আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বেনাপোল থেকে ওয়াগা-01

মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

ঢাকা-কলকাতা-অমৃতসার-লাহোর, উপমহাদেশের চারটি বড় শহর। এই চারটি শহরকে নিয়েই আমার এই লেখা। অতি আহামরি কোন ভ্রমণ নয়,কিন্তু আমি ভেবে অবাক হই যে , আমি তিনটি কাঁটাতারের বেড়া পাড়ি দিয়েছি, অদৃশ্য এক বন্ধনে বেঁধেছি বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান কে। আমি একজন বাংলাদেশী ছাত্র,পাকিস্তান সরকারের স্কলারশিপের সুবাদে আমি পাকিস্তানের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অফ সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি (সংক্ষেপে NUST)এর কলেজ অফ ইলেক্ট্রিক্যাল এন্ড মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং (সংক্ষেপেEME )এ মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছি। জুলাই-আগস্ট আমাদের গ্রীষ্মকালীন ছুটি থাকে,এত লম্বা ছুটি স্বভাবতই এসময় দেশে যাওয়া হয়।

এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটলনা। দেশে গেলাম ু সেই ছোট্ট একটা দেশ, লাল-সবুজের দেশ, আমার প্রিয় বাংলাদেশ। সেই অতি পরিচিত পরিবেশ ু মা-মণি , ভাই, আত্মীয়স্বজন, মায়ের হাতের খাবার ুঅসাধারণ!! তারপর আরো আছে্তটি.এস.সি ্থর আড্ডা অথবা কার্জন হলের তাসের আসর অথবা শহীদুল্লাহ হলের পুকুর পাড়ে নিবিড়মনে বসে থাকা। যাই হোক, এভাবেই দেখতে দেখতেই ছুটি প্রায় ফুরিয়ে এল ,এবার ফেরার পালা। ভাবলাম এবার পাকিস্তানে ফেরা নিয়ে একটা অ্যাডভেঞ্চার করা যাক।

আমার বন্ধু তৌহিদ,সেও একই স্কলারশিপ নিয়ে পাকিস্তানের NUST এরই আরেকটি ইন্সটিটিউট Nust Institute of Information Technology ( সংক্ষেপে NIIT এ পড়ছে। আমরা প্ল্যান করলাম এবার ভারত হয়ে পাকিস্তানে যাবো। যেই ভাবা সেই কাজ। আমাদের এক বড় ভাই রফিক ভাই ( লাহোরের পাঞ্জাব ইউনিভার্সিটি তে পড়ছেন ) আগে এই যাতায়ত করেছেন, উনার কাছ থেকে যাবতীয় তথ্য জেনে নিলাম- কিভাবে যেতে হবে, কোথা থেকে বাস,ট্রেন ধরতে হবে ইত্যাদি। এবার প্রথম কাজ ভিসা নেওয়া।

গুলশানে ইন্ডিয়ান হাইকমিশনে ভিসার জন্য দাঁড়ালাম। ট্রান্সজিট ভিসা ু বেনাপোল (বাংলাদেশ সীমান্ত ) থেকে হরিদাসপুর(ভারতীয় সীমান্ত) এরপর সমগ্র ভারত পাড়ি দিয়ে আটারী(ভারতীয় সীমান্ত) থেকে ওয়াগা (পাকিস্তান সীমান্ত) পর্যন্ত। ভিসা পেয়ে গেলাম, আমাদের আনন্দ আর দেখে কে? এবার যাত্রা শুরু,রাত ১০টা, ৩রা সেপ্টেম্বর,২০০৬ আরামবাগ থেকে বাসে উঠলাম আমরা। অনেক দীর্ঘ একটা পথ পাড়ি দিতে হবে,মনে কিছুটা ভয়, কিছুটা প্রিয়জনদের ছেড়ে আসবার দুঃখ আর আর বুক ভরা অ্যাডভেঞ্চার করার আনন্দ। প্রিয় ঢাকা শহরের বুক চিরে ছুটে চলছে আমাদের বাস আর গন্তব্য যশোরের বেনাপোল।

আগামী কয়েকটা দিনের বিচিত্র অভিজ্ঞতার কথা কল্পনা করতে করতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছি বলতে পারবোনা। হঠাৎ হৈ-হুল্লোড়ের আওয়াজে ঘুম ভেঙে গেল। আমরা এখন পাটুরিয়া ফেরি ঘাটে,বুঝলাম এখানে একটু সময় লাগবে তাই আমরা বাস থেকে নেমে ফেরির ছাদে উঠে গেলাম। জ্যোৎস্না রাতে অপরূপ পদ্মার সৌন্দর্য উপভোগ করছিলাম আমরা আর সেই সাথে গান জুড়ে দিলাম "ও নদীরে একটি কথাই শুধাই শুধু তোমারে"। (চলবে)


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.