আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সবকিছু ভেঙ্গে পড়ে

মন'রে কৃষি কাজ জানো না, এমন মানব জমিন রইলো পতিত, আবাদ করলে ফলতো সোনা

আমরা প্রানী হিসেবে ভীষণ সীমাবদ্ধ। আখ বিক্রি করতে গিয়ে আমরা বলি চিনির মত মিষ্টি। তার মানে চিনিকে আমরা মিষ্টতার মানদন্ড বলে ধরে নিই। আমরা আমাদের পরিচিত সমস্ত মানবিক গুণাবলী থেকে শুরু করে, ইন্দ্রিয় গ্রাহ্য সব কিছুকেই একটা র্নিদিষ্ট পাল্লায় নিয়ে মাপি। লোকটা একেবারে পীর-আউলিয়ার মত থেকে শুরু করে , তেঁতুলের মত টকে গিয়ে ঠেকেছে।

আমাদের বড় হওয়া, চিন্তার বিকাশ থেকে শুরু করে সব ক্ষেত্রেই আমরা জীবনকে একটা রুল টানা খাতার মধ্যে রাখি বা এরকম রাখতে অভ্যস্ত হয়ে বড় হই। মর্াজিন এর বাইরে আমরা যাই না, তাকাই না; এমনকি মর্াজিন এর বাইরে কি আছে সেটা নিয়ে ভাবিও না। আমি এখানে সেরকম মর্াজিন এর বাইরের একটা বিষয় নিয়ে লিখছি বা বলতে পারেন আমি আমার মর্াজিন আর একটু বাড়িয়েছি । যারা মর্াজিন এর বাইরের বিষয় নিয়ে আগ্রহী নন তারা এখানেই পড়া থামিয়ে দিন। ........................................................................................ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রাচীন বিদ্যাপীঠ ।

সারা বাংলাদেশের সব পেশা এবং শ্রেনীর প্রতিনিধিত্বকরে এই বিশ্ববিদ্যালয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের জীবনাচরণ এবং জীবনের গতি প্রকৃতি থেকে , আমাদের সমাজের একটা ছবি অনায়াসে কল্পনা করা যায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা পড়ালেখা করেছেন এবং যারা করেননি সবাই জীবনে কমবেশী একবার টি.এস.সি তে গিয়েছেন। টি.এস.সি অনেকটা পাবলিক প্লেস এর মত। টি.এস.সি এবং শামসুন্নাহার হল, রোকেয়া হল হয়ে ফুলার রোড র্পযন্ত অসংখ্য প্রেমিক প্রেমিকা জুটি হাত ধরা ধরি করে বসে থাকে।

এই কপোত-কপোতীরা বিকেল থেকে শুরু করে মেয়েদের হল বন্ধ হবার আগ র্পযন্ত বসে থাকে। শুধু প্রেমিক -প্রেমিকা বললে ভুল হবে, প্রেমিক -প্রেমিকা ও তাদের পরিমন্ডলের বন্ধু-বান্ধবী রাও ওদের সাথে থাকে সব মিলিয়ে একটা এলাহী কারবার। আমি একসময় ফজলে রাবি্বতে থাকার সুবাদে টানা তিন মাসের মত প্রতিদিন সন্ধ্যায় রোকেয়া হলের সামনে আড্ডা দিয়েছি। যাই হোক এই যে মানব-মানবীর বসে থাকা এটা সবসময় প্লেটনিক ভাবলে ভুল হবে। আমার এক বন্ধু টানা তিন বছর প্রেম করে ওর পেট খারাপ হয়ে গিয়েছিল।

ডাক্তার ওর বাইরে খাওয়া পুরোপুরি নিষিদ্ধ করে দিল। ঢাকা শহরের কোথাও একটু বসে দুদন্ড কথা বলার জায়গা না পেয়ে, ফর্াস্ট ফুডের বেনচিকে আপন করেছিল ও। সারা শহরের সমস্ত ফর্াস্ট ফুডতো খাওয়া হয়েছেই , একই সাথে ফর্াস্ট ফুড ওর পেটের ডাইজেস্ট ক্ষমতা খেয়েছে। এই যে ছেলে-মেয়েদের পাশাপাশি হাত ধরে বসে থাকা, এই নিয়ে বিভিন্নসময়ে বিভিন্নমানুষের সাথে আমার কথা হয়েছে। অনেকে প্রশ্ন করেছে আমি বিষয়টা কিভাবে দেখি, অনেকে অভিযোগ করেছে যে সন্ধ্যার পর ফুলার রোড দিয়ে যাওয়া যায় না।

