আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আবেগ নয় বাস্তবতা ও সহনশীলতাই হোক সকলের চিন্তাশক্তির উৎস, রক্ষণশীলতা বা মৌলবাদীতা নয় মধ্যম-পন্থাই হোক সকলের একমাত্র পাথেয়।



মানুষ কোন যান্ত্রিক রোবট নয়, এর আবেগ আছে। তবে এই আবেগ অবশ্যই যোক্তিক হতে হবে, কেননা আবেগ্লপ্লুত হয়ে আমরা ভুল করতে পারি। সবসময়ই সতর্ক থাকতে হবে যেন আবেগ বাস্তবতাকে অতিক্রম না করে। পৃথিবীর সফল জাতিগুলো থেকে আমরা এই শিক্ষা নিতে পারি। জাপানের হিরোসিমা, নাগাসাকিতে লিটলবয় আর ফ্যাটম্যান এর কান্ড-কারখানা জাপানীরা কেন পৃথিবীবাসী কখনোই ভুলবে না।

অথচ আজকে কুইজুমির জাপান বুশের আমেরিকার প্রধান মিত্র। সহনশীলতার এমন নজির দেখাতে পেরেছে বলেই জাপান পৃথিবীর অর্থনৈতিক পরাশক্তি। বাস্তবতাকে মেনে নিয়ে কমিউনিষ্ট চীন হংকংয়ে পুঁজিবাদী ব্যবস্থা মেনে নিয়েছে। একদেশ দুই-নিতী বলে যারা চীনকে নিয়ে হাসি-তামসা করত তারাই আজ চীনের প্রসংসায় পন্চমুখ, কারণ চীনের প্রবিদ্ধি বৃদ্ধির হার 10এর মত যাকে এখন আমেরিকাও হুমকি মনে করছে। বিতর্কিত ছোট রাষ্ট্র ইসরায়েল (এদের থেকে অনেককিছুই শেখার আছে যদিও আমি ব্যাক্তিগতভাবে ইসরায়েলকে আগাগোড়া অবৈধ রাষ্ট্র মনে করি), যার জন্য আমেরিকা ও ইউরোপের দেশগুলোর বর্তমানে অকুন্ঠ সমর্থন রয়েছে।

অথচ এই ইহুদিরাই ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে বারবার বিতারিত হয়েছিল অতীতে। বিতর্কিত হলোকাষ্ট আর লিন্চ শব্দদুটি যেন ইউরোপ ও আমেরিকায় ইহুদীদেরই প্রতিশব্দ। একটু খেয়াল করলে দেখবেন পিছিয়েপড়া জাতি মাত্রই সহনশীলতার অভাব রয়েছে। আমরা মুসলমানরা সহনশীলতার পরিচয় দিতে ব্যার্থ হয়েছি। আর আমরা বাঙ্গালীরা বরাবর উশৃঙ্খল জাতি।

মোঘলদের সময় বার-ভঁূইয়াদের বিদ্রোহ, যে মোঘলদের সময় বাংলার অর্থনিতী ফুলেফেপে ওঠে (টাকায় 8 মন চাল!)। পলাশীর বিশৃঙ্খলার সুযোগ নিয়ে বাংলার মধ্য দিয়ে এই উপ-মহাদেশে ইংরেজদের প্রবেশ আবার এই বাংলাতেই সবচেয়ে বেশি প্রতিরোধের মুখোমুখি হয় ইংরেজরা। উশৃঙ্খল বাংলার প্রসাসনকে সুশৃঙ্খল করতে লর্ড কার্যনের বঙ্গভঙ্গ আবার বাংলার মানুষের বিদ্রোহের ফলে 5/6 বছরের মাথায় ব্রিটিস সিদ্ধান্ত বঙ্গভঙ্গ বাতিল। 47এ আবার বাংলা দ্বিখন্ডিত হওয়ায় বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনকারীরা তৃপ্তির ঢেকুর তোলে। পূর্ববঙ্গ হল পূর্ব-পাকিস্তান, আবার আন্দোলন জ্বালাও পোড়াও।

