আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অফিসিয়াল ট্যুরে কি করবেন

অনেকের কাছে অফিস ট্যুর মানেই টেনশনকে সঙ্গী করে ভ্রমণ করা। কেউ কেউ আছেন যারা এরকম ট্যুরে অভ্যস্ত নন। যাদের প্রায়ই এরকম ট্যুরে যেতে হয়, তাদের প্রথম থেকেই একটা সাপোর্ট সিস্টেম গড়ে তুলতে হবে। ট্যুরের আগেই সেরে ফেলতে হবে অফিসের ও পরিবারের জরুরি কাজকর্ম। নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে চাপমুক্ত ভ্রমণের জন্য।

এ বিষয়ে লিখেছেন- শামছুল হক রাসেল

 

কলেজ জীবনেই তানভীর প্রতিজ্ঞা করেছিল, ১০টা-৫টার চাকরি জীবনেও করবে না। সে জন্য প্রথাগত পড়াশোনার গণ্ডিতে বাঁধা না পড়ে স্কুলের পরে ট্যুরিজম অ্যান্ড ট্রাভেল ম্যানেজমেন্ট কোর্সে ভর্তি হয়েছিল। ৩ বছর পর তানভীর একজন কোয়ালিফাইড ট্যুরিস্ট গাইড, একটি নামকরা ট্রাভেল এজেন্সির উচ্চ বেতনভুক্ত কর্মকর্তা। কখনো বিদেশি ট্যুরিস্টদের নিয়ে কঙ্বাজার ও রাঙ্গামাটি দর্শনে বেরিয়ে পড়ছে, কখনো বা একদল দেশি ট্যুরিস্টদের নিয়ে বগুড়ার মহাস্থান গড়ে। বুদ্ধিমান, মিষ্টভাষী তানভীরকে এই প্রচণ্ড পরিশ্রমের কাজ করতে দেখে বিস্মিত হন অনেকেই।

অচেনা জায়গায় ট্যুরে গেলে চিন্তায় থাকেন তার সরকারি চাকরিজীবী মা-বাবা। তানভীর কিন্তু ভীষণ খুশি। তার ছেলেবেলা থেকে লালন-পালন করা ভ্রমণের স্বপ্ন যেন প্রতি মুহূর্তে সফল হচ্ছে। তাছাড়া পাকা চাকরি, ভালো বেতন আর পাখির মতো ঘুরে বেড়ানো জীবন। আর কি চাই একটা ৩০ বছরের ছেলে, যার মধ্যে টগবগ করছে অফুরন্ত প্রাণশক্তি।

কিন্তু মাঝে মাঝে বড় ক্লান্ত লাগে সাঈদের। এর মধ্যেই কোম্পানি জানিয়ে দিয়েছে, একটা বড় দল নিয়ে তাকে বেরিয়ে পড়তে হবে সেন্টমার্টিনের উদ্দেশে। খবরটা জানাতেই বাবা-মায়ের ম্লান মুখ দেখে মন কেমন করে তানভীর। কিন্তু 'পার্ট অব দ্য জব' বলে মেনে নেওয়া ছাড়া তো কিছু করার নেই। অন্যদিকে তানভীরের মতো সম্পূর্ণ ট্যুর বেসড জব না হলেও চাকরি সূত্রে প্রায়ই তাসনিয়াকে যেতে হয় বিভিন্ন অফিসিয়াল ট্যুরে।

তাসনিয়া একটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানির কর্পোরেট ম্যানেজার হিসেবে নিয়োজিত। আজ ঢাকা, কাল সিলেট, আবার পরশু সকালে চট্টগ্রাম। এক কথায় বলতে

গেলে কর্পোরেট হাউসগুলোর সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নে দেশের একস্থান থেকে অন্যস্থানে ছুটে বেড়াতে হয় তাসনিয়াকে। সন্তান আর পরিবারের অন্য সদস্যদের ম্যানেজ করে তাকে পালন করতে হয় এসব অফিসিয়াল ট্যুর। মাঝে মাঝে খুব ক্লান্ত হয় সে।

