আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা

মানুষ তার মেধা খাটিয়েই পৃথিবীতে রাজত্ব করছে খুব বেশি দিন হয়নি। সব সময়ই ধারণা করা হয়েছে মানুষের ব্যবহারযোগ্য বুদ্ধির কম অংশই ব্যবহার করা হচ্ছে। সবটুকু মেধার ব্যবহার নিশ্চিত করা ছাড়াও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সৃষ্টি করতে তাই অদম্য চেষ্টা চলছে। বিভিন্নভাবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার উন্নয়নে কাজ হচ্ছে। এমন প্রযুক্তির উন্নয়নে এগিয়ে আছে চীন, জাপান ও আমেরিকা।

চীনের পঞ্চম প্রজন্মের একটি যুদ্ধবিমান দ্বিতীয় চেষ্টায় সফল উড্ডয়ন করার পর গুপ্তচর বিমানের নতুন যাত্রা শুরু হয়। এই পঞ্চম প্রজন্মের বিমানেই যুক্ত করা হয়েছিল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। আর এমনই সব যুদ্ধবিমানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সফল ব্যবহার প্রমাণ করছে। আরেক আমেরিকান যুদ্ধবিমান জে-২০ পরেই আমেরিকার এফ- ২২ সক্রিয়ভাবে 'স্টেলথ' প্রযুক্তি ব্যবহার করেছে, আর তাদের চালনায় খুবই বেশি করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রয়োগ করা হচ্ছে।

সামরিক বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরনের আলাদা করে স্বয়ংক্রিয় বুদ্ধি সম্পন্ন অস্ত্রের ভূমিকা ভবিষ্যতে আরও বাড়বে।

উল্টো করে ভাবলে যুদ্ধক্ষেত্রে মানুষের ভূমিকা কমতেই থাকবে। তাহলে এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে যুদ্ধের ময়দানে লড়বে কে এই প্রশ্নটার জবাব রয়েছে রোবট। মনুষ্য আকৃতির রোবটের উন্নয়ন গেল কয়েক দশকে কল্পনাকেও ছাড়িয়ে গেছে। খুব সহজ তাই সামরিক প্রযুক্তি বানানোর বিষয়ে সবার চেয়ে আগে এগিয়ে রয়েছে যোদ্ধা রোবট। এজন্য ইতোমধ্যেই আমেরিকা, যারা এ ধরনের কাজের জন্য ব্যয় করছে সারা বিশ্বের মোট খরচের অর্ধেক নিজেরাই।

সামরিক গবেষণায় সবচেয়ে শক্তিশালী এই দেশটি রোবট চালিত অস্ত্রের ব্যবহারে সবচেয়ে বেশি আগ্রহী। আমেরিকার পাইলটবিহীন ড্রোন বিমান তাদের সে গবেষণারই ফসল। এ প্রসঙ্গে বিজ্ঞানীরা প্রশ্ন করেই চলেছেন, কোনো বৈদ্যুতিক সার্কিটের বুদ্ধি কি মানুষের খুবই অনুগত বন্ধু হতে পারে নাকি তা সম্ভাব্য ভাবেই বিপজ্জনক? চিন্তা করতে সক্ষম অস্ত্রের বিরুদ্ধে মানুষ কি নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম? তবে এসব প্রশ্নের জবাবে ২০১০ সালে মিচিগান রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা সিদ্ধান্তে পৌঁছেছিলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিবর্তিত হতে পারে। তারা এক কৃত্রিম ধরনের প্রজাতির সৃষ্টি করেছিলেন, যাদের ডিএনএ বদলে দেওয়া হয়েছিল কম্পিউটারের কোড, যা নিয়মিতভাবে সংশোধিত হচ্ছিল, যেহেতু কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা স্বয়ংক্রিয় ভাবেই কাজ করতে পারে, তাই আমেরিকার বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করেছিলেন, - তা বিপজ্জনক, আর তা আলাদা করে আটকে রাখা দরকার। কেনটাকি রাজ্যের লুইস ভিল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী রমান ইয়ামপোলস্কি মনে করেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বন্ধনহীন সম্ভাবনা রাখে ও মানুষের মনের উপরে নানা ভাবে প্রভাব বিস্তার করতে পারে।

রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর লোকরা বরং উল্টো বিশ্বাস করেন, রাশিয়ার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পূর্ণভাবেই মানুষের উপরে নির্ভরশীল হবে। কারণ মানুষই ঠিক করে কোন ধরনের কৃত্রিম বুদ্ধি সম্পন্ন অস্ত্র ব্যবহার করা হবে। এমন বক্তব্যের বক্তব্য উপস্থাপন হলেও রোবটের আরও প্রযুক্তিগত উন্নয়নের দিকেই সবাই নজর দিচ্ছেন। কিভাবে রোবটের ভেতরে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে আরও নিখুঁত ও বাস্তবসম্পন্ন করা যায় সেদিকেই এখন কাজ চলছে। মানবিক আবেগসম্পন্ন রোবটের কথাও তাই বিজ্ঞানীরা ভাবছেন।

আবেগ পুরে দিয়ে কৃত্রিম মানুষের যে ধারণাকল্প বিজ্ঞানী লেখকরা বারবার বলে এসেছেন সেটাই যেন বাস্তবে আসবে। মানব আকৃতির রোবট নির্মাণে সবচেয়ে এগিয়ে আছে সনি কোম্পানি। তাদের আসিমো রোবট সাধারণের চোখ কপালে তুলে দিয়েছে। নিজে থেকেই মানুষের মতো হাঁটা, নাচ করা সহ যা কিছু সবার সামনে করে দেখায়; কে বলবে যে, সে কৃত্রিম বুদ্ধি মাথায় নিয়ে চলছে। আর তাই বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করেন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সত্যই মানব সমাজকে অগ্রগতির দিকে নিয়ে যাবে।

এছাড়া বেশ কিছু গবেষণা প্রমাণ করেছে, সব রকমের সাবধানতা নেওয়া স্বত্ত্বেও এ ধরনের বুদ্ধিকে আটকে রাখা যায় না। এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বিকাশে তাই অনন্ত চেষ্টাই শেষ সম্বল।

 

 

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com/

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।