আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ইসলামে ও মেডিটেশন - শরীর + যুক্তি + আত্মা

মাটি
Meditation এর উদেশ্য কি? কেন Meditation করবেন ? Meditation এর পদ্ধতি কি ? আমার মতে আত্বিক উন্নয়নের জন্য, আত্ব নিয়ন্ত্রনের জন্য মানুষ meditation করে আমি এই লাইনে খুব একটা অভিজ্ঞ না কিন্তু কিছু জিনিস আমাকে নাড়া দেয় । আত্বিক উন্নয়নের ব্যাপার টা কেমন ? মনে করেন আমি একজন কৃপণ ব্যক্তি, পরশ্রী কাতর ব্যক্তি তার মানে আমার আত্বিক ত্রুটি রয়েছে , এখানে উন্নয়ন দরকার এর জন্য আমার meditation করা দরকার বা ধ্যান করা দরকার আমার রাগ অতিরিক্ত , রাগ উঠলে হিতাহিত জ্ঞান থাকে না , এখানে আমার নিয়ন্ত্রণ দরকার এর জন্য আমার meditation করা দরকার বা ধ্যান করা দরকার কিভাবে করবো ? আমরা মানুষ আত্বিক , যৌক্তিক আর জৈবিক গুনাবলীর সমন্বয়ে গঠিত আমরা যখন পুরা মাত্রায় সচেতন থাকি তখন আমাদের জৈবিক বোধ গুলা যেমন গরম বা ঠান্ডা লাগা, ক্ষিধা লাগা ইত্যাদি সক্রিয় থাকে আবার যৌক্তিক গুনাবলীর জন্য আমাদের চিন্তা ভাবনার অংশ ও খুবই সক্রিয় থাকে যেমন আমরা চিন্তা করি বিকাল বেলা বাজারে যাব, বাটার দোকানে ২০% ডিসকাউন্ট এ স্যান্ডেল সেল করতেছে ওই গুলা দেখব পছন্দ হলে কিনব , মাসুদের সাথে দেখা করে শিক কাবাব দিয়ে সন্ধায় নাস্তা করবো , এর পরে বাজার করে বাড়ি আসব। কিন্তু আমাদের আত্বিক অংশটার ব্যাপারে আমাদের খোজ খবর ই নেয়া হয় না তো কিভাবে একটা মানুষের আত্বিক উন্নয়ন হবে ? তো আত্বিক উন্নয়ন করতে গেলে প্রথমেই আমাদের এই ৩ অংশের মানুষের থেকে প্রথম ২ টাকে অফ বা নিষ্ক্রিয় করে দিতে হবে । জৈবিক অংশ আর যৌক্তিক অংশ কে অফ করে দিতে হবে । তখন পড়ে থাকবে শুধু আত্বা এখন এই আত্বা কে আপনি যেই আকার দিতে চান সেইটা নিয়ে কাজ করুন তো দেখি ইসলামে এই ধ্যানের ব্যাপারে কি আছে ? উপরোক্ত যে জৈবিক আর যৌক্তিক সাইড অফ করে দেয়ার কথা বললাম , নামাজে ঠিক এরকম ই করার কথা বলা আছে । অজু করে নামাজের প্রস্তুতি মানে আত্বাকে জাগ্রত করা, আত্বায় একটা পবিত্র ভাব নিয়ে আশা হচ্ছে, জৈবিক অংশকে ধীর স্থির করে ফেলা হচ্ছে, যৌক্তিক অংশকে সিগন্যাল দেয়া হচ্ছে আপাতত আগামী আধা ঘন্টার জন্য সমস্ত কাজ অফ , সমস্ত পরিকল্পনা স্থগিত ( এটা অবশ্য আজানের সময় থেকেই শুরু ) এর পরে অজু শেষে মসজিদে ঢোকার দুয়ার ( হে আল্লাহ আমার জন্য তোমার রহমতের দরজা খুলে দাও ) মাধ্যমে আল্লাহর সাথে যোগাযোগ শুরু। খেয়াল করেন কিভাবে ধীরে ধীরে আত্বিক চেতনা সক্রিয় হচ্ছে আর জৈবিক ও যৌক্তিক চেতনা অফ হয়ে যাচ্ছে । এখন আপনি আর অস্থির চিন্তা করছেন না, চিল্লা চিল্লি নাই , লাভ লসের হিসাব নাই - আল্লাহর রহমত আর ক্ষমা এর দিকে আপনি চিন্তা করছেন ক্লাস রুমে যখন আমরা ঢুকি তখন ও আমরা চিল্লা চিল্লি করি না, কিন্তু স্যার আজকে পরা ধরলে তো