আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রক্তচোষা ড্রাকুলা (চা শিল্পাঞ্ঝল-১০)

সময়... অনাদি... হতে... অনন্তের... পথে...

(উপরোক্ত ব্যাক্তিই সেই রক্তচোষা ড্রাকুলা) দেশের মেহনতি চা শ্রমিকদের ঘাম জড়িয়ে কষ্টে উপার্জন করা টাকা মেরে এক সাধারন চা শ্রমিক সন্তান থেকে কোটিপতি হওয়া চা শ্রমিক ইউনিয়নের বিতর্কিত সভাপতি রাজেন্দ্র প্রসাদ বোনার্জি প্রেফতার হওয়ার পর থেকেইে বেরিয়ে আসছে তার দুনর্ীতির বিরোদ্ধে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। (বর্তমানে জামিনে আছেন) কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মান করেছেন প্রাসাদ তুল্য তার নিজ বাসভবন। রাতা রাতি দেশ-বিদেশে ঘরে তুলেছেন কোটি কোটি টাকার জায়গা-জমি, বাড়ি-গাড়ী ও ব্যাংক ব্যলেন্স। তার সকল দুনর্ীতি ও অপসারনের দাবীতে শহরে এবং বিভিন্ন বাগানে বিােভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা অব্যাহত রয়েছে। নিজ স্বার্থে যে ভাবে ট্রেড ইয়নিয়ন গড়ে তুলেন রাজেন্দ্র বোনার্জি 1948 সালে প্রতিষ্টিত হয়েছে শ্রমিকদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি দেখা শুনার জন্য চা শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন।

প্রতিষ্টার পর তারা বেশ তথপর ছিল চা শ্রমিকদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে। কিন্তু এর কিছুদিন পর থেকে এখন পর্যন্ত শ্রমিকদের স্বার্থে আন্দোলন, ধর্মঘট কিংবা দর কষাকষি তারা করেছে এমন কোন নজির নেই এ ইউনিয়নের। 1970 সাল থেকে বিভিন্ন গুরুত্বপুর্ণ পদে থাকা বর্তমান বিতর্কিত সভাপতি রাজেন্দ্র বোনার্জি পুরো ইউনিয়নকে নিজের পারিবারিক সম্পত্তি বানিয়ে ফেলেছেন। তার বড় মেয়ের জামাই বিজয় বোনার্জি এ ইউনিয়নের যুগ্ন সম্পাদক। রাজেন্দ্রের মেয়ে ফাল্গুনী বুনার্জি ওমেন কমিটির চেয়ারপার্সনের কাজ করেন।

চা শ্রমিকদের রক্ত পানি করা টাকায় শ্রীমঙ্গলে প্রাসাদতুল্য বাড়ী বানিয়েছেন রাজেন্দ্র। প্রায় 1 কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে রামনগর গ্রামে তার এ বাড়ি তৈরিতে। কিন্তু রাজেন্দ্রের বাড়ির জন্য এখন সবাই এ গ্রামটিকে রাজেন্দ্র নগর বলে রসিকতা করে। পাশাপাশি তিনি বিদেশে ও গড়ে তুলেছেন কোটি কোটি টাকা মুল্যের বাড়ি গাড়ী । একজন হত দরিদ্র চা শ্রমিকের সন্তান হয়ে রাজেন্দ্র বুনার্জি রাতারাতি কোটিপতি হয়ে যাওয়াটাই সাধারন শ্রমিকদের মধ্যে সন্দেহের বিকাশ ঘটে।