তারপর নতুন উদ্যমে আবার শুরু করে জীবনযুদ্ধ। তানভীর ও তাসনিয়ার মতো অনেক চাকরিজীবীকেই আজকাল ছোটখাটো ট্যুরে যেতে হয়। একা একা বাইরে যাচ্ছে, কি করে যাবে, কোথায় থাকবে, থাকার জায়গাটা পুরোপুরি নিরাপদ কিনা- এসব প্রশ্ন উঠতে বাধ্য। সে জন্য অফিস ট্যুর সুন্দর করে সামলানোর জন্য রইল কয়েকটি পরামর্শ।

কি করবেন : * অফিসের কাজে যাদেরকে প্রায়ই ট্যুরে যেতে হয়, তাদের প্রথম থেকেই নিজের চারদিকে একটা সাপোর্ট সিস্টেম গড়ে তুলতে হবে।

শ্বশুর-শাশুড়ি, মা-বাবা, স্বামী-স্ত্রী- সবাইকে নিজের সমস্যাগুলো বলে সোজাসুজি সাহায্য চান। যে কয়েক দিন আপনি থাকবেন না, বাড়ির যে যে কাজ আপনি করেন বা বাচ্চার দেখাশোনা কিভাবে হবে সেগুলো নিয়েও আলোচনা করতে ভুলবেন না। * ট্যুরে থাকাকালীন প্রতিদিন ফোন করে বাড়ির খোঁজ-খবর নিন। বাচ্চার সঙ্গে একটু বেশি সময় নিয়ে গল্প করুন যাতে ও কোনোভাবেই অবহেলিত মনে না করে। বাড়ি ফেরার সময় যত সামান্যই হোক না কেন, বাড়ির লোকজনের জন্য উপহার আনতে ভুলবেন না।

* ট্যুরে যাওয়া-আসা এমনিতেই ঝামেলার ব্যাপার। তার থেকেও বড় ঝামেলা হচ্ছে প্যাকিং। ট্রাভেল ব্যাগে একসেট আলাদা টয়লেট্রিজ এবং কসমেটিঙ্রে কিট, মোবাইল চার্জার, স্যানিটারি ন্যাপকিন ইত্যাদি জরুরি জিনিস সারাক্ষণ রেডি রাখুন। এছাড়াও ইমার্জেন্সির জন্য কিছু ক্যাশ হাতে রেখে বাকি পেমেন্ট ক্রেডিট কার্ডেই সেরে নিন। ট্যুরের দরুন খরচার বিল গুছিয়ে রাখার জন্য একটা ছোট প্যাকেটও বহন করুন।

* অফিস ট্যুরে কাজের চাপ থাকবেই, তাই বলে নিজের খাওয়া-দাওয়া, ঘুম এগুলোর সঙ্গে কম্প্রোমাইজ করাটা ঠিক নয়। কারণ স্বাস্থ্য নিয়ে অবহেলা করলে পরবর্তীতে শরীরও আপনার বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিতে মরিয়া হয়ে উঠবে। স্বাস্থ্য খারাপ করলে আপনার পাশাপাশি পরিবারও অকারণে ভুক্তভোগী হবে। কয়েকটি ট্যুরের পর দু'তিন দিনের ছুটি নিয়ে বাড়িতে থাকুন। সেই সময়টা সম্পূর্ণভাবে পরিবারকে দিন।

আপনার না থাকার ঘাটতিটা পুষিয়ে যাবে। চেষ্টা করুন ছুটির পুরোটা সময় পরিবারের সঙ্গে উপভোগ করতে। * ট্যুরে

থাকা অবস্থায় স্বামী/স্ত্রীর প্রতি সহানুভূতিশীল হতে হবে। চেষ্টা করুন সন্তানদের লেখাপড়ার অগ্রগতি এবং শারীরিক অবস্থার খোঁজ-খবর নিতে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অভিভাবকরা দূরে থাকলে সন্তানরা রাত করে ঘরে ফিরবে।

এ বিষয়টিকে সতর্কভাবে মোকাবিলা করতে হবে। বিশেষ করে বাড়িতে যদি উঠতি বয়সের ছেলে-মেয়ে থাকে তবে অবশ্যই বয়স্ক কোনো ব্যক্তির কাছে তাদের দায়িত্ব অর্পণ করে যাবেন। প্রয়োজনে তাদের সঙ্গে দিনে অন্তত একবার টেলিফোনে কথা বলুন।

 

 

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com/

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.