আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শ্রাবন ধারায়(দ্্বিতীয় পর্ব)

[অন্যর দোষ না খুঁজে আগে যদি সবাই নজের দোষটা খুঁজত তাহলে বোধহয় সব সমস্যার সমাধান হয়ে যেত]............... [পথের শেষ নেই, আমার শেষ আছে, তাইত দ্বন্দ্ব] http://mamunma.blogspot.com/

[রং=#ঈঈ9966][আন্ডার]মামুন ম. আজিজ/2006[/আন্ডার][/রং] বৃষ্টি কমছেই না। কাধের ব্যাগটা পানির হাত থেকে বাঁচাতে গিয়ে অনকেটাই বুষ্টিতে ভিজছে গায়ের কাপড়। হালকা দমকা হাওয়া বইছে বুষ্টির সাথে সাথে । সবুজ পাতাগুলোর নৃত্য শ্রাবনীকে মুগ্ধও করছে। কিন্তু বিরক্তি লাগছে, বাসায় যাবার তাড়া।

কাজ আছে অনেক বাসায়। হঠাৎ ব্যাগের ভিতরের মোবাইর নামক জন্তুটা নড়ে উঠল। বের করে মিস কল কার দেখতে দেখতে আবার বাজল। এবার থামলনা। রিসিভ করল।

ঃকে। ঃ কেমন আছেন শ্রাবনী। ঃ কে চিনলাম না তো। একটু আগের মিস কল টা কি আপনি দিয়েছিলেন। ঃ হু।

ঃ তো কে বলেন। ঃ আসলে আপনি আমাকে চিনবেন না। ঃ মানে ঃ আমি আপনার সাথে কথা বলতে চাই। বন্ধু হবেন। মোবাইলে এমন ফোন ওর প্রতিনিয়তই আসে ।

সুন্দর করে বকাঝকা দিয়ে রেখে দিতেই তখন শ্রাবণীর মজা লাগে। খাতির তাও অচেনা কোন বান্দর এর সাথে , ইচ্ছেই হয়নি। কিন্তু আজ কেন জানি বকলও না। ফোন ও রাখলনা। হয়তো বিরক্তি কর বুষ্টি থামার অপেক্ষা বাধ সাধল।

বলল ঃকেন. আমাকে চেনেন। ঃ না । তাইতো চিনতে চাই। ঃ ভাল । চিনে কি হবে।

ঃ ফ্রেন্ডশীপ। ঃ এত সহজ। চিনিনা, জানিনা। বললেই বন্ধুত্ব হয়ে যায়। ঃ চিনব , জানব তার পর হবে।

ঃ সরি , আমি অচেনা কারও সাথে কথা বলিনা। আর বন্ধুত্ব, ইমপোসিবল। রাখছি। আর করবেন না। এবার রেখে দিল শ্রাবণী।

প্রতীক হাল ছাড়ার পাত্র নয়। কিছক্ষণ যখন কথা বলেছে আরও বলবে। আবার ফোন করল। ঃ কি ব্যপার আবার করলেন কেন। ঃ না , আপনার জানার ইচ্ছে হলোনা।

আমি কে। আপনার নাম কি করে জানলাম। ঃ শোনেন, আমি জানতে চাইলেই মনে হয় আপনি বলবেন? শুধু শুধু মিথ্যে শুনে লাভ কি। যে কেউ দিতে পারে। আর আপনি দিল আর ফোন করে ফেললেন।

আপনাদের খেয়ে দেয়ে কাজ নেই। ঃ এই বুষ্টির মধ্যে কি করব বলেন তো। বন্ধুর মোবাইলে শ্রাবণী নামটা দেখে পছন্দ হলো । আটকে পড়ে আছি টিএসসিতে , ভাবলাম শ্রাবনী নামের কেউ বন্ন্ধু হলে ভালই হয়। নম্নরটা মেরে দিলাম।

ঃ বাহ। সুন্দর গল্প। তা সে কে যে আপনার কাছে নম্বর চুরি করার জন্য মোবাইল দিয়ে চলে গেছে। বানিয়ে একটা নাম বলে ফেলেন। ঃ নাহ মিথ্যে কেন বলব।

মিথ্যে বলতে পারবনা বলেই তো নামটা বলছিনা। ঃ ওহ আচ্ছা। ঃ আপনি কোথায় জানতে পারি। ঃ না পারেননা। যে দিয়েছে নম্বও তার কাছে জিজ্ঞেস করেন।

