কাছে স্মৃতি যেন দাঁড়িয়ে গেছে একটা নির্দিষ্ট সময়ে। এর পর থেকে তার আর কিছু মনে থাকে না, কিন্তু তার আগের ঘটনা সব মনে থাকে।

এই একই ব্যক্তি বলে দিতে পারে তার কলেজের প্রথম দিনের কথা, তার চাকরিতে যোগদানের কথা বা জটিল অঙ্কের ফর্মুলা যা তাদের স্নাতকস্তরে পড়ানো হয়েছিল। এইধরনের রোগী আমাদের দেখিয়ে দেয় মস্তিষ্কের একেকটি অংশের গুরুত্ব। হিপোক্যাম্পাস আসলে মস্তিষ্কে নতুন স্মৃতির ট্রেস তৈরি করে, যদিও, সেই ট্রেস গুলো হিপোক্যাম্পাসে তৈরি হয় না (হলে হিপোক্যাম্পাসের সাথে পুরনো স্মৃতিও নষ্ট হয়ে যেত)। মানবজাতির একটা বড় চ্যালেঞ্জ আলজ়হাইমারস ডিসিসও তৈরি হয় এই অংশের ত্রুটির কারনে। এনকেফেলাইটিস রোগ আক্রান্ত রোগীর হিপোক্যাম্পাসের আক্রান্ত হয়, মস্তিষ্কে অক্সিজেনের অভাবে।

রহস্যময় মস্তিষ্কের সমস্ত অংশের কাজ ঠিকঠাক জানা যায়নি, কিন্তু জানার চেষ্টার কোনো ত্রুটি নেই। হিপোক্যাম্পাস এরকমই একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ যার গুরুত্ব জানা থাকলেও কার্যপদ্ধতি জানা নেই, মনস্তত্ত্ববিদ আর নিউরোসায়েন্টিস্টদের মধ্যে দ্বিমত আছে। সন্দেহ নেই ভবিষ্যতের জন্য এ এক বিরাট চ্যালেঞ্জ। হিপোক্যাম্পাস - পড়ে দেখুন। [wjsK=http://en.wikipedia.org/wiki/Hippocampus]


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।