আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পুরনো সেই দিনের কথা

বাংলাদেশ নিয়ে ভাবনা, প্রত্যাশা ও সম্ভাবনার সংগ্রহমালা

ছুটির দিনের কড়চায় সবাইকে স্বাগতম। সময়ের সাথে পাল্ল্লা দিয়ে অসংখ্য ভাবনা কীবোর্ডের উপর আঙ্গুলের ছন্দময় স্পর্শের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতে করতে ক্লান্ত হয়ে পড়ে। অনেক ভাবনার ভীঁড়ে স্মৃতিগুলো যখন উঁকি দেয় তখন অদ্ভুত এক ধরণের আনন্দ-বেদনার রঙীন ছবি মনের পটে ভেসে উঠে। আজকে সকাল বেলা আমার দাদীর কথা খুব মনে পড়ছে। দাদী বয়স পেয়েছিলেন প্রায় নব্বই বছর।

আমি যখন বিশ্ববিদ্যালয় ঢুকি তখন দাদী মারা যান। সবচেয়ে সুখের স্মৃতি হচ্ছে বাবা তার পাশে বসে ভাত খাচ্ছেন। বয়সে নু্যজ দাদী তাকিয়ে দেখছেন বাবা ঠিকমতো খাচ্ছেন কি না?। অনেক সময় নিজের পাত থেকে মাছের অংশ তুলে দিতেন বাবার পাতে। কি অদ্ভুত আনন্দ!!! আমরা ভাইবোনরা দাদীকে ক্ষেপাতাম, "আহা, আপনার বুড়ো ছেলেকে খাইয়ে দেন"।

দাদী বলতেন, "হ্যা, আমার ছেলে কি আর বড়ো হয়েছে? ওতো আমার কাছে ছোটই"। খাওয়ার পরে দাদী পান চিবাতেন। দাদীর পান-সুপারি আমরা হামানদিস্তায় পিশে পানদানিতে সাজিয়ে দিতাম। সাথে একটু তামাক পাতা। বাবাকে তার মায়ের পাশে খুব গর্বিত আর উৎফুল্ল দেখাতো।

সেই তুলনায় আমি নিজে হতভাগ্য। বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠ চুকাবার সাথে সাথেই মা বিদায় নিয়ে চলে গেলেন। বাবার মতো গর্বিত হওয়ার সুযোগ কপালে জুটল না। মাঝে মাঝে মনে হয়, মাকে যদি পেতাম যেভাবে বাবা পেয়েছিলেন। সব পাওয়ার আনন্দের পাশাপাশি কিছু না পাওয়ার কস্ট খুব তীব্র হয়।

না পাওয়ার মধ্যে যে হাহাকার বাস করে তা সব পাওয়াকে খুব ম্ল্লান করে দেয়। এই মুহুর্ত্বে দাদীর একটা কথা খুব মনে পড়ছে, "ভাইরে, যে দিনগুলো চলে যায় সেগুলো ভালই যায়"। সত্যি তো, ফেলে আসা দিনগুলো সবসময়ই অনেক বেশী আনন্দের, হাসির আর পরিতৃপ্তির...। "পুরনো সেই দিনের কথা ভুলবি কি রে হায়। ও সেই চোখের দেখা, প্রাণের কথা, সে কি ভোলা যায়..."।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।