খবর আছে, শাহিনের কাছে থেকে কেমিস্ট্রি এর নোট্ তা নিতে হবে, আবুল শালা সেদিন ১০০ টাকা নিছিল এখন ও দেয় নাই, অর আজকে খপর করে দেব - যাই হোক মসজিদে ঢোকা আর ক্লাস রুমে ঢোকার সময় আত্বিক অবস্থার যে পার্থক্য আছে এইটা একটু খেয়াল করবেন , তখন বুঝা যাবে কিভাবে আত্বিক চেতনা সক্রিয় হচ্ছে আর জৈবিক ও যৌক্তিক চেতনা অফ হয়ে যাচ্ছে এরপরে নামাজে দাড়ায়ে যখন আল্লাহু একবার বলে হাত উঠালেন - নামাজ যারা শেখায় তারা বলে এর মানে - এই মনে মনে চিন্তা করা যে - আল্লাহ সব চেয়ে বড় , আমার ব্যবসা , আমার চাকরি , আমার ফ্যামিলি এইগুলা সব গৌন - এইগুলাকে পিছনে ফেলে আল্লাহর সামনে আমি হাজির হলাম - যিনি বিশ্ব জগতের মালিক , আমি কিছুই না , আমার ডক্টরেট ডিগ্রী , আমার মন্ত্রিত্ব , আমার কোনো কিছুই কিছু না এর পরে সুরা ফাতেহা পড়া শুরু হলো মানে আসমান জমিনের মালিক আল্লাহর সাথে কথপোকথন শুরু হলো এই বলে যে সমস্ত প্রশংসা বিশ্বজগতের মালিক আল্লাহ তোমার , তুমি অসীম দয়ালু , পরম করুনাময় , বিচার দিবসের মালিক । এই মুহুর্তে আপনার আত্মা আল্লাহর বড়ত্ব আর দয়ার কাছে নত, আর বিচার দিনের ব্যাপারে ভিত আর দয়ার কাঙ্গাল হয়ে বিনয়ী ভাবে আল্লাহর সামনে হাজির এখন কি আপনি গরম বা ঠান্ডা অনুভব করতেছেন? অথবা আবুল যে ১০০ টাকা নিছিল ঐটার কি খবর আছে ? নামাজের দাবি হচ্ছে ঐগুলার খবর থাকবে না তো এতক্ষণে আপনার জৈবিক আর যৌক্তিক চেতনা অফ হয়ে আত্তিক চেতনার উন্নয়ন শুরু হয়ে গেছে , আপনার আত্মা বিনয়ী হয়ে গেছে অলরেডি এর পরে আল্লাহর কাছে আপনি বলতেছেন যে আল্লাহ, আমি তোমারি ইবাদত করি অন্য কারো ইবাদত করি না , তাই একমাত্র তোমার কাছেই সাহায্য চাই এভাবে সুরা পড়তে থাকলেন আর আল্লাহর সাথে আপনার কথোপকথন চলতেই থাকলো এর পরে রুকুতে গিয়ে আল্লাহর সামনে আপনার মাথা ঝুকায়ে আল্লাহর প্রতি আপনার আনুগত্য প্রকাশ করলেন আবার মাটিতে আপনার নাক , কপাল, মাথা ঘষে আল্লাহর সামনে আপনার আনুগত্য আর ক্ষুদ্রতা প্রকাশ করে আল্লাহর ক্ষমার প্রত্যাশা করতেছেন - যেখানে শুধুই পরমাত্মার সাথে আত্মার সম্পর্ক , আর কিছু নাই এরকম এক অবস্থায় মানুষ পৌছে যায় যে জৈবিক চেতনা এমন ই অফ হয়ে যায় যে - আলী ( রা: ) এর শরীরে তীর লেগেছিল , নরমালি বের করা যাচ্ছিল না , তো উনি যখন নামাজে দাড়িয়েছেন তখন তীর টা বের করা হলো উনি টের ও পান নাই । এভাবে ৪ রাকাত বা bivinno সংখ্যক রাকাত নামাজ আদায় করলেন , প্রতিদিন ৫ বার করে আমি গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি আপনার আত্বিক উন্নয়ন এবং আত্ম নিয়ন্ত্রণ অবশ্যই আসবে এরকম মানুষ রিক্সায়ালা বেশি ভাড়া চাইলে থাপ্পর মারবে না , গরিব কে দেখলে অবহেলা করবে না
 

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ২০ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।