বুষ্টি কমে আসেছে। আমি রিকশায় উঠব। আর কল করবেন না মিঃ.. ঃ প্রতীক। ঃ যা হোক। ওকে।

ঃ শোনেন শোনেন শ্রাবণী, রাখবেন না। আপনি কি ভার্সিটিতে। ঃ যেখানেই থাকি। আপনার কি। ঃ বুষ্টির শব্দ পাচ্ছি ।

বলেন না কোথায় , চলে আসি। ঃ কি আশ্চর্য। আপনি ফোন রাখুন। আই রিকশা যাবা। ঃ এই বুষ্টিতে কেউ যাবেনা।

তার চেয়ে আমার সাথে গল্প করতে থাকুন। সময় কাটবে ভাল। আর যতি বলেন তো চলে আসি। ঃ আসবেন। আমি কই কাই তো জানেননা মিঃ প্রবীর।

ঃ হু হু। প্রতীক। ঃ আমি যদি এখন মিরপুর গোল চত্বরে দাঁড়িয়ে থাকি তাও আসবেন। ঃ বলেই দেখেন। তবে মনে হয় আপনি কার্জন হলে।

আপনাদের ক্লাশ শেষ হয়েছে আধাঘন্টা ও হয়নি। আপনি একটু দেরিতে বের হন। শেষ কথাটুকু নয়ন এসে কানেকানে বলে গেল তাই বলতে পারল প্রতীক্ আর ও বলল এইবার ধরা খাবিরে সব মেয়ে একনা। ঃ ও সবই তো জানেন। তাহলে তো জানেনই কোথায় আছি।

ঃ কার্জন হলের গেটে। ঃ কেন বলব। অবশ্য এ বুষ্টিতে আসতেও পারবেননা। টিএসসির গেটে নিশ্চয় আপনার জন্য রিকশা দাঁড়িয়ে নেই। নাকি ভিজেই আসবেন।

ঃ শুধু আসতে বলেই দেখুন। ঃ আচ্ছা আপনার কথা শুনে কিন্তু মনে হচ্ছেনা অবশ্য আপনি খুবএকটা খারাপ মানুষ। মেয়েদেও ডিস্ট্রাব করেন কেন? আপনি কি করেন বলেনতো। ঃ যাক কথা বলতে রাজী হয়েছেন তাহলে। ঃ নো মিষ্টার ।

যতটুকু বলেছি খালি বুষ্টির বদৌলতেই। এবার রাখি। দেখুন মিষ্টি করে বলছি আর বিরক্ত করবেননা। আপনি ভদ্র বলেই ভাল করে বললাম। না হলে এ পৃথিবী ভাল কথার দুনিয়া না।

ঃ আমি বুয়েটে পড়ি। আপনি ওয়েট করেন আমি আসছি। সত্যি। ঃ আরে পাগল নাকি। ঃ ওয়েট।

ফোন কেটে দিল প্রতীক। প্রতীকের কেন জানি হঠাৎ মনে হল আজকের এই বুষ্টি শুধু ওর জন্যই। শ্রাবনীই ওর সেই গোপন প্রনয়ণী। যাকে নিয়ে স্বপ্নে এত মধুর ঘোরাফেরা। নয়ন কে ডাকল।

ঃকি । কথা শেষ। কি বললি এত। কয়টা গালি খেলি। না বকাঝোকা শুনতেও ভাল লাগল।

ঃ না । শুধু বল। কি রঙের ড্রেস পড়া। মিতুল শুনে ছুটে এল পাশ থেকে, প্রতীক ভাইয়া । আপনি তো জিনিয়াস।

আমি দেখেছি আপুকে সকালে। ময়ূরকন্ঠী নীল রঙের কামিজ আর আকাশী সেলোয়ার। ওড়নাটা সাদার মধ্যে নীল কাজ করা। এই বৃষ্টিতে ভিজে যাবেন। ইস আবীর যদি আপনার মত একটু রোমান্টিক হতনা।

উইস উই গুডলাক ভাইয়া। মিষ্টি খাওয়াবেন কিন্তু। নয়ন কিছু বলার আর ডাকার আগেই দৌড় দিল প্রতীক। কোন রিকশা নেই। বৃষ্টি আরও বেড়েছে।

