আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মার্ক টোয়েন (পর্ব ৩৫)

timursblog@yahoo.com

মার্ক টোয়েনে ইচ্ছা ছিল আবার হার্টফোর্ডে গিয়ে পুরনো বাড়িটায় ওঠা । কিন্তু সুজির মৃত্য সব পাল্টে দিল । আর এখানে থাকলে আগের মতো লাগবে না বুঝতে পারলেন টোয়েন । শেষবারের মতো ঘরগুলোতে চোখ বুলিয়ে নিউ ইয়র্কে ফিরে গেলেন তাঁরা । গ্রীস্মকালে সারানাক হ্রদে, একটা লগ ক্যাবিনে থাকতেন তাঁরা ।

ক্যাবিনটাকে টোয়েন তাঁর 'গুহা' বলতেন । এখানে বসেই তিনি 'এ ডাবল ব্যারেল্ড ডিটেকটিভ স্টোরি' লিখেছেন । নিউ ইয়র্কে না ফিরে হাডসন নদীর উপর রিভারডেলে একটা বাড়ি ভাড়া নিলেন টোয়েন । জায়গাটা ছিল অ্যাপলটন প্লেস । সম্ভব হলে জায়গাটা কিনে নিতেন ক্লিমেন্স, কিন্তু টাকা ছিল না ।

পরের বছর ইউনিভার্সিটি অভ মিসৌরি থেকে সন্মানসুচক এল এল ডি ডিগ্রি পেলেন তিনি । ডিগ্রি নেয়ার উদ্দেশ্যে সেইন্ট লুইতে রওয়ানা হলেন তিনি । পুরনো ওস্তাদ হোরেস বিক্সবির সাথে দেখা হলো । পঁয়তাল্লিশ বছর আগের মতোই কর্মঠ আছেন । তাঁকে দেখে মার্ক টোয়েন বললেন 'আমি বুড়ো হয়ে গেছি, কিন্তু আপনি এখনো পঁয়ত্রিশ বছরে আছেন (!)' পাইলটস অ্যাসোসিয়েশনে হৈ হৈ করে মার্ক টোয়েনকে সংবর্ধনা দেয়া হলো ।

তারপরে আবার হ্যানিবালের উদ্দেশ্যে ট্রেনে চাপলেন তিনি । ছোটবেলার মেয়ে বন্ধু লরা হকিন্সের (বেকি থ্যাচার!) সাথে দেখা হলো । তিনি এখন মিসেস ফ্রেজার ও বিধবা । জনি ব্রিগস ও প্রৌঢ় এখন । জন রোবার্ড আর অন্যান্য ছোটবেলার সঙ্গীদের সাথে গিয়ে হিল স্ট্রিটের বাড়িতে গেলেন ।

দরজার সামনে ফটোগ্রাফাররা ভীড় জমিয়েছিল । 'বাড়িটা খুব ছোট মনে হচ্ছে আমার কাছে । কিন্তু একজন বাচ্চাছেলের কাছে সবকিছুই বড় বড় ঠেকে । আজ থেকে দশ বছর পরে যদি ফিরে আসি তাহলে দেখবো বাড়িটা পাখির বাসা হয়ে গেছে !' জনি ব্রিগসকে নিয়ে লাভার্স লিপ আর হলিডে হিল ঘুরে বেড়ালেন । 'হাকলবেরি ফিন' মানে টম ব্ল্যাংকেনশিপের সাথে দেখা হলো না ।

জাজ ব্ল্যাংকেনশিপ আসতে পারেননি । তাঁরা দুজন মানত 'টম সয়্যার' আর 'জো হার্পার' মিসিসিপি নদীর কুলুকুলু স্রোতের দিকে তাকিয়ে রইলেন । পঞ্চাশ বছরেরও বেশী সময় কেটে গেছে তাঁদের সেই সোনালী বন্ধুত্বময় শৈশবের পর! এরপরে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে সংবর্ধনা । স্টেশনে ফুল হাতে মানুষের ঢল নেমেছে । প্ল্যাটফর্মে দু'চার কথা বলার চেষ্টা করলেন কিন্তু মানুষের হট্টগোলে কেউ কিছু শুনতে পেল না ।

তারপরে আবারো সেইন্ট লুই । সেইন্ট লুই হার্বারের নতুন নামকরণ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে । আগে এর নাম ছিল শুধু 'সেইন্ট লুই,' এবার বন্দরের নতুন নাম হলো 'মার্ক টোয়েন হার্বার' (!) রিভারডেলের বাড়িতে জীবনটা খুব চমৎকারভাবে শুরু হলেও মেঘ ঘনিয়ে এল সেখানে । লিভি অসুস্থ হয়ে পড়লেন এবং চলাফেরা প্রায় বন্ধ হয়ে ঘরে বন্দী হলেন তিনি । বাড়ির প্রাণকেন্দ্র যে অলিভিয়া ক্লিমেন্স ছিলেন তাতে কোনো সন্দেহ নেই ।

ডায়েরিতে লিখলেন,শীতের সময় খানিকটা সুস্থ হয়ে উঠলেন লিভি । কিন্তু সে অল্প সময়ের জন্য । "Our dear prisoner is where she is through overwork--day and night devotion to the children and me. We did not know how to value it. We know now." তেত্রিশতম বিবাহবার্ষিকীর দিন ২রা ফেব্রুয়ারী, ১৯০৩ সালে লিভির ঘরে পাঁচ মিনিট কাটানোর অনুমতি পেলেন টোয়েন । দশ বছর আগে ফ্লোরেন্স শহরে থাকার কথা বললেন লিভি । তিনি বললেন আবার ফ্লোরেন্স যেতে পারলে ভাল হয়ে উঠবেন তিনি ।

ডাক্তারদের অনুমতি পাওয়া গেল । জুনের দিকে তিনি কোয়্যারি ফার্মে যাবার মতো এতোটা সু্স্থ হয়ে উঠলেন ।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।