আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এলিজি ঃ মিথিলা

অতি দক্ষ মিথ্যুক না হলে সত্যবাদিতা উৎকৃষ্ট পন্থা

ম ৃতু্যর জন্য চমৎকার ছিলো দিনটি আকাশ থেকে মোলায়েম তুষার ঝড়ে পড়ছিলো অনবরত রাস্তার উষ্ণ স্নেহে গলে যাচ্ছিলো তার বুকে- তুমি কি ওম পেয়েছিলে? তুমি কি স্নেহ চেয়েছিলে, মায়ের বুকের নিরাপদ আশ্রয়? অবশ্য চমৎকার ছিলো দিনটা মৃতু্যর জন্য মনোরম দিন ছিলো আজ। যেকোনো মৃতু্য সংবাদই আমাকে বিষন্ন ও ব্যাথিত করে। কৈশোরের মৃতু্যর মোহমুগ্ধতা কাটিয়ে উঠার পর থেকেই এই চাকচিক্যময় মৃতু্যবরন কিংবা মৃতু্য বিষয়ক ভাবালুতার প্রতি আমার স্পষ্ট বিরাগ। বাস্তবতার নিরিখে এই সামান্য শুন্যতা হয়তো কিছুই নয়- এলেবেলে মানুষের মৃতু্য তেমন আলোড়ন তুলতে পারে না পৃথিবীতে। বউ খুন করে ফাঁসির আগে আগে সংবাদ পত্রের কল্যানে প্রায় নায়কের মর্যাদা পেয়ে যাওয়া মনির খুকুর জীবনাবসান বেশ প্রার্থিত ও আকাংক্ষিত মৃতু্য ছিলো।

তাদের মৃতু্যর জন্য অধীর আগ্রহে প্রতীক্ষা করছিলো মানুষ। ছিলো সিটকম কিংবা সোপ ওপেরার মতো ধারাবাহিক মৃতু্য দৃশ্য বর্ণনা। অশোভনতায় জর্জরিত অশ্ল ীল মানুষ মৃতু্য থেকেও যৌনউত্তেজনা পেতে চায়। অগোচরে এমন বর্ন ীল মৃতু্যর প্রতীক্ষা করে। বাংলাদেশের ানুষের ভেতরে লুকিয়ে থাকা মৃশংসতার থাবা ফুঁসে ওঠে।

কারো ফাঁসি হবে জানলে সংবাদপত্র কর্মিরা ঝাপিয়ে পড়েন- 2 কলাম, 4 কলাম, হেড লাইনসহ 8 কলামে কৎা জান্তব ভাবে এবং পুঙ্খানুপুঙ্খ মৃতু্যর বিবরনী ছাপাটে পারবেন এ নিয়ে একটা প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যায়। আহা মরবার আগে তার শেষ ইচ্ছা ছিলো কাশ্মিরি আম খাবে-( জানি না কিভাবে এ ধারনা প্রচারিট হয়েছে ফাঁসির আগে আসামীর শেষ ইচ্ছা পুরণের প্রতিশ্রুতি দেওয়া আছে। ) এলেবেলে মানুষ মরে যায় যেভাবে পুকুর থেকে জল উঠিয়ে নিলে আবার 2-1 ফোঁটা পুকুরে পড়তে থাকে, ধীরে ধীরে সে আন্দোলনও স্থিমিত হয় এবং আমরা ভুলে যাই কোথাও সামান্য শুন্যতা রয়েই গেলো। প্রায় সবার অগোচরেই একটা মৃতু্য সংবাদ আসলো। নিয়মমফিক তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করে ইন্না লিল্লাহে ইন্না ইলাইহে রাজেউন বলা শেষে বলতে হয় তাকে বেহশত নসীব করুন।

এমন আনুষ্ঠানিক মৃতু্য সংবাদ লেখকদের কলম থেকে চিরপরিচিত শব্দ আসে হৃদযন্ত্রেক্রিয়া বন্ধ হয়ে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। যদিও হৃদযন্ত্র কোনো ভাবেই শ্বাসপ্রশ্বাসের সাথে যুক্ত কোনো অঙ্গ না তবুও সংবাদ পত্রের পাতায় মৃত মানুষ উদ্ভট ভাবেই মরে যায় আমি নিশ্চিত জানি এর পর কোনো শপথ নেই শপথ নেই প্রজল্যমান কোনো নক্ষত্রের সেই আকাশের সেই ভুমির যা শস্য উৎপাদন করে সেই স্রোতস্ব ীনির টলটলের জলের শপথ নেই কোনো কোনো শপথেই আসলে মৃতের পুনরুত্থান সম্ভব নয়। ডাস্ট উই আর এন্ড ডাস্ট উই উইল বি আমাদের শরীর সম্পূর্ণ মাটি হয়ে যাওয়ার আগেই আমরা স্মৃতি থেকে বিলুপ্ত হয়ে যাবো। আমাদের যা কিছু অর্জন সবটাই স্মৃতি। এবং আমি অস্তিত্ববান বলেই পৃথিবীর অস্তিত্ব আছে- এ সত্য বিস্মৃতি হয়েই মানুষের কৈশোরে মৃতু্যর মোহে পড়ে যায়।

আমরা যেমনটা ভাবি ইশ্বর তাই-আমরা মুর্ত কিংবা বিমুর্ত ধারনা করি বলেই ইশ্বর সেমত মুর্ত হয়ে উঠেন। আমরা ইশ্বর এবং ইশ্বর বিষয়ক পরিকল্পনার সাথে আমাদের অস্তিত্বের সমপ্রসারণ করে যাই অবশ্য মৃতু্যই বাস্তবতা- অমরত্বের নিদান অনাবিস্কৃত তাই আমরা জরাগ্রস্থ হয়েই মৃতু্য বরন করবো। একটু সাবধানী জীবন যাপন করলে হয়তো বাড়তি 20 বছর- তবুও আজ চমৎকার দিন ছিলো। প্রকৃতি অকৃপন তোমার যাওয়ার মঞ্চ সাজিয়েছিলো। সেন্ট্রাল পার্কের মাঝের পথগুলো সাদা তুষারে ঢেকে ছিলো যেভাবে মৃতু্যর হিমশীতল চাদর জড়িয়ে ধরে তেমন শীতল চাদরে ঢাকা ছিলো নিউ ইয়র্ক।

শুধু হাসপাতালের উষ্ণ কামরায় হয়তো এক বিন্দু স্নেহের অভাবে গলে যেতে পারলে না তখনও অবিশ্রান্ত তুষার ঝড়ছিলো শহরের উদোম রাস্তায় আর রাস্তার উষ্ণ আদরে গলে গলে যাচ্ছিলো আর সেই গলে যাও শীতল পানিতে মিশে গিয়েছিলো অবিকল তোমার প্রিয়জনের উষ্ণ আঁখিজল মিথিলা তোমার মৃতু্যর দিনটা খুব চমৎকার ছিলো

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।