ইন্ডিয়াতে জাতীয় ভাষা হিন্দী হলে পাকিস্তানে উর্দূ হতে সমস্যা কোথায় ছিল (কোন ঘোষনা দিয়ে, আইন করে মানুষের মুখের ভাষা পরিবর্তন করা সম্ভব নয়, আমি যতটুকু জানি পৃথিবীর কোথাও ভাষার জন্য রক্ত দিতে হয়নি, বাংলদেশেও হত না। এমনকি আজকের পাকিস্তানেও মাত্র 9% লোক তাদের জাতীয় ভাষা উদর্ূতে কথা বলে। বাকি 90% লোকের তো কোন সমস্যা হয়না; সিন্ধু, বেলুচ, পান্জাবী, পশতু কতভাষা কতজাত। সমস্যা শুধু এক বঙ্গালীর। তাছাড়া উর্দূকি জিন্নার নিজের ভাষা ছিল নাকি যে উর্দূর প্রতি জিন্নার এত দরদ থাকবে? অত্যন্ত বাস্তববাদী এ মানুষটি চেয়েছিল সকল ধর্ম আর ভাষার লোককে একটি ল্লাটফর্মে নিয়ে আসতে।

আমি আসলে ব্যাক্তিগতভাবে সকল বিভক্তির বিরুদ্ধে। ভাবুন একবার, যদি ভারত বিভক্ত না হত আজ আমাদের আমেরিকার চামচামি করতে হত না, আমেরিকাকে চ্যালেন্জ করতাম। )? খুবই ভাল কথা, ভাষা আন্দোলনের হাত ধরে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। এখনত আমরা মুক্ত, ধমর্ীয় ও জাতিগত বিভেদ নেই। প্রায় 90% লোক বাঙ্গালী এবং মুসলমান।

এবার শুরু হল নিজেরা নিজেরাই। আউয়ামী-লীগ এর তখন ঐশ্যরিক ক্ষমতা; তখন কি দরকার ছিল বাবা বাকশাল কায়েম করার? উশৃঙ্খল বাঙ্গালীরা তাদের নেতা মুজিব ও জীয়কে নির্মমভাবে হত্যা করল। তারপর সৈরাচার এরসাদ ও হরতালবাজ হাসিনা-খালেদার সময়। এদের সম্পর্কে কিছু বলে নিজেকে অপমান করতে চাই না, প্রয়োজনও নাই। তারপরও দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, ভাবতে ভলই লাগে।

বর্তমানে আমাদের দেশের প্রবিদ্ধি বৃদ্ধির হার 6এর উপর, দেশের সরকারের চেয়ে প্রবাসী বঙ্গালীর প্রেরিত রেমিটেন্সের ভূমিকাই এখানে বেশি । আমাদের শুধু দরকার স্থিতিশীল সরকার, বিনিয়োগের শুষ্ঠু পরিবেশ। বিদেশী বিনীয়োগই হতে হবে এমনটা নয়, 35ল প্রবাসী বাঙ্গালীর কিছু অংশও যদি বিনিয়োগে এগিয়ে আসে দেশের চেহারা পাল্টে যেতে বাধ্য। আমাদের সুযোগ ও সম্ভাবনা উভয়ই আছে। মানুষ যদি হয় সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব, আশরাফুল মাখলুকাত, তাহলে এ সম্পদে আমরা সমৃদ্ধ।

আমাদের শুধু একটা জিনিস দরকার আর তা হল সহনশীলতা যা নিশ্চিত করবে গণতন্ত্র, স্থিতিশীলসরকার, নিয়ে আসবে বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক স্বাচ্ছন্দ; স্বার্থক হবে আমাদের স্বাধীনতা। সকল মত পথ ভুলে, সবার উপরে মানুষ সত্য কথাটি সত্যিকার অর্থেই বিশ্বাস করে আমরা কি পারবনা একটু সহনশীল হতে?

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.