গত 3/4 বছরে ঢা.বি.তে এই বিষয় নিয়ে বেশ তোলপাড় হয়েছে , হঠাৎ করে র্কতৃপক্ষ গা ঝাড়া দিয়ে মাঠে নেমেছে। ঐ রাস্তা গুলোতে বড় বড় হ্যালোজেন বাতি লাগানো হল। প্রক্টর এর নেতৃত্বে প্রচুর ছেলে মেয়ে কে পুলিশ হেনস্তা করল, এমনকি মুচলেকা ও নিল যে তারা আর কখনো এভাবে বসে থাকবে না। কর্াজন হলের মর্াবেল আচ্ছাদিত বারান্দা জুড়ে জায়গায় জায়গায় কে বা কারা আলকাতরা লেপন করল, যাতে কেউ বসতে না পারে। এই ধরণের প্রক্রিয়া জা.বি তে ও চলছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়াদের বয়সটাই হচ্ছে স্বপ্ন দেখার বয়স। কেউ দেশ নিয়ে স্বপ্ন দেখে, কেউ সাহিত্য নিয়ে স্বপ্নদেখে, কেউ আবিষ্কারের স্বপ্ন দেখে, কেউ পাশের বেঞ্চিতে বসা ছেলে/মেয়ে টিকে নিয়ে স্বপ্ন দেখে, এমনকি সবচেয়ে স্বপ্নহীনটাও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কিভাবে বেরুবে, কত তাড়াতাড়ি বেরুবে সেই স্বপ্ন দেখে। কারন বয়সটাই স্বপ্ন দেখার। আমার দেড় বছরের অগ্রজ একবার বলছিল যে ছেলে-মেয়ে গুলি যেরকম ফালতু ভাবে বসে থাকে, ওদিক দিয়ে যাওয়া যায় না। আমি বলছিলাম তুমি ওদিক দিয়ে না গেলেই তো হয়।

ওর কথা হচ্ছে এভাবে বসবে কেন? আমার কথা হচ্ছে, নিজের পছন্দের মানুষের পাশে হাত না ধরে কি বসে থাকা যায়, চুলে বিলি না কেটে কি থাকা যায়, ঐ চেষ্টা করতে গেলে অসুস্থ হয়ে যেতে হবে। এখন আমাদের কে একটা কথা বুঝতে হবে, যারা হাত ধরাধরি করে বসছে তারা সবাই জানে সৃষ্টির্কতা দেখছে উপর থেকে এবং তিনি পছন্দ করছেন না, কাঁধে মুনকার-নাকীর আছে তারা খাতায় লিখে রাখছে কতবার হাত ধরাধরি হলো(অন্য র্ধমে কাঁধে কি থাকে আমি জানিনা, দুঃখিত) এর পরেও তারা হাত ধরাধরি করছে। উপর ওয়ালার ভয় জয় করে যে আর্কষন, সেটা আলকাতরা বা পুলিশ দিয়ে কি রুখা সম্ভব। আমরা বড় হই জন্ম রহস্যের নানাধরনের গল্প শুনে। আমি এক বাচ্চা কে দেখেছি , ও জানতো ওকে পলিথিনে করে বারান্দায় ফেরেস্তা রেখে গেছে।

নর-নারীর স্বাভাবিক জৈবিক সমর্্পককে আমরা একধরনের হীনমন্যতা এবং অপরাধবোধের বস্তায় ভরে সবার অগোচরে রেখে দিই। বয়োঃসন্ধি প্রাপ্ত ছেলেদের বায়োলজির শিক্ষক হয় তখন পাড়ার ইঁচড়ে পাকা বন্ধু। গোড়ায় গলদ শোধরানোর চেষ্টা না করে, আমাদের শিক্ষক গণ এবং প্রশাসন যা করছে সেটা কি আদৌ কোন পজিটিভ কাজ ? ======================================= 17'ই জুন , 2006 রাত 12: 31 কলাম্বিয়া।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।