আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সিরিয়ার প্রশ্নে রুশ-যুক্তরাষ্ট্র আলোচনা শুরু

এদিকে বিশ্বব্যাপী রাসায়নিক অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ চুক্তির পক্ষে স্বাক্ষর করার জন্য আনুষ্ঠানিক আবেদন জানিয়েছে সিরিয়া। বৃহস্পতিবার সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি ও রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ সিরিয়ার রাসায়নিক অস্ত্র ত্যাগে রুশ পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা শুরু করেন। আলোচনা দুদিন স্থায়ী হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আলোচনার বিষয়ে কেরি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেছেন, “এটা করা সম্ভব বলেই আমরা মনে করি। ” সঙ্কট মোচনের চেষ্টায় রাশিয়ার এই পরিকল্পনার প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্র “কৃতজ্ঞ” বলেও মন্তব্য করেন কেরি।

তবে এই কূটনৈতিক প্রচেষ্টা ব্যর্থ হলে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর প্রয়োজন হতে পারে বলে আলোচনার পর এক সংবাদ সম্মেলনে মন্তব্য করেছেন কেরি। “এটা কোনো খেলা নয়,” বলেন কেরি, “প্রেসিডেন্ট ওবামা পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, কূটনৈতিক প্রচেষ্টা ব্যর্থ হলে আসাদের রাসায়নিক অস্ত্র প্রয়োগ করার ক্ষমতা অকার্যকর করতে সামরিক শক্তি প্রয়োগের দরকার হতে পারে। ” “শক্তি ব্যবহার করার বাস্তব হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের হস্তক্ষেপ এবং রাশিয়ার মধ্যস্থতায় আসাদ সরকার প্রথমবারের মতো স্বীকার করলো তাদের কাছে রাসায়নিক অস্ত্র ও গোলা আছে, আর তারা এগুলো পরিত্যাগ করতে প্রস্তুত,” বলেন কেরি। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হুমকির বিষয়ে ভিন্নমত পোষণ করেন সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ল্যাভরভ। তিনি বলেন, “আমরা এই বিষয়টিকে কেন্দ্র করেই এগিয়েছি যে, এই সমস্যার সমাধান হলে সিরিয়ান আরব রিপাবলিকের ওপর হামলা চালানোর দরকার হবে না।

” ২১ অগাস্ট সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের প্রান্তে বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রিত একটি এলাকায় রাসায়নিক হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। এ হামলার জন্য প্রেসিডেন্ট আসাদ ও বিদ্রোহীরা পরস্পরকে দায়ী করে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা শক্তিগুলো এ হামলার জন্য আসাদ সরকারের অনুগত বাহিনীকে দায়ী করে। নিজ গোয়েন্দা সূত্রের বরাত দিয়ে হামলায় ৪শ’ শিশুসহ ১৪শ’রও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে বলে দাবি করে যুক্তরাষ্ট্র। যদিও যুক্তরাষ্ট্রের এই সংখ্যার সঙ্গে অনেক দেশই একমত নয়।

এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় সিরিয়ার বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ নেয়ার তোড়জোড় শুরু করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা । সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের যে কোনো হামলার প্রতিক্রিয়ায় সিরিয়ার পক্ষে ইরান ও লেবাননের হিজবুল্লাহ’র জড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়। এতে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে ব্যাপক সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়। জাতিসংঘ কথিত রাসায়নিক হামলার তদন্ত শুরু করলেও যুক্তরাষ্ট্র জাতিসংঘের সিদ্ধান্ত ছাড়াই সিরিয়া হামলার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু বিশ্বের অধিকাংশ দেশই এক্ষেত্রে জাতিসংঘের তদন্ত ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করার পক্ষে অবস্থান নেয়।

আর রাসায়নিক হামলা জন্য রাশিয়া বিদ্রোহীদের দায়ী করে। এ পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের জনমতও ওবামার বিপক্ষে চলে যায়। সমর্থনের আশায় নিজ দেশের জনপ্রতিনিধিদের সমর্থন পাওয়ার জন্য সিরিয়া হামলা প্রশ্নে কংগ্রেসে ভোট আহ্বান করেন ওবামা। কিন্তু সেখানেও সমর্থন না পাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়ায় ভোটাভুটি স্থগিত করা হয়। ওবামার এ কোণঠাসা অবস্থায় তাকে কিছুটা নিঃশ্বাস নেয়ার মতো জায়গা করে দেয় রুশ প্রস্তাব।

রাশিয়া প্রস্তাব দেয়, যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়ায় হামলার হুমকি প্রত্যাহার করলে সিরিয়া রাসায়নিক অস্ত্র ত্যাগ করবে। এতে আশার আলো দেখতে পেয়ে প্রস্তাব লুফে নেয় ওবামা প্রশাসন। সিরিয়ায় হামলা চালিয়ে দেশটির রাসায়নিক অস্ত্র সক্ষমতা ধ্বংস করতে চেয়েছিল ওবামা প্রশাসন। কিন্তু আলোচনার মাধ্যমেই তা সম্ভব হলে হামলা এড়িয়ে যাওয়াই ভালো, এই মনোভাব নিয়ে প্রস্তাবিত রুশ পরিকল্পনা মেনে নেয়ার লক্ষ্যে আলোচনা শুরু হয়।


সোর্স: http://bangla.bdnews24.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.