আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভাবনায় এখন ওয়ানডে

২০০৫-এর পর ২০০৯ সালে দুই জয়। এরপর আবার ২০১৩। ফিল্ডিং কোচ কোরি রিচার্ডসের কৌতূহলটা তাই স্বাভাবিকই। এত লম্বা লম্বা বিরতি দিয়ে এসেছে একেকটা জয়, দলের সবাই নিশ্চয়ই সব জয় দেখেনি। পরশু ড্রেসিংরুমেই জানতে চাইলেন, ‘তোমাদের মধ্যে কে দেখেছে সব জয়?’
এনামুল হক জুনিয়রের দুর্ভাগ্য, আরেকটি টেস্ট জয়ের ম্যাচের চতুর্থ দিনেই ফিরে যেতে হয়েছে দেশে।

নইলে কোরির প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ আশরাফুলের মতো তিনিও বলতে পারতেন, ‘আমি। ’
২০০৫ সালে চট্টগ্রামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট জয়। ২০০৯ সালে সেন্ট ভিনসেন্ট আর গ্রেনাডায় জয় এল ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। এবার জয় হারারেতে। চারটি জয়েই মাঠে থাকতে পেরে নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করছেন আশরাফুল, ‘আমার ভাগ্য আসলেই খুব ভালো।

চারটা জয়েই দলের সঙ্গে ছিলাম। এ ছাড়া শ্রীলঙ্কা আর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ড্র করা একটা টেস্টেও আমি দলের অংশ ছিলাম। ’
জিম্বাবুয়ে ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে আগের তিনটি টেস্ট জয়ের সঙ্গে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এবারের জয়ের একটা পার্থক্যও চোখে পড়ছে আশরাফুলের, ‘আগের জয়গুলোর সময় আমরা খুব ভালো খেলছিলাম। কিন্তু এবার প্রথম টেস্টটা হারায় চাপে ছিলাম। এই জয়টা অনেক জরুরি ছিল।

’ এ ছাড়া জিম্বাবুয়ের মাটিতে এর আগে বাংলাদেশের সব সাফল্যই ছিল ওয়ানডেতে। ২০১১ সালের সফরে একমাত্র টেস্টে পরাজয়ে অনেক ওলটপালট হয়ে গেছে বাংলাদেশের ক্রিকেটে। এবারও প্রথম টেস্টে হারের পর জেগেছিল একই শঙ্কা। দ্বিতীয় টেস্টে ১৪৩ রানের জয়টা তাই বড় একটা স্বস্তির উপলক্ষ হয়েই এসেছে।
আগের তিনটি টেস্ট জয়ের সঙ্গে আরেকটি পার্থক্যও আছে এবার।

প্রায় চার বছর পর টেস্ট জিতেও উৎসব করেনি বাংলাদেশ। একটা কারণ তো সংবাদ সম্মেলনে মুশফিকুর রহিমই বলেছেন। সাফল্যের স্মারক হিসেবে মুশফিক, রবিউল আর নাসির ম্যাচের স্টাম্প তুলে আনলেও জয়োৎসব করা হয়নি সাভারের ভবনধস ট্র্যাজেডির কথা মনে করে। অস্ট্রেলিয়ান কোচ শেন জার্গেনসেন জানিয়েছেন এর আরেকটা কারণও, ‘এই জয় দিয়ে আমরা শুধু সিরিজে সমতাই ফেরালাম। প্রথম টেস্টটা জিতলে বা ড্র করলেও হয়তো ছেলেরা আজ (পরশু) আরও বেশি খুশি হতো।

কারণ, এখানে আসার আগ পর্যন্ত আমরা সে রকম কিছু করার মতোই ভালো খেলছিলাম। ’
টেস্ট সিরিজ ড্রয়ের পর দৃষ্টিটা এখন ওয়ানডে সিরিজে। কালকের দিনটা হারারেতেই বিশ্রামে কাটানোর পর আজ সকালে বুলাওয়েতে রওনা হবে দল। সেখানে পৌঁছার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই অনুশীলনে নেমে যাবে বিকেলে। জলবসন্তে আক্রান্ত রুবেল হোসেন অবশ্য হারারেতেই থাকছেন।

একটু সুস্থ বোধ করলে রোববার তাঁর দেশে ফিরে যাওয়ার কথা।
ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজের ভেন্যু বুলাওয়ের কুইন্স স্পোর্টস ক্লাব মাঠ বাংলাদেশকে এখন পর্যন্ত সুখস্মৃতিই উপহার দিয়েছে। হারারে থেকে ৩৬৮ কিলোমিটার দূরের বুলাওয়েতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে আটটি ওয়ানডে খেলে ছয়টিতেই জয়। তবে এবার বাংলাদেশ যেন শুধু ইতিহাসের ওপর ভর করেই সুখস্বপ্নে ভাসতে চায় না। তা ছাড়া বুলাওয়ের ইতিহাস পাল্টে দেওয়ার প্রতিজ্ঞা যে জিম্বাবুয়েরও! সেটা জানেন বলেই হয়তো ওয়ানডে সিরিজ প্রসঙ্গে অনেক বেশি সতর্ক নাসির হোসেন, ‘আমার মনে হয় না, ওয়ানডে সিরিজটা খুব সহজ হবে আমাদের জন্য।

ওদের চারটা প্লেয়ার আছে, যারা বাংলাদেশের বিপক্ষে সব সময়ই ভালো খেলে—টেলর, মাসাকাদজা, সিবান্দা আর চিগুম্বুরা। ’
হ্যাঁ, বুলাওয়ের মাঠ যতই পয়মন্ত হোক, বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে লড়াইটা যে অনেক সময় বাংলাদেশ বনাম জিম্বাবুয়ের কোনো খেলোয়াড়ের লড়াই-ই হয়ে যায়, তা তো হারারের প্রথম টেস্টেই দেখা গেছে। বুলাওয়ের ‘হোম কন্ডিশন’ও তাই পুরোপুরি নিশ্চিন্ত রাখতে পারছে না বাংলাদেশকে। সেটি না রাখাই বোধ হয় ভালো এক দিক থেকে। আত্মবিশ্বাস থাকা ভালো, তবে অতি আত্মবিশ্বাস আবার সর্বনাশ ডেকে আনে।

সোর্স: http://www.prothom-alo.com     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।