সিগারেটের দোকান থেকে পলিথিনের একটা কাগজ নিল চেয়ে। মোবাইলটা আর মানিব্যাগটা তাতে পুরেই দৌড়। এক সেকেন্ড ও লাগলনা ভিজে জবজবে হতে। দৌড়ে দৌড়েই পৌঁছে গেল দ্রুত দোয়েল চত্বরের কাছে। বর্ষা সিক্ত দু'চোখ খুঁজছে গেটের ভিতরে নীল কামিজের একটা সজীব নারীকে।

চোখের চশমাটা ভিজে অস্পষ্ট হয়ে আছে। পানির আবরণ ভেদ করে সব দৃশ্য ঘোলা ঘোলা লাগছে। চশমাযে মুছবে কোন শুকনো কাপড়ও নেই। মাকে ফোন করে জানাল শ্রাবনী আটকে আছে। মা বললেন সমস্যা নেই।

একটু দেরীতে এলেও হবে। বৃষ্টিতে ভিজতে মানা করলেণ। কিন্তু বিরক্ত লাগছে দাড়িয়ে থাকতে। ওই ছেলেটার সাথে কথা বলতে তো ভালই লাগছিল। দেব নাকি একটা মিসকল।

না থাক দাম বেড়ে যাবে। তবুও জীবনে প্রথম কেন জানি ইচ্ছের বিরুদ্ধে ফোনটা বরে করল। আর তখনই সামনে এসে দাঁড়াল প্রতীক ,বলল ঃআপনি শ্রাবনী। আপনার কাছে একটা শুকনো রুমাল হবে। চশমাটা ঘোলা হয়ে আছে ।

একটু মুছব। শ্রাবণী অবাক। ভীষণ অবাক। একটা হেভি হ্যান্ডসাম ছেলে ভিজে জবজবে। থর থর করে কাপছে।

ওর নামও জানে। বলল, ঃআপনি কে। ঃআপনি শ্রাবণী তো। ঃআপনি কে? ঃআমি ? একটু আগে যার সাথে কথা বলছিলন, ভুলে গেলেন। ঃআপনি আমাকে চেনেন।

ঃনীল জামা আর কারও গায় নেই তাই ভাবলাম আপিনিই... ঃআমি নীল জামা পড়া আপনি জানলেন কি করে? ঃবলছি। একটু দাড়ানোর জায়গা দেবেন দয়া করে। আর একটু শুকনো কাপড়। ঃআপনি তো রীতিমতো কাঁপছেন। আসুন।

আপনি তো দেখছি পুরো পাগল। প্রতীক জীবনে প্রথম বোকার মত হাসছে তো হাসছেই। অন্য যে কোন সময় এরকম কোন ছেলে এসে উৎপাত করলে, তাও ভার্সিটি এড়িয়ায়, হৈ চৈ ফেলে দিত। কিন্তু সে রকম কিছু ঘটাতেই ইচ্ছে হলোনা শ্রাবনীর। নিজের ওড়নার শুকনো অংশ দিয়ে প্রতীকের চশমাটা মুছেও দিল।

প্রতীক রিকশার বদলে সি এনজি ঠিক করে দিল সেই না থামা বুষ্টির মধ্যেই। শুধু কি তাই বাসা পর্যন্ত পৌঁছেও দিয়েছিল। প্রতীকের পুরুষালী মন বুষ্টি সিক্ত অধরে ছুতে চেয়েছিল শ্রাবনীর সুস্মিত অধরখানা নির্জন গল্পযাত্রায় দুজনার। নিরবে কবর দিয়েছিল সে ইচ্ছে। আজ হতে সে সত্যি ভালবাসার রাজ্যে ভাসবে।

ভালবাসবে শ্রাবনীকে। সত্যিকারের ভালবাসা। শ্রাবণীর মনেও একই সুর বইতে দিচ্ছিল বিধাতা। দুজন ভাল বন্ধূ হয়ে গেল । সেদিন সে শ্রাবন ধারা সফরে।

ভালবাসা এর পর এগোচ্ছিল খুবই সুন্দর কাননে শুভ্র মেঘের ভেলায়। ....... এ গল্প আপাতত এথানেই শেষ করছি। আমার গেেল্পর নায়ক নায়িকা এরপর সুখে শান্তিতে আছে ধরে নিচ্ছি। কখনও যদি আবার ওদের সাথে দেখা হয়ে যায় কোন পথে হয়তো আবার লিখব তখনকার কাহিনী তাদের একইভাবে। [রং=ৎবফ]....................শেষ আপাতত............................[/রং] [রং=ড়ৎধহমব][সাইজ=3]30/07/06[/সাইজ][/রং]


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।