শ্রমিকদের যে ভাবে বিদেশে তুলে ধরেন রাজেন্দ্র চা শ্রমিকদের মধ্যে নানা ধর্মের মানুষ রয়েছে। বেশির ভাগই হিন্দু। আরোও আছে বিহারী মুসলমান, খ্রীষ্টান মিশনারী, উরাং, মাঝি, সাওতাল, গারো, টিপরা, হাজং, উরিষ্যা, তেলেগু, দেশোয়ালী প্রভূতি। বিভিন্ন উৎসব যেমন- দুর্গাপুজা, দোলপুজা, কিংবা করম পুজার আগে শ্রমিকদের ভালো জামা কাপড় দেয়া হয়। নতুন পোশাক পরা শ্রমিকদের উৎসব ভিডিওতে ধারন করা হয়।

সেই ভিডিও দাতা গোষ্টিকে দেখিয়ে টাকা সংগ্রহ করেন রাজেন্দ্র প্রসাদ বুনার্জি। ফুলছড়া চা বাগানের গরীব চা শ্রমিকের সন্তান রাজেন্দ্র এভাবেই গড়ে তুলেন বিশাল অর্থের ভান্ডার। শ্রমিক ফান্ডের টাকা যে ভাবে ব্যয় করেন রাজেন্দ্র চা শ্রমিকদের ফান্ড থেকে ক্রয়কৃত যানবাহন- মোবাইল ইউনিয়ন নেতারা নিজেদের কাজে ব্যবহার করেন। শ্রমিকদের অর্থে জীপ, গাড়ী, মটরসাইকেল কেনা হযেছে। যেটা কখনই শ্রমিকদের কাজে ব্যবহার করা হয়নি।

এমনকি কোন শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে দুরবর্তি কোন হাসপাতালে নিয়ে যাবার জন্য ও নয়। 20 টি মোবাইল ফোন আছে ইউনিয়নের। মোবাইল গুলো বুনার্জি পরিবারের সদস্যদের ব্যাক্তিগত কাজে ব্যবহৃত হয়। চা শ্রকিদের আর্থসামাজিক উন্নয়নের নামে বিভিন্ন দাতা সংস্থা ও এনজিওর কাছ থেকে প্রাপ্ত মোটা অংকের অনুদান আত্নসাৎ করেছেন রাজেন্দ্র বুনার্জি। এমন অভিযোগ সাধারন শ্রমিকদের মধ্যে প্রচন্ড।

গণতন্ত্রের নামে ট্রেড ইউনিয়নে একনায়কতন্ত্র গণতন্ত্রের নামে ট্রেড ইউনিয়নে একনায়কতন্ত্র ও পরিবার তন্ত্র কায়েম করেছেন রাজেন্দ্র। নানা সেমিনার, সম্মেলন কর্মশালায় অংশ নেবার জন্যে তার পরিবারের সব সদস্যরা বিভিন্ন সময়ে আমেরিকা ও ইউরোপ গিয়েছেন প্রমোদ ভ্রমানের মতোই। তাও একাধিক বার। চা বাগানে কোন সরকারী শিা প্রতিষ্টান নেই। কিন্তু রাজেন্দ্র প্রসাদ বুনার্জি আজ পর্যন্ত শ্রমিকদের শিার স্বার্থে সরকারী শিা প্রতিষ্টানের জন্য আজ পর্যন্ত কোন পদপে গ্রহন করেননি।

সহকর্মিদের দিয়েছেন বাড়ি চা শ্রমিক ইউনিয়নে কর্মরত তার অনুসারিদের হাউজিং ফটের মতো তৈরি করে দিচ্ছেন বাড়ি। বিনিময়ে প্রতি মাসের বেতনের টাকা থেকে কিস্তি মাফিক হারে এক অংশ করে রেখে দেন বাড়ির মুল্য বাবদ। যাতে তার অনুসারীরা তার দুনর্ীতির বিরোদ্ধে মুখ না খুলে। রাজেন্দ্র বুনার্জি এভাবেই সকল কর্মচারিকে তৈরি করে রাখেন তার অনুসারী হিসাবে। পাশাপশি রাজেন্দ্র শ্রীমঙ্গল উপজেলার রামনগর গ্রামে ল ল টাকা মুল্যের জমি-জামার মালিক হয়েছেন।

চলবে...

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।