আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বেনাপোল থেকে ওয়াগা-02

মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

ফেরি চলছে মৃদু-মন্দ গতিতে, পদ্মার রূপালী ঢেউ আর মৃদু-মন্দ হাওয়া – অসাধারণ কম্বিনেশন। কিন্তু ফাজিল সময়, সময়ের মাঝে কোন রোমান্টিকতা নাই, সময়ের ফেরে আমরা পার হয়ে গেলাম পদ্মা, আবার ছুটে চলল আমাদের বাস। রাত প্রায় আড়াইটা বাজে, যশোর রোড ধরে ছুটে চলেছে আমাদের বাস, গন্তব্য বেনাপোল। কন্ডাক্টর বলল পৌঁছাতে আরো ঘন্টা তিনেক লাগবে, তাই কিছু চিন্তা না করেই ঘুম দিলাম। কন্ডাক্টরের কথামত পৌঁছে গেলাম বেনাপোল ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে।

এখন করতে হবে অপেক্ষা, কারণ বর্ডারের গেইট খুলবে সকাল সাতটায়। যাই হোক অপেক্ষা করছি। এর মধ্যে আরেক সমস্যা দেখা দিল, আমাদের বর্ডার ট্যাক্স দিতে হবে জনপ্রতি ৩০০টাকা। একথা শুনে আমি আর তৌহিদ একজন-আরেকজনের মুখ চাওয়া-চাওয়ি করছি। কারণ ফেরিতে খাওয়া-দাওয়া করে আমাদের সব বাংলাদেশি টাকা শেষ।

এখন ডলার ভাঙাতে হবে, কিন্তু এই কাকভোরে কেউ তো আমাদের জন্যে দোকান খুলে বসে নেই। এখন উপায় কোন যাত্রীর সাথে এক্সচেঞ্জ করা অথবা কারো কাছ থেকে ধার করা। একজন মধ্যবয়স্ক আংকেলকে আমাদের সমস্যার কথা বললাম। উনি আমাদের সাথে ডলার এক্সচেঞ্জ করতে রাজি হলেন। যাক বাঁচা গেল।

বর্ডার খুলল ঠিক সাতটায়। লাইনে দাঁড়িয়ে আমরা একের পর ইমিগ্রেশন আর কাস্টমস পার হয়ে গেলাম। শেষ হয়ে গেল আমাদের দেশের সীমান্ত আমরা এখন হরিদাসপুর, ভারত সীমান্তে। এখানে এসে দেখি এদের বর্ডার গেইট খুলেনি, এদের বর্ডার খুলবে সকাল সাতটায়। মানে? আমরা আশ্চর্য হয়ে গেলাম।

পরে মনে পড়ল ভারত আমাদের থেকে ৩০ মিনিট পেছনে। এখানেও যথারীতি ইমিগ্রেশন আর কাস্টমস আর হয়ে চলে এলাম বাস কাউন্টারে- নতুন বাস, কিন্তু একই বাস সার্ভিস, একই টিকেট; এটি আমাদের পৌঁছিয়ে দেবে কলকাতায়। ছুটে চলেছি যশোর রোড ধরে- উদ্দেশ্য কলকাতা , হরিদাসপুর থেকে ৮৪ কিলোমিটার দূরে। সংকীর্ণ রাস্তা তাই আমাদের বাসও চলছে ধীর গতিতে। ভেবেছিলাম ঘন্টা দুয়েকের মাঝে পৌঁছে যাবো, কিন্তু কলকাতা পৌঁছাতে চার ঘন্টার উপরে লেগে গেল।

ঠিক সাড়ে এগারোটায় পৌঁছলাম কলকাতা শহরে। এখন আমাদের প্রথম আর প্রধান কাজ অমৃতসার এক্সপ্রেস ট্রেইনের টিকেট কাটা। রফিক ভাই বলেছিলেন বাস কাউন্টারের লোকদের বললেই ট্রেইনের টিকেট ম্যানেজ হয়ে যাবে। আমরা বাস কাউন্টার ওয়ালাকে বললাম ২টা টিকেট লাগবে অমৃতসার মেইলের। উনি বললেন হয়ে যাবে তবে টিকেটপ্রতি ১০০ রুপি বেশি লাগবে, আমরা বললাম ঠিক আছে।

উনি তৎক্ষণাৎ অনলাইন বুকিং দিলেন। ট্রেইন সন্ধ্যা সাতটায় আর টিকেট সংগ্রহ করতে হবে বিকেল সাড়ে তিনটায়। ঘড়িতে বাজে দুপুর ১২ টা – অর্থাৎ আমাদের হাতে কমপক্ষে ৬ ঘন্টা আছে কলকাতা শহর দেখার জন্য। Lets explore Kolkata!!!

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.